ইসলামের অন্যতম স্তম্ভ নামাজ। নামাজকে বলা হয় মুমিনের মিরাজ। এই ইবাদতের মাধ্যমে আল্লাহ ও বান্দার মধ্যে কথোপকথন হয়। নামাজ মানুষকে যাবতীয় পাপাচার ও অশ্লীলতা থেকে মুক্ত রাখে। নামাজের অসংখ্য ফজিলত ও তাৎপর্যের কথা কোরান-হাদিসে বর্ণিত হয়েছে। তবে এসবের জন্য প্রয়োজন হলো নামাজই যথাযথভাবে আদায় করা। কোরানে ওই মুমিনকেই সফল বলা হয়েছে যারা একাগ্রতার সঙ্গে নামাজ আদায় করে। এ জন্য আল্লাহর দরবারে নামাজ কবুল হওয়ার পূর্বশর্ত হলো একাগ্রতা। একাগ্রতা ছাড়া নামাজ কবুল হওয়ার আশা করা যায় না। সুতরাং প্রত্যেক মুসল্লির নামাজে একাগ্রতা সৃষ্টির চেষ্টা থাকা উচিত।
একাগ্রতা সৃষ্টির জন্য নামাজের আগেই আয়োজন ও প্রস্তুতি সম্পন্ন করতে হবে। এটা অর্জনের অন্যতম উপায় হলো যথাসময়ের আগে নামাজের জন্য যথেষ্ট সময় নিয়ে প্রস্তুত হওয়া। যেমন পবিত্রতা অর্জন, ধীরস্থিরতা ও গাম্ভীর্যতার সঙ্গে মসজিদে গমন, মিসওয়াক করা এবং দু’রাকাত তাহিয়্যাতুল মসজিদ ও সুন্নাত আদায়। নামাজের মধ্যে ধীরস্থিরতা অবলম্বন করতে হবে। এক ব্যক্তি যথার্থভাবে নামাজ আদায় করছিল না। তাকে সতর্ক করতে গিয়ে রাসুল (সা.) বলেন, ‘তুমি রুকু কর ধীর ও শান্তভাবে, তারপর সোজা হয়ে দাঁড়াও। এরপর সেজদা কর ধীর ও শান্তভাবে।’
নামাজে একাগ্রতা সৃষ্টির একটি উপায় হলো মৃত্যুর কথা স্মরণ করা। নামাজে পাঠ্য আয়াতগুলো পৃথক পৃথক করে পড়া; চিন্তা-ভাবনা করা ও ধীরস্থিরতার সঙ্গে পড়া উচিত। নামাজে যা কিছু পাঠ করবে তার অর্থ ও মর্মের চিন্তা-ভাবনা করতে হবে। নামাজি ব্যক্তিকে বিশ্বাস রাখতে হবে যে, আল্লাহ তার সব ডাকে সাড়া দেন। কোরানে আল্লাহ বলেছেন ‘আমি নামাজকে আমার ও বান্দার মধ্যে ভাগ করে নিয়েছি। আর আমার বান্দা যা চাইবে, তার জন্য তা দেয়া হবে।’ নামাজি ব্যক্তি তার দৃষ্টি রাখবে সেজদার স্থানে। রুকু-সেজদাসহ প্রতিটি দোয়া পাঠ করবে অত্যন্ত মনোযোগের সঙ্গে। দোয়াগুলোর অর্থ জানা থাকলে সেদিকে মনোযোগ দেবে। মনোযোগ বিনষ্ট করতে পারে এমন সবকিছু সামনে থেকে নিজেকে সরিয়ে রাখবে।
নামাজরত অবস্থায় আকাশের দিকে তাকানো উচিত নয়। সবচেয়ে বড় কথা হলো, মনে করতে হবে আমি আল্লাহর সামনে দাঁড়িয়ে তার সঙ্গে কথা বলছি। তবেই নামাজে আসবে একাগ্রতা ও মনোযোগ।