ঢাকা ০৬:১০ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৪ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

গরমে কেন ফল খাবেন

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১১:৩৫:৩১ অপরাহ্ন, রবিবার, ২১ মে ২০১৭
  • ৩৩২ বার

গরমে ভালো থাকা কি সহজ কথা! প্রকৃতপক্ষে আপনার প্রতিদিনের কর্মব্যস্ততায় কোনো রদবদল হয় না। সকালে ক্লাস কিংবা কর্মক্ষেত্রে যাওয়া থেকে শুরু করে বিকালে বাসায় ফিরে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সময় কাটানো, কিছুই বাদ যায় না নিত্যকার রুটিন থেকে। অথচ সবকিছুতেই বিঘ্ন ঘটায় এই অসহনীয় গরম।

তাজা ফল কেন খাবেন : গ্রীষ্মকালীন সময়ে বাজারজুড়ে থাকে শুধু ফল আর ফল। এ সময়কার ফলগুলো হল তরমুজ, লিচু, আম, জাম, কাঁঠাল, আনারস, বেল, আখ, পানিফল, নাশপাতি ইত্যাদি। কলা, পেঁপে সারা বছরই পাওয়া যায়। গরমে প্রচুর ফল খান এবং দেহে সঞ্চয় করুন ভিটামিন ও খাদ্যশক্তি।

তরমুজ : গ্রীষ্মের শুরু থেকেই বাজারে এবং রাস্তার পাশে অনেক জায়গায় স্তূপ আকারে সাজানো থাকে তরমুজ। আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে তরমুজকে বলে ফলের রাজা। তরমুজে রয়েছে ত্বকে আর্দ্রতা জোগানোর অসীম ক্ষমতা। তরমুজ ভিটামিন ‘এ’ ও ‘সি’ সমৃদ্ধ ফল। এতে রয়েছে ৯৭ শতাংশ জলীয় অংশ সে জন্য গরমে তরমুজ খাওয়া ভালো, কারণ ক্রমাগত ঘাম হওয়ার জন্য যে জলীয় অংশ শরীর থেকে বেরিয়ে যায়, এটা তা ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করে। এছাড়া কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে, হজমে সাহায্য করে ও কিডনির কাজকর্ম ঠিক রাখে।

কাঁঠাল : আরেকটি পুষ্টিকর ফল হল কাঁঠাল। বাজারে প্রথমে কাঁচা কাঁঠাল ও পরে পাকা কাঁঠাল পাওয়া যায়। কাঁচা কাঁঠাল তরকারি হিসেবে উত্তম সবজি। পাকা কাঁঠালে রয়েছে প্রচুর শর্করা, আমিষ, ভিটামিন ও খনিজ লবণ। গ্রীষ্মকালীন সময়ে গ্রাম-বাংলার মানুষ ভাতের পরিপূরক হিসেবে পাকা কাঁঠাল খেয়ে থাকে, কাঁঠালের বিচিও খুব পুষ্টিকর। ফাইবার বা আঁশ কাঁঠালে বেশি থাকার কারণে কাঁঠাল খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়। গ্রীষ্মকালীন ফলের মধ্যে লিচু আগে বাজারে ওঠে এবং এর জনপ্রিয়তা অনেক বেশি। খাদ্যমানের দিক থেকে লিচু একটি উৎকৃষ্ট ফল। এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে শ্বেতসার, ভিটামিন ও খনিজ লবণ। রূপে-গুণে লিচু সবার প্রিয় ফল।

আম : পাকা আম হল ভিটামিন ‘এ’ সমৃদ্ধ ফল। ১০০ গ্রাম আমে ১০০০-১৫০০ আইইউ ভিটামিন ‘এ’ থাকে, যার অভাবে অন্ধত্বসহ চোখের নানা রোগ, চুলপড়া, খসখসে চামড়া, হজমের সমস্যা ইত্যাদি দেখা যায়।

