হাওর বার্তা ডেস্কঃ বাংলাদেশের জাতীয় ফুল শাপলা। বর্ষার পানিতে ভাসমান ফুলের সৌন্দর্য্যে ছড়ানো ছাড়াও শবজি হিসেবে রয়েছে শাপলার বাড়তি কদর। সে কারণে বর্ষা মৌসুমে শাপলার হাট বসে কোথাও কোথাও। লৌহজং ও সিরাজদিখান আর শ্রীনর উপজেলার হাসাড়াও আড়িয়ল বিল এলাকায় শাপলা বিক্রি করে চলছে প্রায় ৫ হাজার পরিবার।
তেমনি একজন আমেনা বেগম। দুই ছেলে ও তিন মেয়ে নিয়ে তার সংসার। বছরের কয়েক মাস তারা শাপলা বিক্রি করেন। মূলত এ চার-পাঁচ মাস শাপলার সঙ্গেই ছয়জনের এ পরিবারটির বসবাস।
আমেনা বেগম বলেন, দিনের শেষে পাইকাররা তাদের কাছ থেকে এসব শাপলা সংগ্রহ করেন। পরে তারা একত্রে করে নিয়ে যান শহর এলাকায়।
স্থানীয়রা জানান, চার থেকে পাঁচ মাস কৃষি জমি পানির নিচে থাকায় এ মৌসুমে কৃষকের তেমন কোনো কাজ নেই। তাই এলাকার অনেক কৃষক এ পেশায় জড়িয়ে পড়েছেন। কোনো পুঁজির প্রয়োজন না হওয়ায় বিভিন্ন বয়সের মহিলা পুরুষ এ পেশায় অংশ নিয়ে জীবিকা নির্বাহ করছেন।
কোলাপাড়া, মাহমুদপট্টি, রসুনিয়া, বন্দিছড়া, কান্দিপাড়া, সমষপুর, ইমামগঞ্জ, শিমুলতলা, চারিপাড়া, তালতলা, বালাশুর ,পশ্চিম কুমারভোগ, খানবাড়ী, কউট্টাহার, দোগাছি, ছন বাড়ীর মোড় ও আড়িয়াল বিলের পাশে শাপলার পাইকারি ক্রয়কেন্দ্র রয়েছে। পাইকাররা এখান থেকেই নিয়মিত শাপলা ক্রয় করে ঢাকার যাত্রাবাড়ীসহ বিভিন্ন পাইকারি বাজারে বিক্রি করে থাকেন।
ঢাকার পাইকার মো. মনির মিঞা জানান, শাপলা সংগ্রহকারীদের থেকে এক মুঠা শাপলা ২৫ টাকা দরে ক্রয় করা হয়। তারপর গাড়ি ভাড়া গড়ে ৩ টাকা, লেবার ১ টাকা, আড়ত খরচ ২ টাকাসহ মোট ৩১ থেকে ৩২ টাকা খরচ পড়ে। যাত্রাবাড়ী আড়তে শাপলা বিক্রি হয় ৫০ থেকে ৬০ টাকা মুঠা।
এই বিষয়ে জেলার কৃষি কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির জানান, শাপলা আসলে কোন কৃষি পণ্য আওয়াতাভুক্ত নয়। এটি প্রাকৃতিকভাবে কৃষি জমি ও পুকুর কিংবা ডোবাতে জন্ম নেয় ,এই বিষয়ে আমাদের কোন পরামর্শ দেয়ার সুযোগ হয়ে উঠে না। তবে আমরা চেষ্টা করি কৃষকদের সহায়তা করার। এছাড়াও আমারা কৃষকদের শাপলা বেশি দিন সংরক্ষণ করার পরামর্শ দিয়ে থাকি।