ঢাকা ১১:২৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের সাজিয়ে উঠা তিন চক্রের কবলে লাল শাপলার ৪ বিল

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১০:৫৭:২৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ নভেম্বর ২০১৭
  • ১২৪৫ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ সিলেটের জৈন্তাপুরে  প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের সাজিয়ে উঠা লাল শাপলার রাজ্যের চারটি বিল চোরাকারবারি, ভূমিখেকো, মৎস্যখেকোদের কবলে পড়ে হারিয়েছে যৌবন।

স্থানীয়দের দাবি ভূমিখেকো, মৎস্যখেকো এবং চোরাকারবারিদের ঠেকাতে পারলে বিলগুলো প্রকৃতিক সৌন্দর্য ফিরে পাবে। জৈন্তাপুর উপজেলার ডিবির হাওর এলাকার লাল শাপলার রাজ্যের চোরাকারবারি, ভূমিখেকো এবং মৎস্যখেকোদের কবলে পড়েছে ইয়াম বিল, হরফকাটা বিল, কেন্দ্রী বিল ও ডিবি বিল। ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ ৪টি বিল মিলে প্রায় ৯০০ একর জায়গাজুড়ে প্রতি বছর প্রকৃতিকভাবে লাল শাপলায় ভরে উঠে। এতে এলাকায় লাল শাপলার রাজ্যে হিসেবে পরিচিতি পায়।

এ সম্পর্কে কয়েকটি অনলাইন গণমাধ্যম, বেসরকারি টিভি চ্যানেল, জাতীয় ও স্থানীয় পত্রিকাগুলোতে প্রতিবেদন প্রকাশের পর দেশের দূর-দুরান্ত হতে গত বছরে হাজার হাজার পর্যটকের ঢল নামে বিলগুলোতে। তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী অফিসার খালেদুর রহমানের সময়ে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল করার নামে এলাকাটি চিহ্নিত করা হলে ভূমিখেকোদের তৎপরতা বৃদ্ধি পায়।

এর প্রতিবাদে সেই সময়ে স্থানীয় এলাকাবাসীসহ পরিবেশবাদীরা গ্রাম ও বিল রক্ষার জন্য বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন-বাপা নেতৃবন্দসহ পরিবেশবাদীরা আন্দোলনে নামেন। তারা সিলেট কেন্দ্রীয় শহিদমিনারে মানববন্ধনসহ কর্মসূচি পালন করে এ উদ্যোগ থেকে সরকারকে সরে আসার আহ্বান জানান। আন্দোলনের মুখে তৎকালীন বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের প্রস্তাবনাটি বাতিল করে জেলা প্রশাসন।

Image result for শাপলা ফুলের ছবি

কিন্তু প্রকল্প বাতিল করা হলেও প্রভাবশালী এক নেতার পরোক্ষ ও প্রত্যক্ষ ইশারায় কতিপয় ভূমিখেকো চক্র ডিবির হাওরের লাল শাপলার ৪টি বিল দখল বাণিজ্যের মেতে উঠে। পর্যটকবিমুখ করতে এবং নিজেদের ফায়দা হাসিলের লক্ষ্যে বিলগুলোর সৌন্দর্য ধ্বংসের জন্য তাদের তৎপরতা অব্যাহত রেখেছে।

চলতি বছরের শুরু থেকেই বিলগুলোতে যাতে লাল শাপলা তার সৌন্দর্য বিস্তার করতে না পারে, সেজন্য কৌশল অবলম্বন করে তিনটি চক্র শাপলা বিলে মহিষ নামিয়ে লাল শাপলার গাছ ধ্বংস করছে। পর্যকটদের আনাগোনার কারণে চোরাকারবারিরা তাদের কর্মতৎরতা বাধাগ্রস্ত হওয়ায় শাপলা ধ্বংসে তৎপর রয়েছে। পরিবেশবাদী সংগঠন বিলগুলোর ইজারা বাতিলের দাবি করায় প্রভাবশালী মৎস্য আহরণকারীরা বিল শুকিয়ে লাল শাপলা ধ্বংস করছে।

অপরদিকে মৎস্যজীবীদের নামে বিলগুলো লিজ গ্রহণ করে চোরাকারবারিরা তাদের বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন এলাকাবাসী জানান, চোরাকারবারিরা প্রতিদিন সন্ধ্যা হতে না হতে স্থানীয় ডিবির হাওর রাস্তা ব্যবহার করে ভারত হতে মালামাল পাচার করছে।

তারা আরও জানান, বিলগুলো সীমান্তবর্তী হওয়ার ফলে চেরাকারবারিরা কৌশলে বিল লিজ গ্রহণ করে নেয়। বিল পাহারার নামে প্রতিদিন সীমান্তের অপার থেকে মাদকসহ বিভিন্ন পণ্য বাংলাদেশে প্রবেশ করে। তাদের কর্মতৎপরতার কারণে সৌন্দর্যপিপাসুরা লাল শাপলার বিল হতে ফিরে যেতে যাচ্ছেন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের সাজিয়ে উঠা তিন চক্রের কবলে লাল শাপলার ৪ বিল

