ঢাকা ০২:৪১ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বৈধ অস্ত্রের সঙ্গে অবৈধ অস্ত্র আমদানি, নজরদারিতে ১০০ অস্ত্র ব্যবসায়ী

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৮:২৬:৫০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৭ জুলাই ২০১৭
  • ২৯৫ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ  রাজধানীর হযরত শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে  দুই দফা  অবৈধ অস্ত্র জব্দের পর টনক নড়েছে সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের। ঘটনার তদন্তে কেঁচো খুড়তে বেরিয়ে আসতে শুরু করেছে সাপ। অস্ত্র আমদানি নীতিমালা ভঙ্গ করে বৈধ অস্ত্রের সঙ্গে অবৈধ অস্ত্র আমদানিতে উদ্বিগ্ন হয়ে ওঠেছে প্রশাসন। ১০০ অস্ত্র ব্যবসায়ীরকে গোয়েন্দা নজরদারির আনা হযেছে। পাশাপাশি তাদের প্রতিষ্ঠানগুলোতে অস্ত্র আমদানি ও বিক্রির খুঁটিনাটি বিষয়ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

গত  ৯ ও ১১ জুলাই হজরত শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ১৯টি অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করে শুল্ক গোয়েন্দারা। বিমানবন্দরের ফ্রেইট ইউনিট থেকে এসব অস্ত্র উদ্ধার করা হয়। দুই দফাতে এই অবৈধ অস্ত্রগুলো ইতালি থেকে নিয়ে আসে মেসার্স ইমরান আর্মস অ্যান্ড কোম্পানি নামের একটি প্রতিষ্ঠান। আমদানিনীতি অনুসারে জব্দ হওয়া অস্ত্রগুলোর ওপর নিষেধাজ্ঞা ছিল।

এসব অস্ত্র সন্ত্রাসীদের হাতে চলে যেতে পারে কিংবা অপব্যবহার হতে পারে বলেও শঙ্কিত শুল্ক গোয়েন্দারা। আমদানি নিষিদ্ধ অস্ত্র নিয়ে আসার ঘটনার রহস্য উন্মোচনে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটিও গঠন করে সরকারের এ সংস্থাটি। ১৩ জুলাই গঠিত এই কমিটিকে আগামী ১০ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

সংশ্লিস্ট সূত্র জানায়, সাধারণত অস্ত্রের তিনটি অংশ থাকে। এর মধ্যে আছে বেরেল, প্লাইডার ও বডি। প্রতিটি অংশের নম্বর (ইউনিক) একই হতে হয়। কিন্তু বিমানবন্দরে জব্দ হওয়া অস্ত্রগুলোর তিনটি অংশেরই নম্বর ছিল ভিন্ন ভিন্ন।

এ বিষয়ে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতরের মহাপরিচালক ড. মইনুল খান সাংবাদিকদের জানান, পুরনো ও ফ্যাব্রিকেটেড অস্ত্র আমাদের দেশে আমদানি করা নিষিদ্ধ। জব্দ হওয়া অস্ত্রগুলো নিয়ে অনেক রহস্য ও ঝুঁকি রয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ এই অস্ত্রগুলো দ্বারা রাষ্ট্র কিংবা জনগণের বড় ধরনের ক্ষতি করা সম্ভব। বিমানবন্দরে পর পর দুটি ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে আমরা ১০০ অস্ত্র ব্যবসায়ীকে নজরে রেখে তদন্ত করছি।

বিষয়টির কারণ ব্যাখা করে তিনি বলেন, যেকোনো অস্ত্র বিক্রি কিংবা ব্যবহারের আগে তার ইউনিক নম্বর এবং ক্রেতা ও ব্যবহারকারীর নাম লিপিবদ্ধ করা হয়। ওই ইউনিক নম্বর দেখেই পরবর্তীতে যেকোনো ঘটনায় অস্ত্র ব্যবহার হলে তার ব্যবহারকারীকে শনাক্ত করা হয়। যদি ইউনিক নম্বর ঠিক না থাকে তাহলে তার ব্যবহারকারীকে চিহ্নিত করা অসম্ভব হয়ে পড়ে। যে কেউ যেকোনো সময়ে এ ধরনের অস্ত্র কেনে কিংবা ভাড়া করে কোনো ব্যক্তিকে খুন করতে পারেন। এ ঘটনার পর অস্ত্র উদ্ধার হলে এর ব্যবহারকারী খুনের বিষয়টি অস্বীকারও করতে পারেন— যেহেতু অস্ত্রের তিন অংশের নম্বর ঠিক নেই।

গোয়েন্দা সংস্থাগুলো মানে করছে, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বৈধ ও অবৈধ পথে অস্ত্র নিয়ে এসে দেশের আইনশৃক্সখলা পরিস্থিতি ঘোলা ও নাশকতা চালাতে পারে দুর্বৃত্তরা। যে কারণে সরকারের সব গোয়েন্দা সংস্থা এ বিষয়ে নজরদারি জোরদার করেছে। বিশেষ করে জঙ্গিরা নানা কৌশলে অস্ত্র সংগ্রহ করতে পারে। সবদিক মাথায় রেখেই গোয়েন্দারা এ বিষয়ে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছে। সরকারও এক্ষেত্রে কঠোর বলে জানান তারা।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

