হাওর বার্তা ডেস্কঃ শেরপুরে বন্যা পরিস্থিতির অপরিবর্তিত রয়েছে। জেলার পুরাতন ব্রহ্মপুত্রসহ অন্যান্য নদ-নদীর পানি কমতে শুরু করেছে।
তবে বন্যার্তদের মাঝে ত্রাণের জন্য হাহাকার চলছে। জনপ্রতিনিধিরা জানিয়েছে- সরকারিভাবে যতটুকু ত্রাণ দেওয়া হচ্ছে, তা অত্যন্ত অপ্রতুল।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, বন্যার্তরা দিনব্যাপী নদীর তীরে এবং উঁচু স্থানে বা পানির মধ্যে দাঁড়িয়ে থাকছে ত্রাণের আশায়। কোন একটি নৌকা বা ট্রলার দেখলেই পানি ভেঙ্গে ছুটে আসছে কেউ ত্রাণ নিয়ে আসছে কি-না, তা দেখতে। এদিকে সদর উপজেলার বন্যা দুর্গত এলাকায় প্রতিদিনই আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টির পক্ষে ত্রাণ তৎপরতা শুরু হওয়ায় বানভাসিদের মাঝে কিছুটা স্বস্তি ফিরে এসেছে। তবে সরকারিভাবে উল্লেখ্যযোগ্য ত্রাণ বিতরণ করা হচ্ছে না বলে জানালেন বানভাসিরা। কোন কোন স্থানে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতাকর্মীরা ত্রাণ দিচ্ছে বলে খবর পাওয়া গেছে।
এদিকে আজ দুপুরে শেরপুর ফেরিঘাট পয়েন্টে বন্যার পানি গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৩ সেন্টিমিটার কমেছে বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। বন্যায় জেলার তিন উপজেলার ১৪টি ইউনিয়নের ৭৭টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এর মধ্যে শেরপুর সদরের ৮ ইউনিয়নের ৩০টি, শ্রীবরদীর ২ ইউনিয়নের ১৫টি এবং নকলার ৪ ইউনিয়নের ১২ টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে প্রায় ৪০ হাজার লোক পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছেন। এছাড়া জেলার ২০ টি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্ধ রয়েছে বলে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর সূত্র জানায়।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক মো. আশারাফ উদ্দিন জানান, জেলায় বন্যায় এ পর্যন্ত সম্পূর্ণ রূপে ২০২০ হেক্টর ও আংশিকভাবে ১৫৭০ হেক্টর জমি’র রোপা আমন এবং প্রায় ৫ শতাদিক হেক্টর জমি’র সব্জীর ক্ষেত পানিতে নিমজ্জিত রয়েছে। তবে দুই-তিন দিনের মধ্যে পানি নেমে গেলে ফসলের তেমন ক্ষতি হবে না বলে তিনি আশা প্রকাশ করছেন।
সদর উপজেলার চরপক্ষিমারি ইউনিয়নের কুলুরচর-বেপারীপাড়া গ্রামের বন্যা পরিস্থিতির সবচেয়ে বেশি অবনতি ঘটেছে। ওই গ্রামের অর্ধশতাধিক ঘরবাড়ি পানিতে তলিয়ে রয়েছে। ঘরবাড়ি হারা অন্তত ৩০০ পরিবার স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয় ও বাঁধের উচু স্থানে আশ্রয় নিয়েছে।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক এটিএম জিয়াউল হাসান জানিয়েছে শেরপুরের বন্যার্তদের জন্য সরকার এ পর্যন্ত ৩শ মে.টন খাদ্যশস্য ও ১৫ লক্ষ্য টাকা বরাদ্দ করেছে যা বিতরণ চলছে।