আপডেট টাইম : ১০:৫৭:২৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ নভেম্বর ২০১৭

হাওর বার্তা ডেস্কঃ সিলেটের জৈন্তাপুরে  প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের সাজিয়ে উঠা লাল শাপলার রাজ্যের চারটি বিল চোরাকারবারি, ভূমিখেকো, মৎস্যখেকোদের কবলে পড়ে হারিয়েছে যৌবন।

স্থানীয়দের দাবি ভূমিখেকো, মৎস্যখেকো এবং চোরাকারবারিদের ঠেকাতে পারলে বিলগুলো প্রকৃতিক সৌন্দর্য ফিরে পাবে। জৈন্তাপুর উপজেলার ডিবির হাওর এলাকার লাল শাপলার রাজ্যের চোরাকারবারি, ভূমিখেকো এবং মৎস্যখেকোদের কবলে পড়েছে ইয়াম বিল, হরফকাটা বিল, কেন্দ্রী বিল ও ডিবি বিল। ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ ৪টি বিল মিলে প্রায় ৯০০ একর জায়গাজুড়ে প্রতি বছর প্রকৃতিকভাবে লাল শাপলায় ভরে উঠে। এতে এলাকায় লাল শাপলার রাজ্যে হিসেবে পরিচিতি পায়।

এ সম্পর্কে কয়েকটি অনলাইন গণমাধ্যম, বেসরকারি টিভি চ্যানেল, জাতীয় ও স্থানীয় পত্রিকাগুলোতে প্রতিবেদন প্রকাশের পর দেশের দূর-দুরান্ত হতে গত বছরে হাজার হাজার পর্যটকের ঢল নামে বিলগুলোতে। তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী অফিসার খালেদুর রহমানের সময়ে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল করার নামে এলাকাটি চিহ্নিত করা হলে ভূমিখেকোদের তৎপরতা বৃদ্ধি পায়।

এর প্রতিবাদে সেই সময়ে স্থানীয় এলাকাবাসীসহ পরিবেশবাদীরা গ্রাম ও বিল রক্ষার জন্য বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন-বাপা নেতৃবন্দসহ পরিবেশবাদীরা আন্দোলনে নামেন। তারা সিলেট কেন্দ্রীয় শহিদমিনারে মানববন্ধনসহ কর্মসূচি পালন করে এ উদ্যোগ থেকে সরকারকে সরে আসার আহ্বান জানান। আন্দোলনের মুখে তৎকালীন বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের প্রস্তাবনাটি বাতিল করে জেলা প্রশাসন।

Image result for শাপলা ফুলের ছবি

কিন্তু প্রকল্প বাতিল করা হলেও প্রভাবশালী এক নেতার পরোক্ষ ও প্রত্যক্ষ ইশারায় কতিপয় ভূমিখেকো চক্র ডিবির হাওরের লাল শাপলার ৪টি বিল দখল বাণিজ্যের মেতে উঠে। পর্যটকবিমুখ করতে এবং নিজেদের ফায়দা হাসিলের লক্ষ্যে বিলগুলোর সৌন্দর্য ধ্বংসের জন্য তাদের তৎপরতা অব্যাহত রেখেছে।

চলতি বছরের শুরু থেকেই বিলগুলোতে যাতে লাল শাপলা তার সৌন্দর্য বিস্তার করতে না পারে, সেজন্য কৌশল অবলম্বন করে তিনটি চক্র শাপলা বিলে মহিষ নামিয়ে লাল শাপলার গাছ ধ্বংস করছে। পর্যকটদের আনাগোনার কারণে চোরাকারবারিরা তাদের কর্মতৎরতা বাধাগ্রস্ত হওয়ায় শাপলা ধ্বংসে তৎপর রয়েছে। পরিবেশবাদী সংগঠন বিলগুলোর ইজারা বাতিলের দাবি করায় প্রভাবশালী মৎস্য আহরণকারীরা বিল শুকিয়ে লাল শাপলা ধ্বংস করছে।

অপরদিকে মৎস্যজীবীদের নামে বিলগুলো লিজ গ্রহণ করে চোরাকারবারিরা তাদের বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন এলাকাবাসী জানান, চোরাকারবারিরা প্রতিদিন সন্ধ্যা হতে না হতে স্থানীয় ডিবির হাওর রাস্তা ব্যবহার করে ভারত হতে মালামাল পাচার করছে।

তারা আরও জানান, বিলগুলো সীমান্তবর্তী হওয়ার ফলে চেরাকারবারিরা কৌশলে বিল লিজ গ্রহণ করে নেয়। বিল পাহারার নামে প্রতিদিন সীমান্তের অপার থেকে মাদকসহ বিভিন্ন পণ্য বাংলাদেশে প্রবেশ করে। তাদের কর্মতৎপরতার কারণে সৌন্দর্যপিপাসুরা লাল শাপলার বিল হতে ফিরে যেতে যাচ্ছেন।