ঢাকা ১২:৩১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ জানুয়ারী ২০২৫, ৩০ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

গ্রামের কৃষকদের দিয়ে ইরি-বোরো ক্ষেতে ডালপালা পুঁতার ‘পার্চিং পদ্ধতি’

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১১:৩২:৫৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৪ মার্চ ২০১৮
  • ৪৩৩ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ পোঁকামাকড় ও রোগবালাই থেকে ফসলকে রক্ষা করা, কীটনাশকের ব্যবহার কমিয়ে আনা ও পরিবেশ সম্মতভাবে ফসল উৎপাদন- এই তিনটি স্লোগান নিয়ে ইরি-বোরো ক্ষেতে ‘ডাল পোতা উৎসব’ (পার্চিং উৎসব) শুরু হয়েছে। সখীপুর উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের কৃষকদের দিয়ে ইরি-বোরো ক্ষেতে ডালপালা পুঁতার কার্যক্রমের উদ্যোগটি নিয়েছেন স্থানীয় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। আর এ কারণে উপজেলার কৃষকের মাঝে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে ইরি-বারো ক্ষেতের পোঁকা দমন করার ‘ পার্চিং পদ্ধতি’।

ক্ষতিকারক পোঁকার আক্রমণ থেকে ইরি-বোরো ক্ষেত রক্ষায় এ পদ্ধতি একটি কৃষি বান্ধব প্রযুক্তি। সাধারণত ‘লাইভ পার্চিং’ ও ‘ডেথ পার্চিং ’ নামের দুই ধরনের পাচিং পদ্ধতি ব্যবহার হয়ে থাকে। কৃষকরা এ প্রযুক্তি ব্যবহার করে ফসলের অধিক ফলন পেয়ে থাকে। এছাড়া জমিতে কীটনাশক খরচ কম ও পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা পায়। উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, গ্রামগঞ্জের কৃষকদের সবুজ ধান ক্ষেত বাতাসে দুল খাচ্ছে। ক্ষেতের মধ্যে একর প্রতি ১০ থেকে ১২ টি বাঁশের কঞ্চি কিংবা গাছের ডাল পোঁতা রয়েছে। ওই পার্চিংয়ে (খুঁটিতে) ফিঙ্গে, শালিক, দোয়েলসহ বিভিন্ন প্রজাতির পাখি বসছে।

সুযোগ বুঝে ধানক্ষেতে থাকা ক্ষতিকর পোঁকা ওইসব পাখিরা খেয়ে ফেলছে। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে উপজেলার প্রায় ১৭ হাজার হেক্টর জমিতে ইরি-বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। রোপনকৃত ওইসব ক্ষেতে ক্ষতিকর ঘাঁসফড়িং, পাতা মোড়ানো পোঁকা, চুঙ্গি ও মাজরা পোঁকার আক্রমণ দেখা দেয়। তাই এ সকল পোঁকার আক্রমণ থেকে ফসল রক্ষায় বর্তমানে উপজেলায় প্রায় ৬০ ভাগ কৃষক পার্চিং ও আলোক ফাঁদ পদ্ধতি ব্যবহার করে সুফল পাচ্ছেন। এ বিষয়ে একাধিক কৃষক জানান, পার্চিং পদ্ধতি ব্যবহারের ফলে অনেকটা কীটনাশকের ব্যবহার কমে গেছে। তাই এ পদ্ধতিটি আমাদের মাঝে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছে। সখীপুর কৃষি কার্যালয়ের উপসহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা আনিছুর রহমান জানান, ধান ক্ষেতে গাছের ডাল পুঁতে রাখলে পাখিরা ওই ডালে বসে পোঁকামাকড় খেয়ে ফেলে।

ফলে ওই জমিতে কীটনাশক ব্যবহারের প্রয়োজন হয়না। পরিবেশ সম্মতভাবে ফসল উৎপাদন করা যায়। তিনি বলেন, কৃষকরা অনেক আগে থেকেই ফসলের ক্ষেতে গাছের ডাল পুঁতে রাখত। বর্তমান কৃষি বিজ্ঞানিরা গবেষণা করে পোঁকামাকড় থেকে ফসল রক্ষার জন্য ক্ষেতে ডাল পুঁতা পদ্ধতি নতুনভাবে আবিস্কার করেছেন। কৃষি বিভাগ এ মৌসুমে সখীপুরের কৃষকদের মাঝে এ পদ্ধতি ছড়িয়ে দেওয়ার লক্ষ্যে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ফায়জুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন, ‘উপজেলার প্রায় সকল কৃষকদের পার্চিং পদ্ধতির আওতায় আনার জন্য কাজ করছি। পার্চিং পদ্ধতি কৃষকের কৃষি ও পরিবেশ বান্ধব একটি পদ্ধতি।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

