ঢাকা ০৯:০০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ২১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শুক্রবারের ফজিলত ও আমল

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১০:১৩:৫৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৫
  • ৩৫৩ বার

শুক্রবার মুসলিম উম্মাহর সাপ্তাহিক উৎসবের দিন। এই দিনকে ‘ইয়াওমুল জুমা’ বলা হয়। আল্লাহ তায়ালা নভোমণ্ডল, ভূমণ্ডল ও গোটা জগৎকে ছয় দিনে সৃষ্টি করেছেন। এই ছয় দিনের শেষ দিন ছিল জুমার দিন। এই দিনেই হজরত আদম (আ.) সৃজিত হন। এ দিনেই তাকে জান্নাতে প্রবেশ করানো হয় এবং এ দিনেই জান্নাত থেকে পৃথিবীতে নামানো হয়। কেয়ামত এ দিনেই সংঘটিত হবে। আল্লাহ তায়ালা প্রতি সপ্তাহে মানবজাতির সমাবেশ ও ঈদের জন্য এ দিন নির্ধারণ করেছিলেন। কিন্তু পূর্ববর্তী উম্মতরা তা পালন করতে ব্যর্থ হয়।

ইসলামের জুমার গুরুত্ব অপরিসীম। স্বয়ং আল্লাহপাক কোরান পাকে ইরশাদ করেন ‘হে মুমিনগণ জুমার দিনে যখন নামাজের আজান দেয়া হয়, তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণের উদ্দেশেও দ্রুত ধাবিত হও এবং ক্রয়-বিক্রয় ত্যাগ কর’। সূরা জুমা, আয়াত নং-৯। তাই জুমার আজানের আগেই সব কর্মব্যস্ততা ত্যাগ করে জুমার নামাজের জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করে মসজিদে গমন করা সব মুসলমানের ইমানি দায়িত্ব। এ দিনে এমন একটি সময় রয়েছে, তখন মানুষ যে দোয়াই করে তা-ই কবুল হয়। এই দিনের বিশেষ কিছু আমল রয়েছে, যা হাদিস দ্বারা প্রমাণিত। এর মধ্যে কয়েকটি আমল নিচে উল্লেখ করা হলো:

হজরত আউস ইবনে আউস রা. বলেন, ‘রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন যে ব্যক্তি জুমার দিনে ভালোভাবে গোসল করবে, সকাল সকাল প্রস্তুত হয়ে হেঁটে মসজিদে গমন করে ইমাম সাহেবের কাছে বসবে এবং মনোযোগী হয়ে তার খুতবা শ্রবণ করবে ও অনর্থক কর্ম থেকে বিরত থাকবে, তার প্রত্যেক কদমে এক বছরের নফল রোজা এবং এক বছরের নফল নামাজের সওয়াব আল্লাহপাক তাকে দান করবেন।’ (নাসাঈ শরিফ ১৫৫)

হজরত আবু হুরায়রা রাযি বলেন, রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন ‘যে উত্তমরূপে অজু করবে, অতঃপর জুমার মসজিদে গমন করবে এবং মনোযোগ সহকারে খুতবা শ্রবণ করবে তার এ জুমা থেকে পূর্ববর্তী জুমাসহ আরো তিন দিনের গুনাহগুলো কমা করা হবে। আর যে ব্যক্তি খুতবা শ্রবণে মনোযোগী না হয়ে খুতবা চলাকালীন কঙ্কর-বালি নাড়ল, সে অনর্থক কাজ করল।’ (মুসলিম শরিফ ১/২৮৩)

হজরত আবু সাঈদ খুদরি রাযি থেকে বর্ণিত আছে যে, মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি জুমার দিনে সূরা কাহ্ফ তেলাওয়াত করবে তার (ইমানের) নূর-এ জুমা থেকে পরবর্তী জুমা পর্যন্ত চমকাতে থাকবে।’ (মেশকাত শরিফ-১৮৯) হজরত জাবের ইবনে আব্দুল্লাহ রাযি থেকে বর্ণিত রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন ‘জুমার দিনে এমন একটি মুহূর্ত রয়েছে, কোনো মুসলমান ওই মুহূর্ত আল্লাহর কাছে যা কিছু প্রার্থনা করবে অবশ্যই আল্লাহপাক তাকে তা দান করবেন।

সুতরাং তোমরা ওই মূল্যবান মুহূর্তকে আসরের পর থেকে দিনের শেষ পর্যন্ত তালাশ কর।’ (আবু দাউদ ১/১৫০)। উপর্যুক্ত হাদিসগুলোর দ্বারা প্রমাণিত হয়, জুমার দিনে সব মুসলমানের জন্য কর্তব্য হচ্ছে সব ব্যস্ততা ত্যাগ করে আজানের পূর্বেই পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন হয়ে মসজিদে গমন করা, খুতবা মনোযোগ সহকালে শ্রবণ করা, খুতবা চলাকালীন কথার্বাতা বলা থেকে বিরত থাক।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

