ঢাকা ০১:২২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৯ জানুয়ারী ২০২৫, ২৬ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দাবি আদায়ে রাজপথ নয়, খোলা মাঠ বেছে নিন: ডিএমপি কমিশনার

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৬:২৩:৪৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ৮ জানুয়ারী ২০২৫
  • ৩ বার

ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাদ আলী বলেছেন, ‘সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন গোষ্ঠীর সদস্যরা দাবি আদায়ের জন্য রাজপথ দখল করছেন। তারা মনে করেন এটি করলে দাবি আদায় সম্ভব। কিন্তু এটা কোনো সমাধান নয়।’

এ সময় দাবি-দাওয়ার ব্যাপারে খোলা মাঠ কিংবা সভাস্থল বেছে নেওয়ার অনুরোধ জানান ডিএমপি কমিশনার।

আজ বুধবার সকালে ঢাকা ক্লাবে আয়োজিত বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের বার্ষিক সাধারণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

রাজপথ দখলের কারণে ঢাকা শহরের ট্রাফিক পরিস্থিতি ভঙ্গুর হয়ে যায় জানিয়ে ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘বিশেষ করে মিরপুর, এয়ারপোর্ট ও রামপুরা রোডে বেশি সমস্যা দেখা দেয়। জনভোগান্তি সৃষ্টি হয়।’

শেখ মো. সাজ্জাদ আলী বলেন, ‘পুলিশবিহীন একটি সমাজ কেমন হতে পারে তা গত বছরের ৫ আগস্টের পর আমরা দেখেছি। চুরি, ছিনতাই ও ডাকাতি বেড়ে যায়। তবে গত পাঁচ মাসে ওইসব অপরাধ অনেকটা নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়েছি।’

ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘গত বছর ৫ আগস্টের পরে ঢাকা মহানগর পুলিশের মনোবল ভেঙে পড়ার ফলে তাৎক্ষণিক কিছু সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। সেগুলো আমরা কাটিয়ে উঠতে চেষ্টা করে যাচ্ছি।’

তিনি বলেন, ‘বিগত ১৫ বছরে পুলিশ সদস্যরা যেমন আচরণ করেছেন সে আচরণ থেকে আমরা বের হয়ে আসতে চাই। সেজন্য সময়ের প্রয়োজন। আমার সব কর্মকর্তার বিশেষভাবে প্রশিক্ষণের প্রয়োজন। ৪০ হাজার পুলিশ সদস্যকে হঠাৎ করে পরিবর্তন সম্ভব না। তাই আমরা প্রশিক্ষণ শুরু করছি। কোথায় কী পরিমাণ বলপ্রয়োগ করতে হবে, সেই বিষয় আমরা দৃষ্টি রাখছি। যার প্রমাণ ইতোমধ্যে আপনারা পাবেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘ঢাকাবাসীকে নিরাপত্তা দেওয়া আমাদের পবিত্র দায়িত্ব। সেজন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি। ঢাকায় ২ থেকে আড়াই কোটি লোকের বাস। তাদের মধ্যে দরিদ্র, নিম্নবিত্ত ও বেকারের সংখ্যা বেশি। পাশাপাশি নানাবিধ সামাজিক সমস্যা পুলিশের ঘাড়ে এসে পড়ে।’

ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার বলেন, ‘ইদানীং বিভিন্ন গোষ্ঠী ও সম্প্রদায় ছোটখাটো দাবি আদায়ে রাস্তা বেছে নেয়। তারা মনে করে রাস্তা দখলে নিলেই তাদের দাবি আদায় হবে। যার ফলে ঢাকা শহরের ভঙ্গুর ট্রাফিক ব্যবস্থা আরও নাজুক অবস্থায় পড়ে। ফলে ঘণ্টার পর ঘণ্টা রাস্তায় কেটে যায়।’

তিনি বলেন, ‘সম্প্রতি যে অপরাধটি মানুষের মনে শঙ্কার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে সেটি হলো ছিনতাই। এই ছিনতাইয়ের সঙ্গে জড়িত অধিকাংশ অল্পবয়সী মাদকাসক্ত ছেলেরা। ২০ থেকে ২২ বছরের ছেলেরা মাদকের টাকা জোগাড়ে নানা অপরাধের সঙ্গে জড়িত হচ্ছে। এই ছিনতাইয়ের অধিকাংশ হয় বাস ও প্রাইভেটকারে কথা বলার সময়। ছিনতাইকারী থেকে বাঁচতে মোবাইল ও ব্যাগ নিজের নিরাপত্তায় রাখুন। ছিনতাইকারীদের বিরুদ্ধে আমি ব্যাপক সিদ্ধান্ত নিয়েছি। দিনে রাতে টহল বাড়ানোর পাশাপাশি ডিবি পুলিশকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।’