বৈধ অস্ত্রের সঙ্গে অবৈধ অস্ত্র আমদানি, নজরদারিতে ১০০ অস্ত্র ব্যবসায়ী

আপডেট টাইম : ০৮:২৬:৫০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৭ জুলাই ২০১৭

হাওর বার্তা ডেস্কঃ  রাজধানীর হযরত শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে  দুই দফা  অবৈধ অস্ত্র জব্দের পর টনক নড়েছে সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের। ঘটনার তদন্তে কেঁচো খুড়তে বেরিয়ে আসতে শুরু করেছে সাপ। অস্ত্র আমদানি নীতিমালা ভঙ্গ করে বৈধ অস্ত্রের সঙ্গে অবৈধ অস্ত্র আমদানিতে উদ্বিগ্ন হয়ে ওঠেছে প্রশাসন। ১০০ অস্ত্র ব্যবসায়ীরকে গোয়েন্দা নজরদারির আনা হযেছে। পাশাপাশি তাদের প্রতিষ্ঠানগুলোতে অস্ত্র আমদানি ও বিক্রির খুঁটিনাটি বিষয়ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

গত  ৯ ও ১১ জুলাই হজরত শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ১৯টি অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করে শুল্ক গোয়েন্দারা। বিমানবন্দরের ফ্রেইট ইউনিট থেকে এসব অস্ত্র উদ্ধার করা হয়। দুই দফাতে এই অবৈধ অস্ত্রগুলো ইতালি থেকে নিয়ে আসে মেসার্স ইমরান আর্মস অ্যান্ড কোম্পানি নামের একটি প্রতিষ্ঠান। আমদানিনীতি অনুসারে জব্দ হওয়া অস্ত্রগুলোর ওপর নিষেধাজ্ঞা ছিল।

এসব অস্ত্র সন্ত্রাসীদের হাতে চলে যেতে পারে কিংবা অপব্যবহার হতে পারে বলেও শঙ্কিত শুল্ক গোয়েন্দারা। আমদানি নিষিদ্ধ অস্ত্র নিয়ে আসার ঘটনার রহস্য উন্মোচনে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটিও গঠন করে সরকারের এ সংস্থাটি। ১৩ জুলাই গঠিত এই কমিটিকে আগামী ১০ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

সংশ্লিস্ট সূত্র জানায়, সাধারণত অস্ত্রের তিনটি অংশ থাকে। এর মধ্যে আছে বেরেল, প্লাইডার ও বডি। প্রতিটি অংশের নম্বর (ইউনিক) একই হতে হয়। কিন্তু বিমানবন্দরে জব্দ হওয়া অস্ত্রগুলোর তিনটি অংশেরই নম্বর ছিল ভিন্ন ভিন্ন।

এ বিষয়ে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতরের মহাপরিচালক ড. মইনুল খান সাংবাদিকদের জানান, পুরনো ও ফ্যাব্রিকেটেড অস্ত্র আমাদের দেশে আমদানি করা নিষিদ্ধ। জব্দ হওয়া অস্ত্রগুলো নিয়ে অনেক রহস্য ও ঝুঁকি রয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ এই অস্ত্রগুলো দ্বারা রাষ্ট্র কিংবা জনগণের বড় ধরনের ক্ষতি করা সম্ভব। বিমানবন্দরে পর পর দুটি ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে আমরা ১০০ অস্ত্র ব্যবসায়ীকে নজরে রেখে তদন্ত করছি।

বিষয়টির কারণ ব্যাখা করে তিনি বলেন, যেকোনো অস্ত্র বিক্রি কিংবা ব্যবহারের আগে তার ইউনিক নম্বর এবং ক্রেতা ও ব্যবহারকারীর নাম লিপিবদ্ধ করা হয়। ওই ইউনিক নম্বর দেখেই পরবর্তীতে যেকোনো ঘটনায় অস্ত্র ব্যবহার হলে তার ব্যবহারকারীকে শনাক্ত করা হয়। যদি ইউনিক নম্বর ঠিক না থাকে তাহলে তার ব্যবহারকারীকে চিহ্নিত করা অসম্ভব হয়ে পড়ে। যে কেউ যেকোনো সময়ে এ ধরনের অস্ত্র কেনে কিংবা ভাড়া করে কোনো ব্যক্তিকে খুন করতে পারেন। এ ঘটনার পর অস্ত্র উদ্ধার হলে এর ব্যবহারকারী খুনের বিষয়টি অস্বীকারও করতে পারেন— যেহেতু অস্ত্রের তিন অংশের নম্বর ঠিক নেই।

গোয়েন্দা সংস্থাগুলো মানে করছে, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বৈধ ও অবৈধ পথে অস্ত্র নিয়ে এসে দেশের আইনশৃক্সখলা পরিস্থিতি ঘোলা ও নাশকতা চালাতে পারে দুর্বৃত্তরা। যে কারণে সরকারের সব গোয়েন্দা সংস্থা এ বিষয়ে নজরদারি জোরদার করেছে। বিশেষ করে জঙ্গিরা নানা কৌশলে অস্ত্র সংগ্রহ করতে পারে। সবদিক মাথায় রেখেই গোয়েন্দারা এ বিষয়ে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছে। সরকারও এক্ষেত্রে কঠোর বলে জানান তারা।