শুক্রবারের ফজিলত ও আমল

আপডেট টাইম : ১০:১৩:৫৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৫

শুক্রবার মুসলিম উম্মাহর সাপ্তাহিক উৎসবের দিন। এই দিনকে ‘ইয়াওমুল জুমা’ বলা হয়। আল্লাহ তায়ালা নভোমণ্ডল, ভূমণ্ডল ও গোটা জগৎকে ছয় দিনে সৃষ্টি করেছেন। এই ছয় দিনের শেষ দিন ছিল জুমার দিন। এই দিনেই হজরত আদম (আ.) সৃজিত হন। এ দিনেই তাকে জান্নাতে প্রবেশ করানো হয় এবং এ দিনেই জান্নাত থেকে পৃথিবীতে নামানো হয়। কেয়ামত এ দিনেই সংঘটিত হবে। আল্লাহ তায়ালা প্রতি সপ্তাহে মানবজাতির সমাবেশ ও ঈদের জন্য এ দিন নির্ধারণ করেছিলেন। কিন্তু পূর্ববর্তী উম্মতরা তা পালন করতে ব্যর্থ হয়।

ইসলামের জুমার গুরুত্ব অপরিসীম। স্বয়ং আল্লাহপাক কোরান পাকে ইরশাদ করেন ‘হে মুমিনগণ জুমার দিনে যখন নামাজের আজান দেয়া হয়, তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণের উদ্দেশেও দ্রুত ধাবিত হও এবং ক্রয়-বিক্রয় ত্যাগ কর’। সূরা জুমা, আয়াত নং-৯। তাই জুমার আজানের আগেই সব কর্মব্যস্ততা ত্যাগ করে জুমার নামাজের জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করে মসজিদে গমন করা সব মুসলমানের ইমানি দায়িত্ব। এ দিনে এমন একটি সময় রয়েছে, তখন মানুষ যে দোয়াই করে তা-ই কবুল হয়। এই দিনের বিশেষ কিছু আমল রয়েছে, যা হাদিস দ্বারা প্রমাণিত। এর মধ্যে কয়েকটি আমল নিচে উল্লেখ করা হলো:

হজরত আউস ইবনে আউস রা. বলেন, ‘রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন যে ব্যক্তি জুমার দিনে ভালোভাবে গোসল করবে, সকাল সকাল প্রস্তুত হয়ে হেঁটে মসজিদে গমন করে ইমাম সাহেবের কাছে বসবে এবং মনোযোগী হয়ে তার খুতবা শ্রবণ করবে ও অনর্থক কর্ম থেকে বিরত থাকবে, তার প্রত্যেক কদমে এক বছরের নফল রোজা এবং এক বছরের নফল নামাজের সওয়াব আল্লাহপাক তাকে দান করবেন।’ (নাসাঈ শরিফ ১৫৫)

হজরত আবু হুরায়রা রাযি বলেন, রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন ‘যে উত্তমরূপে অজু করবে, অতঃপর জুমার মসজিদে গমন করবে এবং মনোযোগ সহকারে খুতবা শ্রবণ করবে তার এ জুমা থেকে পূর্ববর্তী জুমাসহ আরো তিন দিনের গুনাহগুলো কমা করা হবে। আর যে ব্যক্তি খুতবা শ্রবণে মনোযোগী না হয়ে খুতবা চলাকালীন কঙ্কর-বালি নাড়ল, সে অনর্থক কাজ করল।’ (মুসলিম শরিফ ১/২৮৩)

হজরত আবু সাঈদ খুদরি রাযি থেকে বর্ণিত আছে যে, মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি জুমার দিনে সূরা কাহ্ফ তেলাওয়াত করবে তার (ইমানের) নূর-এ জুমা থেকে পরবর্তী জুমা পর্যন্ত চমকাতে থাকবে।’ (মেশকাত শরিফ-১৮৯) হজরত জাবের ইবনে আব্দুল্লাহ রাযি থেকে বর্ণিত রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন ‘জুমার দিনে এমন একটি মুহূর্ত রয়েছে, কোনো মুসলমান ওই মুহূর্ত আল্লাহর কাছে যা কিছু প্রার্থনা করবে অবশ্যই আল্লাহপাক তাকে তা দান করবেন।

সুতরাং তোমরা ওই মূল্যবান মুহূর্তকে আসরের পর থেকে দিনের শেষ পর্যন্ত তালাশ কর।’ (আবু দাউদ ১/১৫০)। উপর্যুক্ত হাদিসগুলোর দ্বারা প্রমাণিত হয়, জুমার দিনে সব মুসলমানের জন্য কর্তব্য হচ্ছে সব ব্যস্ততা ত্যাগ করে আজানের পূর্বেই পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন হয়ে মসজিদে গমন করা, খুতবা মনোযোগ সহকালে শ্রবণ করা, খুতবা চলাকালীন কথার্বাতা বলা থেকে বিরত থাক।