গ্রামের কৃষকদের দিয়ে ইরি-বোরো ক্ষেতে ডালপালা পুঁতার ‘পার্চিং পদ্ধতি’

আপডেট টাইম : ১১:৩২:৫৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৪ মার্চ ২০১৮

হাওর বার্তা ডেস্কঃ পোঁকামাকড় ও রোগবালাই থেকে ফসলকে রক্ষা করা, কীটনাশকের ব্যবহার কমিয়ে আনা ও পরিবেশ সম্মতভাবে ফসল উৎপাদন- এই তিনটি স্লোগান নিয়ে ইরি-বোরো ক্ষেতে ‘ডাল পোতা উৎসব’ (পার্চিং উৎসব) শুরু হয়েছে। সখীপুর উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের কৃষকদের দিয়ে ইরি-বোরো ক্ষেতে ডালপালা পুঁতার কার্যক্রমের উদ্যোগটি নিয়েছেন স্থানীয় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। আর এ কারণে উপজেলার কৃষকের মাঝে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে ইরি-বারো ক্ষেতের পোঁকা দমন করার ‘ পার্চিং পদ্ধতি’।

ক্ষতিকারক পোঁকার আক্রমণ থেকে ইরি-বোরো ক্ষেত রক্ষায় এ পদ্ধতি একটি কৃষি বান্ধব প্রযুক্তি। সাধারণত ‘লাইভ পার্চিং’ ও ‘ডেথ পার্চিং ’ নামের দুই ধরনের পাচিং পদ্ধতি ব্যবহার হয়ে থাকে। কৃষকরা এ প্রযুক্তি ব্যবহার করে ফসলের অধিক ফলন পেয়ে থাকে। এছাড়া জমিতে কীটনাশক খরচ কম ও পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা পায়। উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, গ্রামগঞ্জের কৃষকদের সবুজ ধান ক্ষেত বাতাসে দুল খাচ্ছে। ক্ষেতের মধ্যে একর প্রতি ১০ থেকে ১২ টি বাঁশের কঞ্চি কিংবা গাছের ডাল পোঁতা রয়েছে। ওই পার্চিংয়ে (খুঁটিতে) ফিঙ্গে, শালিক, দোয়েলসহ বিভিন্ন প্রজাতির পাখি বসছে।

সুযোগ বুঝে ধানক্ষেতে থাকা ক্ষতিকর পোঁকা ওইসব পাখিরা খেয়ে ফেলছে। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে উপজেলার প্রায় ১৭ হাজার হেক্টর জমিতে ইরি-বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। রোপনকৃত ওইসব ক্ষেতে ক্ষতিকর ঘাঁসফড়িং, পাতা মোড়ানো পোঁকা, চুঙ্গি ও মাজরা পোঁকার আক্রমণ দেখা দেয়। তাই এ সকল পোঁকার আক্রমণ থেকে ফসল রক্ষায় বর্তমানে উপজেলায় প্রায় ৬০ ভাগ কৃষক পার্চিং ও আলোক ফাঁদ পদ্ধতি ব্যবহার করে সুফল পাচ্ছেন। এ বিষয়ে একাধিক কৃষক জানান, পার্চিং পদ্ধতি ব্যবহারের ফলে অনেকটা কীটনাশকের ব্যবহার কমে গেছে। তাই এ পদ্ধতিটি আমাদের মাঝে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছে। সখীপুর কৃষি কার্যালয়ের উপসহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা আনিছুর রহমান জানান, ধান ক্ষেতে গাছের ডাল পুঁতে রাখলে পাখিরা ওই ডালে বসে পোঁকামাকড় খেয়ে ফেলে।

ফলে ওই জমিতে কীটনাশক ব্যবহারের প্রয়োজন হয়না। পরিবেশ সম্মতভাবে ফসল উৎপাদন করা যায়। তিনি বলেন, কৃষকরা অনেক আগে থেকেই ফসলের ক্ষেতে গাছের ডাল পুঁতে রাখত। বর্তমান কৃষি বিজ্ঞানিরা গবেষণা করে পোঁকামাকড় থেকে ফসল রক্ষার জন্য ক্ষেতে ডাল পুঁতা পদ্ধতি নতুনভাবে আবিস্কার করেছেন। কৃষি বিভাগ এ মৌসুমে সখীপুরের কৃষকদের মাঝে এ পদ্ধতি ছড়িয়ে দেওয়ার লক্ষ্যে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ফায়জুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন, ‘উপজেলার প্রায় সকল কৃষকদের পার্চিং পদ্ধতির আওতায় আনার জন্য কাজ করছি। পার্চিং পদ্ধতি কৃষকের কৃষি ও পরিবেশ বান্ধব একটি পদ্ধতি।