এছাড়া আমে ভিটামিন বি ও সি, খনিজ লবণ, ক্যালসিয়াম ও প্রচুর খাদ্যশক্তি পাওয়া যায়। জাম শুধু পাওয়া যায় গরমকালেই। নানা রকম খনিজ পদার্থের মধ্যে জামে আয়রন থাকে সবচেয়ে বেশি। সে জন্য বলা হয় জাম খেলে রক্ত পরিষ্কার হয়। এছাড়া সর্দি-কাশি, হজমের গণ্ডগোল ও বাতের অসুখে জাম উপকারী। এ সময়কার আরেকটি সুস্বাদু ও ভিটামিন ‘সি’ সমৃদ্ধ ফল আনারস। সর্দি-কাশিতে আনারস খেলে শ্লেষ্মা ও মিউকাসকে তরল করে। ফলে অনেক উপকার পাওয়া যায়।

পাকা পেঁপে : ভিটামিন ‘এ’ সমৃদ্ধ ফল হল পাকা পেঁপে। ১০০ গ্রাম ফলে ভিটামিন ‘এ’ থাকে ১১১০ ইউনিট। এছাড়া থাকে প্রচুর শর্করা, প্রোটিন, ভিটামিন বিওসি, খনিজ লবণ এবং খাদ্যশক্তি। কাঁচা পেঁপেও অত্যন্ত পুষ্টিকর সবজি। পেঁপের সাদা আঠায় প্যাপেইন নামক এনজাইম থাকে, যা প্রোটিন পরিপাকে সাহায্য করে। পেঁপে সহজপাচ্য। গরমে পেঁপে অথবা সিদ্ধ করা কাঁচা পেঁপে অবশ্যই খাবারের তালিকায় রাখবেন। বেল আরেকটি পুষ্টিকর ফল। এতে আছে প্রচুর শর্করা, প্রোটিন, ভিটামিন ও খনিজ লবণ। গ্রীষ্মের কাঠফাটা দুপুরে ১ গ্লাস বেলের শরবত খেলে কার না প্রাণ জুড়ায়। কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে বেলের জুড়ি নেই। গরমকালে

পানিফল আরেকটি পুষ্টিকর ফল। এতে শতকরা ৪.৭ গ্রাম প্রোটিন পাওয়া যায় যা আপেল, আঙ্গুর, কলা ও পেয়ারা থেকে বেশি। এছাড়া রয়েছে শ্বেতসার, খনিজ লবণের মধ্যে ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, আয়রন ইত্যাদি। খাদ্যশক্তি পাওয়া যায় ১১৫ কিলোক্যালরি।

ছোট শিশু থেকে বৃদ্ধ সবাই খেতে পারে অত্যন্ত পুষ্টিকর, দামে তুলনামূলকভাবে সস্তা, হাতের কাছে সারা বছরই পাওয়া যায় এমন একটি ফল কলা। ১০০ গ্রাম কলায় থাকে ১৫৩ কিলোক্যালরি শক্তি, শর্করা ৩৫ ভাগ, খনিজ লবণের মধ্যে ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, ফসফরাস, আয়রন, ভিটামিন বি ও সি। প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় ১টি করে কলা আমাদের অবশ্যই রাখা উচিত।
এই গরমে একটু-আধটু পরিশ্রমেই বড্ড ক্লান্ত হয়ে পড়ছে শরীর। তাই তৃষ্ণা মেটাতে সঙ্গী করুন এমন সব ফল আর ফলের রস, যেটি ওষুধেরও কাজ করবে।

আপেলের রস : আপেলের রস মস্তিষ্কে অ্যাসিটাইলকোলিনের মাত্রা ঠিক রেখে আলঝেইমার থেকে দূরে রাখতে সাহায্য করে। আমাদের মস্তিষ্কে গুরুত্বপূর্ণ এক ধরনের রাসায়নিক পদার্থ আছে, নাম অ্যাসিটাইলকোলিন। এটি মস্তিষ্কের স্মৃতি অংশের জন্য খুব দরকারি। কোনো কারণে যদি এটির মাত্রা কমে যায়, তাহলে সেই মানুষটি আলঝেইমার রোগে আক্রান্ত হবে। অর্থাৎ, মানুষটি তার ছোট ছোট স্মৃতি হারাবে। এ ক্ষেত্রে আপেলের রস হতে পারে সহজ সমাধান।

