মিয়ানমারের বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্রগোষ্ঠী আরাকান আর্মির সদস্যরা বাংলাদেশ থেকে ঘোড়া কিনে নিয়ে যাওয়ার সময় তাদের সঙ্গে সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিজিবি) গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। বিষয়টি নিয়ে দেশ জুড়ে বেশ তোলপাড় সৃষ্টি হয়। আরাকান আর্মির সদস্যরা কীভাবে এ দেশ থেকে ঘোড়া সংগ্রহ করেছে রাইজিংবিডির অনুসন্ধানে তা উঠে এসেছে।
বুধবার সকাল সাড়ে নয়টার দিকে জেলার থানচির বড়মদক এলাকা দিয়ে আরাকান আর্মির সদস্যরা নিজেদের ব্যবহারের জন্য ১৩টি ঘোড়া নিয়ে যাচ্ছিল। এসময় বিজিবি সদস্যরা তাদের চ্যালেঞ্জ করলে আরাকান আর্মির সদস্যরা বিজিবি সদস্যদের ওপর গুলি চালায়। এক পর্যায়ে বিজিবি সদস্যরা পাল্টা গুলি চালালে দুইটি ঘোড়া মারা যায়। অন্য ঘোড়াগুলো আটক করে বিজিবি। গোলাগুলিতে বিজিবির নায়েক (করপোরাল) জাকির হোসেন গুলিবিদ্ধ হন।
রাইজিংবিডির অনুসন্ধানে জানা গেছে, ঘোড়াগুলো গত ঈদের পর আরাকান আর্মির জন্য সংগ্রহ করা হয়। বান্দরবানের ট্রাকচালক নুর আলমকে ঘোড়াগুলো দুইটি ট্রিপে চট্টগ্রাম থেকে সীমান্তে পৌঁছানোর দায়িত্ব দেওয়া হয়। কিন্তু নুর আলম বেঁকে বসায় থানচি বাজারের পরিচিত ব্যবসায়ী মিন্টুর মাধ্যমে বান্দরবানের আব্দুর রাজ্জাক নামের আরেক ট্রাকচালককে এ দায়িত্ব দেওয়া হয়। তিনি একটি বাছুরসহ ছয়টি ঘোড়া সীমান্তে পৌঁছে দেন। এর আগে বাকি ঘোড়াগুলো আরেকটি ট্রাকে নিয়ে যাওয়া হয়।
এই ব্যাপারে ট্রাকচালক আব্দুর রাজ্জাক বলেন, থানচির সিংগ্যাফা মৌজার হেডম্যান রনি মার্মার জন্য মিন্টু ঘোড়াগুলো এনেছিল।
স্থানীয় একাধিক গোয়েন্দা সদস্যদের অনুসন্ধানে জানা যায়, হেডম্যান রনি হচ্ছেন বড় মদকের বাসিন্দা। তিনি চড়া দামে ঘোড়াগুলো আরাকান আর্মির কাছে সরবরাহ করার দায়িত্ব নেন। এই ব্যাপারে হেডম্যান রনির সাথে যোগাযোগের জন্য একাধিকবার ফোন করা হলে ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
এদিকে বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান ও মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আজিজ আহমেদ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের নির্মূল করতে বৃহস্পতিবার সকালে বান্দরবান সদর জোন থেকে হেলিকপ্টারে করে দফায় দফায় অতিরিক্তি সেনা সদস্যদের পাঠানো হয় থানচির বড় মদকে।
বান্দরবান জেলা প্রশাসক মিজানুল হক চৌধুরী বলেন, ‘থানচির বড় মদক এলাকায় বৃহস্পতিবার কোন ধরনের গোলাগুলির খবর পাওয়া যায়নি, পরিস্থিতি শান্ত আছে।