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

দাবি আদায়ে রাজপথ নয়, খোলা মাঠ বেছে নিন: ডিএমপি কমিশনার

আপডেট টাইম : ০৬:২৩:৪৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ৮ জানুয়ারী ২০২৫

ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাদ আলী বলেছেন, ‘সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন গোষ্ঠীর সদস্যরা দাবি আদায়ের জন্য রাজপথ দখল করছেন। তারা মনে করেন এটি করলে দাবি আদায় সম্ভব। কিন্তু এটা কোনো সমাধান নয়।’

এ সময় দাবি-দাওয়ার ব্যাপারে খোলা মাঠ কিংবা সভাস্থল বেছে নেওয়ার অনুরোধ জানান ডিএমপি কমিশনার।

আজ বুধবার সকালে ঢাকা ক্লাবে আয়োজিত বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের বার্ষিক সাধারণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

রাজপথ দখলের কারণে ঢাকা শহরের ট্রাফিক পরিস্থিতি ভঙ্গুর হয়ে যায় জানিয়ে ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘বিশেষ করে মিরপুর, এয়ারপোর্ট ও রামপুরা রোডে বেশি সমস্যা দেখা দেয়। জনভোগান্তি সৃষ্টি হয়।’

শেখ মো. সাজ্জাদ আলী বলেন, ‘পুলিশবিহীন একটি সমাজ কেমন হতে পারে তা গত বছরের ৫ আগস্টের পর আমরা দেখেছি। চুরি, ছিনতাই ও ডাকাতি বেড়ে যায়। তবে গত পাঁচ মাসে ওইসব অপরাধ অনেকটা নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়েছি।’

ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘গত বছর ৫ আগস্টের পরে ঢাকা মহানগর পুলিশের মনোবল ভেঙে পড়ার ফলে তাৎক্ষণিক কিছু সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। সেগুলো আমরা কাটিয়ে উঠতে চেষ্টা করে যাচ্ছি।’

তিনি বলেন, ‘বিগত ১৫ বছরে পুলিশ সদস্যরা যেমন আচরণ করেছেন সে আচরণ থেকে আমরা বের হয়ে আসতে চাই। সেজন্য সময়ের প্রয়োজন। আমার সব কর্মকর্তার বিশেষভাবে প্রশিক্ষণের প্রয়োজন। ৪০ হাজার পুলিশ সদস্যকে হঠাৎ করে পরিবর্তন সম্ভব না। তাই আমরা প্রশিক্ষণ শুরু করছি। কোথায় কী পরিমাণ বলপ্রয়োগ করতে হবে, সেই বিষয় আমরা দৃষ্টি রাখছি। যার প্রমাণ ইতোমধ্যে আপনারা পাবেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘ঢাকাবাসীকে নিরাপত্তা দেওয়া আমাদের পবিত্র দায়িত্ব। সেজন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি। ঢাকায় ২ থেকে আড়াই কোটি লোকের বাস। তাদের মধ্যে দরিদ্র, নিম্নবিত্ত ও বেকারের সংখ্যা বেশি। পাশাপাশি নানাবিধ সামাজিক সমস্যা পুলিশের ঘাড়ে এসে পড়ে।’

ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার বলেন, ‘ইদানীং বিভিন্ন গোষ্ঠী ও সম্প্রদায় ছোটখাটো দাবি আদায়ে রাস্তা বেছে নেয়। তারা মনে করে রাস্তা দখলে নিলেই তাদের দাবি আদায় হবে। যার ফলে ঢাকা শহরের ভঙ্গুর ট্রাফিক ব্যবস্থা আরও নাজুক অবস্থায় পড়ে। ফলে ঘণ্টার পর ঘণ্টা রাস্তায় কেটে যায়।’

তিনি বলেন, ‘সম্প্রতি যে অপরাধটি মানুষের মনে শঙ্কার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে সেটি হলো ছিনতাই। এই ছিনতাইয়ের সঙ্গে জড়িত অধিকাংশ অল্পবয়সী মাদকাসক্ত ছেলেরা। ২০ থেকে ২২ বছরের ছেলেরা মাদকের টাকা জোগাড়ে নানা অপরাধের সঙ্গে জড়িত হচ্ছে। এই ছিনতাইয়ের অধিকাংশ হয় বাস ও প্রাইভেটকারে কথা বলার সময়। ছিনতাইকারী থেকে বাঁচতে মোবাইল ও ব্যাগ নিজের নিরাপত্তায় রাখুন। ছিনতাইকারীদের বিরুদ্ধে আমি ব্যাপক সিদ্ধান্ত নিয়েছি। দিনে রাতে টহল বাড়ানোর পাশাপাশি ডিবি পুলিশকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।’