ঢাকা ১২:০৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কেউ ত্রাণ পায় বারবার, কেউ পায়নি একবারও

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৭:৪৪:০২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২০ জুলাই ২০১৭
  • ৩২৮ বার

জাকির হোসাইনঃ  কিশোরগঞ্জ জেলার ইটনা,মিঠামইন, অষ্ঠগ্রামের হাওরপারের বন্যার্ত লোকজনের মধ্যে ত্রাণ বিতরণে চলছে সমন্বয়হীনতা। সরকারি, বেসরকারি সংস্থা, সংগঠন, ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের উদ্যোগের ত্রাণ বিতরণে যোগাযোগ সুবিধাকেই প্রাধান্য দেয়া হচ্ছে। এতে ঘুরেফিরে একই এলাকার দুর্গত লোকজন উপকৃত হচ্ছে। ফলে একেবারে নিচু অঞ্চলে  পানিবন্দী মানুষজন অতিদরিদ্র হওয়া স্বত্ত্বেও একবারও ত্রাণ পাচ্ছে না। অথচ সমন্বয়ের মাধ্যমে ত্রাণ বিতরণের ব্যবস্থা নিলে দুর্গত সকলেই কিছু না কিছু সহায়তা পেতো। হাহাকারও কিছুটা লাঘব হতো।
অনুসন্ধানে জানা গেছে,বিভিন্ন ইউনিয়নের নিচু অঞ্চল প্লাবিত হতে থাকে। অব্যাহত ভারী বর্ষণ আর পাহাড়ি ঢলে একাদিক ইউনিয়নের পুরো এলাকা বন্যার পানিতে তলিয়ে যায়। ক্রমশ বন্যার অবনতিতে উপজেলার শতাধিক গ্রামের লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দী অবস্থায় মারাত্মক দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন এখনও। এসব দুর্গত মানুষের মাঝে প্রশাসন সরকারিভাবে ত্রাণ বিতরণ করে আসছে। পাশাপাশি বিভিন্ন ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান, সংস্থা ও সংগঠন দুর্গতদের মধ্যে ত্রাণ বিতরণে এগিয়ে আসে। কিন্তু এসব ত্রাণ বিতরণের ক্ষেত্রে কোনো ধরণের সমন্বয় না থাকায় সবাই প্রায় একই এলাকায় ত্রাণ বিতরণ করছেন। এতে ইটনা মিঠামইন অষ্ঠগ্রাম হাওরপারের প্রকৃত অনেক দু:স্থ পরিবার ত্রাণ সহায়তা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। আবার এ-ও দেখা গেছে, ত্রাণ বিতরণের ক্ষেত্রে ভোটের রাজনীতিও প্রাধান্য পাচ্ছে। যারা ভোট দিয়েছেন তাদেরকেই কেবল দেয়া হচ্ছে ত্রআন সহায়তা-এমন অভিযোগ ভুক্তভোগী বাসিন্দাদের।
আমরা গরিব মানুষ। প্রায় দেড়মাস ধরে বাড়ির চতুর্দিকে পানি ঢুকছে। পানির ঢেউয়ে ঘর-দুয়ার বেশিরভাগ ভেঙ্গে গেছে। নৌকা না থাকায় ত্রাণ আনার জন্য যেতে পারি না। পানির কারণে বাড়িতেই বন্দী থাকায় একবারও আমাদের ভাগ্যে ত্রাণ জুটেনি ত্রাণ।
মিঠামইন উপজেলার বৈরাটী,কাটখাল  ইউনিয়নের গ্রামের ভেতরে হাওর বার্তার অনু সন্ধ্যানে জানা যায়, এমন অনেক দুর্গত পরিবার রয়েছে যারা একবারও সরকারী কিংবা বেসরকারী ত্রাণ পায়নি। তবে রাস্তার পাশের অনেক রয়েছেন যারা ২-৩ বার করে চাল, ডাল, আলুসহ বিভিন্ন সাহায্য পেয়েছে। অনেকে নৌকা নিয়ে ত্রাণ দিতে আসেন, তবে ঘুরে ফিরে একই লোক ত্রাণ পাচ্ছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এলাকাবাসি জানান, অনেকেই ত্রাণ দিতে যোগাযোগের সুবিধাজনক স্থানকে প্রাধান্য দিয়ে থাকেন। তারা রাস্তার পাশের লোকজনকে প্যাকেটজাত ত্রাণ দিয়ে কিছু ছবি ও সেলফি তুলেই ফিরে যান। বেশিরভাগ বেসরকারি ত্রাণ একই এলাকায় বিতরণ করা হচ্ছে। এতে প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্থ অনেকেই বঞ্চিত হচ্ছে।
এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিন উপজেলার সকল ইউনিয়নের লক্ষাধিক মানুষ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। সরকার শতভাগ দুর্গতকে সহায়তা দিতে পারবে না। তবে এ পর্যন্ত সাড়ে ৪০০ মেট্টিক টন চাল ও ৩৫ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, বেসরকারি সংস্থা ও ব্যক্তি উদ্যোগে অনেক ত্রাণ বিতরণকারীরা প্রশাসনের সাথে সমন্বয় রাখছেন না। সমন্বয়ের মাধ্যমে ত্রাণ বিতরণের ব্যবস্থা নিলে বেশি মানুষ উপকৃত হতো।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