আনারসের রস : আনারস তৃষ্ণা তো মেটায়ই, বাড়তি হিসেবে আনারসে থাকে ব্রোমেলেইন নামের এমন এক ধরনের এনজাইম, যা অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি এজেন্ট হিসেবে কাজ করে শরীরে। এবং আর্থ্রাইটিসের জন্য হাড়ের সংযোগস্থলের ফোলা ভাব এবং ব্যথা কমিয়ে দেয় আনারস। এক গবেষণায় বলা হয়, যেসব রোগী হাঁটুর ব্যথায় (অস্থিও আর্থ্রাইটিস) ভুগছেন, তাদের জন্য আনারস সত্যিকারের অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি ওষুধের বিকল্প হিসেবে কাজ করে।

কমলার রস : এখন বছরজুড়ে বাজারে পাওয়া যায় কমলা। কমলার রসে থাকে হেসপেরিডিন নামের এক ধরনের অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট। এটি হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়। রক্তনালির কর্মক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়। এক গবেষণায় দেখা যায়, যারা দৈনিক ৫০০ এমএল কমলার রস খায়, তাদের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রিত থাকে অন্য ব্যক্তিদের তুলনায় অনেক বেশি।

আঙুরের রস : আঙুরের রস সুস্বাদু তো বটেই, ওজন কমাতেও উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখে। ওজন কমানোর জন্য শরীর সম্পর্কে সচেতন মানুষ কায়দা-কসরতের অন্ত রাখে না। শরীরচর্চা, আধপেটা খেয়ে থাকা- সবকিছুই চলে সমানে। কিন্তু যারা এতসব ঝক্কিতে যেতে চায় না, তাদের জন্য আছে এক সহজ সমাধান। আঙুরের রস হতে পারে তাদের জন্য একমাত্র ওষুধ।
এছাড়া আপনি প্রতিদিনের খাবারের তালিকায় শসা, গাজর রাখতে পারেন। পাশাপাশি লেবুর শরবত এবং কচি ডাবের পানি পান করতে পারেন। যা আপনার শরীর-মন দুটোকেই রাখবে সতেজ। আর ত্বকে ফিরে আসবে তারুণ্য আর লাবণ্য।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

গরমে কেন ফল খাবেন

আপডেট টাইম : ১১:৩৫:৩১ অপরাহ্ন, রবিবার, ২১ মে ২০১৭

গরমে ভালো থাকা কি সহজ কথা! প্রকৃতপক্ষে আপনার প্রতিদিনের কর্মব্যস্ততায় কোনো রদবদল হয় না। সকালে ক্লাস কিংবা কর্মক্ষেত্রে যাওয়া থেকে শুরু করে বিকালে বাসায় ফিরে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সময় কাটানো, কিছুই বাদ যায় না নিত্যকার রুটিন থেকে। অথচ সবকিছুতেই বিঘ্ন ঘটায় এই অসহনীয় গরম।

তাজা ফল কেন খাবেন : গ্রীষ্মকালীন সময়ে বাজারজুড়ে থাকে শুধু ফল আর ফল। এ সময়কার ফলগুলো হল তরমুজ, লিচু, আম, জাম, কাঁঠাল, আনারস, বেল, আখ, পানিফল, নাশপাতি ইত্যাদি। কলা, পেঁপে সারা বছরই পাওয়া যায়। গরমে প্রচুর ফল খান এবং দেহে সঞ্চয় করুন ভিটামিন ও খাদ্যশক্তি।

তরমুজ : গ্রীষ্মের শুরু থেকেই বাজারে এবং রাস্তার পাশে অনেক জায়গায় স্তূপ আকারে সাজানো থাকে তরমুজ। আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে তরমুজকে বলে ফলের রাজা। তরমুজে রয়েছে ত্বকে আর্দ্রতা জোগানোর অসীম ক্ষমতা। তরমুজ ভিটামিন ‘এ’ ও ‘সি’ সমৃদ্ধ ফল। এতে রয়েছে ৯৭ শতাংশ জলীয় অংশ সে জন্য গরমে তরমুজ খাওয়া ভালো, কারণ ক্রমাগত ঘাম হওয়ার জন্য যে জলীয় অংশ শরীর থেকে বেরিয়ে যায়, এটা তা ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করে। এছাড়া কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে, হজমে সাহায্য করে ও কিডনির কাজকর্ম ঠিক রাখে।

কাঁঠাল : আরেকটি পুষ্টিকর ফল হল কাঁঠাল। বাজারে প্রথমে কাঁচা কাঁঠাল ও পরে পাকা কাঁঠাল পাওয়া যায়। কাঁচা কাঁঠাল তরকারি হিসেবে উত্তম সবজি। পাকা কাঁঠালে রয়েছে প্রচুর শর্করা, আমিষ, ভিটামিন ও খনিজ লবণ। গ্রীষ্মকালীন সময়ে গ্রাম-বাংলার মানুষ ভাতের পরিপূরক হিসেবে পাকা কাঁঠাল খেয়ে থাকে, কাঁঠালের বিচিও খুব পুষ্টিকর। ফাইবার বা আঁশ কাঁঠালে বেশি থাকার কারণে কাঁঠাল খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়। গ্রীষ্মকালীন ফলের মধ্যে লিচু আগে বাজারে ওঠে এবং এর জনপ্রিয়তা অনেক বেশি। খাদ্যমানের দিক থেকে লিচু একটি উৎকৃষ্ট ফল। এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে শ্বেতসার, ভিটামিন ও খনিজ লবণ। রূপে-গুণে লিচু সবার প্রিয় ফল।

আম : পাকা আম হল ভিটামিন ‘এ’ সমৃদ্ধ ফল। ১০০ গ্রাম আমে ১০০০-১৫০০ আইইউ ভিটামিন ‘এ’ থাকে, যার অভাবে অন্ধত্বসহ চোখের নানা রোগ, চুলপড়া, খসখসে চামড়া, হজমের সমস্যা ইত্যাদি দেখা যায়।

এছাড়া আমে ভিটামিন বি ও সি, খনিজ লবণ, ক্যালসিয়াম ও প্রচুর খাদ্যশক্তি পাওয়া যায়। জাম শুধু পাওয়া যায় গরমকালেই। নানা রকম খনিজ পদার্থের মধ্যে জামে আয়রন থাকে সবচেয়ে বেশি। সে জন্য বলা হয় জাম খেলে রক্ত পরিষ্কার হয়। এছাড়া সর্দি-কাশি, হজমের গণ্ডগোল ও বাতের অসুখে জাম উপকারী। এ সময়কার আরেকটি সুস্বাদু ও ভিটামিন ‘সি’ সমৃদ্ধ ফল আনারস। সর্দি-কাশিতে আনারস খেলে শ্লেষ্মা ও মিউকাসকে তরল করে। ফলে অনেক উপকার পাওয়া যায়।

পাকা পেঁপে : ভিটামিন ‘এ’ সমৃদ্ধ ফল হল পাকা পেঁপে। ১০০ গ্রাম ফলে ভিটামিন ‘এ’ থাকে ১১১০ ইউনিট। এছাড়া থাকে প্রচুর শর্করা, প্রোটিন, ভিটামিন বিওসি, খনিজ লবণ এবং খাদ্যশক্তি। কাঁচা পেঁপেও অত্যন্ত পুষ্টিকর সবজি। পেঁপের সাদা আঠায় প্যাপেইন নামক এনজাইম থাকে, যা প্রোটিন পরিপাকে সাহায্য করে। পেঁপে সহজপাচ্য। গরমে পেঁপে অথবা সিদ্ধ করা কাঁচা পেঁপে অবশ্যই খাবারের তালিকায় রাখবেন। বেল আরেকটি পুষ্টিকর ফল। এতে আছে প্রচুর শর্করা, প্রোটিন, ভিটামিন ও খনিজ লবণ। গ্রীষ্মের কাঠফাটা দুপুরে ১ গ্লাস বেলের শরবত খেলে কার না প্রাণ জুড়ায়। কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে বেলের জুড়ি নেই। গরমকালে

পানিফল আরেকটি পুষ্টিকর ফল। এতে শতকরা ৪.৭ গ্রাম প্রোটিন পাওয়া যায় যা আপেল, আঙ্গুর, কলা ও পেয়ারা থেকে বেশি। এছাড়া রয়েছে শ্বেতসার, খনিজ লবণের মধ্যে ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, আয়রন ইত্যাদি। খাদ্যশক্তি পাওয়া যায় ১১৫ কিলোক্যালরি।