কেউ ত্রাণ পায় বারবার, কেউ পায়নি একবারও

আপডেট টাইম : ০৭:৪৪:০২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২০ জুলাই ২০১৭

জাকির হোসাইনঃ  কিশোরগঞ্জ জেলার ইটনা,মিঠামইন, অষ্ঠগ্রামের হাওরপারের বন্যার্ত লোকজনের মধ্যে ত্রাণ বিতরণে চলছে সমন্বয়হীনতা। সরকারি, বেসরকারি সংস্থা, সংগঠন, ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের উদ্যোগের ত্রাণ বিতরণে যোগাযোগ সুবিধাকেই প্রাধান্য দেয়া হচ্ছে। এতে ঘুরেফিরে একই এলাকার দুর্গত লোকজন উপকৃত হচ্ছে। ফলে একেবারে নিচু অঞ্চলে  পানিবন্দী মানুষজন অতিদরিদ্র হওয়া স্বত্ত্বেও একবারও ত্রাণ পাচ্ছে না। অথচ সমন্বয়ের মাধ্যমে ত্রাণ বিতরণের ব্যবস্থা নিলে দুর্গত সকলেই কিছু না কিছু সহায়তা পেতো। হাহাকারও কিছুটা লাঘব হতো।
অনুসন্ধানে জানা গেছে,বিভিন্ন ইউনিয়নের নিচু অঞ্চল প্লাবিত হতে থাকে। অব্যাহত ভারী বর্ষণ আর পাহাড়ি ঢলে একাদিক ইউনিয়নের পুরো এলাকা বন্যার পানিতে তলিয়ে যায়। ক্রমশ বন্যার অবনতিতে উপজেলার শতাধিক গ্রামের লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দী অবস্থায় মারাত্মক দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন এখনও। এসব দুর্গত মানুষের মাঝে প্রশাসন সরকারিভাবে ত্রাণ বিতরণ করে আসছে। পাশাপাশি বিভিন্ন ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান, সংস্থা ও সংগঠন দুর্গতদের মধ্যে ত্রাণ বিতরণে এগিয়ে আসে। কিন্তু এসব ত্রাণ বিতরণের ক্ষেত্রে কোনো ধরণের সমন্বয় না থাকায় সবাই প্রায় একই এলাকায় ত্রাণ বিতরণ করছেন। এতে ইটনা মিঠামইন অষ্ঠগ্রাম হাওরপারের প্রকৃত অনেক দু:স্থ পরিবার ত্রাণ সহায়তা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। আবার এ-ও দেখা গেছে, ত্রাণ বিতরণের ক্ষেত্রে ভোটের রাজনীতিও প্রাধান্য পাচ্ছে। যারা ভোট দিয়েছেন তাদেরকেই কেবল দেয়া হচ্ছে ত্রআন সহায়তা-এমন অভিযোগ ভুক্তভোগী বাসিন্দাদের।
আমরা গরিব মানুষ। প্রায় দেড়মাস ধরে বাড়ির চতুর্দিকে পানি ঢুকছে। পানির ঢেউয়ে ঘর-দুয়ার বেশিরভাগ ভেঙ্গে গেছে। নৌকা না থাকায় ত্রাণ আনার জন্য যেতে পারি না। পানির কারণে বাড়িতেই বন্দী থাকায় একবারও আমাদের ভাগ্যে ত্রাণ জুটেনি ত্রাণ।
মিঠামইন উপজেলার বৈরাটী,কাটখাল  ইউনিয়নের গ্রামের ভেতরে হাওর বার্তার অনু সন্ধ্যানে জানা যায়, এমন অনেক দুর্গত পরিবার রয়েছে যারা একবারও সরকারী কিংবা বেসরকারী ত্রাণ পায়নি। তবে রাস্তার পাশের অনেক রয়েছেন যারা ২-৩ বার করে চাল, ডাল, আলুসহ বিভিন্ন সাহায্য পেয়েছে। অনেকে নৌকা নিয়ে ত্রাণ দিতে আসেন, তবে ঘুরে ফিরে একই লোক ত্রাণ পাচ্ছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এলাকাবাসি জানান, অনেকেই ত্রাণ দিতে যোগাযোগের সুবিধাজনক স্থানকে প্রাধান্য দিয়ে থাকেন। তারা রাস্তার পাশের লোকজনকে প্যাকেটজাত ত্রাণ দিয়ে কিছু ছবি ও সেলফি তুলেই ফিরে যান। বেশিরভাগ বেসরকারি ত্রাণ একই এলাকায় বিতরণ করা হচ্ছে। এতে প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্থ অনেকেই বঞ্চিত হচ্ছে।
এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিন উপজেলার সকল ইউনিয়নের লক্ষাধিক মানুষ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। সরকার শতভাগ দুর্গতকে সহায়তা দিতে পারবে না। তবে এ পর্যন্ত সাড়ে ৪০০ মেট্টিক টন চাল ও ৩৫ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, বেসরকারি সংস্থা ও ব্যক্তি উদ্যোগে অনেক ত্রাণ বিতরণকারীরা প্রশাসনের সাথে সমন্বয় রাখছেন না। সমন্বয়ের মাধ্যমে ত্রাণ বিতরণের ব্যবস্থা নিলে বেশি মানুষ উপকৃত হতো।