ছোট শিশু থেকে বৃদ্ধ সবাই খেতে পারে অত্যন্ত পুষ্টিকর, দামে তুলনামূলকভাবে সস্তা, হাতের কাছে সারা বছরই পাওয়া যায় এমন একটি ফল কলা। ১০০ গ্রাম কলায় থাকে ১৫৩ কিলোক্যালরি শক্তি, শর্করা ৩৫ ভাগ, খনিজ লবণের মধ্যে ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, ফসফরাস, আয়রন, ভিটামিন বি ও সি। প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় ১টি করে কলা আমাদের অবশ্যই রাখা উচিত।
এই গরমে একটু-আধটু পরিশ্রমেই বড্ড ক্লান্ত হয়ে পড়ছে শরীর। তাই তৃষ্ণা মেটাতে সঙ্গী করুন এমন সব ফল আর ফলের রস, যেটি ওষুধেরও কাজ করবে।

আপেলের রস : আপেলের রস মস্তিষ্কে অ্যাসিটাইলকোলিনের মাত্রা ঠিক রেখে আলঝেইমার থেকে দূরে রাখতে সাহায্য করে। আমাদের মস্তিষ্কে গুরুত্বপূর্ণ এক ধরনের রাসায়নিক পদার্থ আছে, নাম অ্যাসিটাইলকোলিন। এটি মস্তিষ্কের স্মৃতি অংশের জন্য খুব দরকারি। কোনো কারণে যদি এটির মাত্রা কমে যায়, তাহলে সেই মানুষটি আলঝেইমার রোগে আক্রান্ত হবে। অর্থাৎ, মানুষটি তার ছোট ছোট স্মৃতি হারাবে। এ ক্ষেত্রে আপেলের রস হতে পারে সহজ সমাধান।

আনারসের রস : আনারস তৃষ্ণা তো মেটায়ই, বাড়তি হিসেবে আনারসে থাকে ব্রোমেলেইন নামের এমন এক ধরনের এনজাইম, যা অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি এজেন্ট হিসেবে কাজ করে শরীরে। এবং আর্থ্রাইটিসের জন্য হাড়ের সংযোগস্থলের ফোলা ভাব এবং ব্যথা কমিয়ে দেয় আনারস। এক গবেষণায় বলা হয়, যেসব রোগী হাঁটুর ব্যথায় (অস্থিও আর্থ্রাইটিস) ভুগছেন, তাদের জন্য আনারস সত্যিকারের অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি ওষুধের বিকল্প হিসেবে কাজ করে।

কমলার রস : এখন বছরজুড়ে বাজারে পাওয়া যায় কমলা। কমলার রসে থাকে হেসপেরিডিন নামের এক ধরনের অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট। এটি হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়। রক্তনালির কর্মক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়। এক গবেষণায় দেখা যায়, যারা দৈনিক ৫০০ এমএল কমলার রস খায়, তাদের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রিত থাকে অন্য ব্যক্তিদের তুলনায় অনেক বেশি।

আঙুরের রস : আঙুরের রস সুস্বাদু তো বটেই, ওজন কমাতেও উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখে। ওজন কমানোর জন্য শরীর সম্পর্কে সচেতন মানুষ কায়দা-কসরতের অন্ত রাখে না। শরীরচর্চা, আধপেটা খেয়ে থাকা- সবকিছুই চলে সমানে। কিন্তু যারা এতসব ঝক্কিতে যেতে চায় না, তাদের জন্য আছে এক সহজ সমাধান। আঙুরের রস হতে পারে তাদের জন্য একমাত্র ওষুধ।
এছাড়া আপনি প্রতিদিনের খাবারের তালিকায় শসা, গাজর রাখতে পারেন। পাশাপাশি লেবুর শরবত এবং কচি ডাবের পানি পান করতে পারেন। যা আপনার শরীর-মন দুটোকেই রাখবে সতেজ। আর ত্বকে ফিরে আসবে তারুণ্য আর লাবণ্য।