ঢাকা ০৮:৫৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ০৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ২৬ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বিদ্যুৎ খাত সংস্কারে বছরে বাঁচবে ১৪ হাজার কোটি টাকা

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১০:৪৩:২৭ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৫ ডিসেম্বর ২০২৪
  • ১৭ বার

বিদ্যুৎ খাতে মূল সমস্যাগুলোর সমাধান করলে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিপিডিবি) বছরে প্রায় ১৪ হাজার (১২০ কোটি মার্কিন ডলার) কোটি টাকা সাশ্রয় হতে পারে। বর্তমানে এই পরিমাণ অর্থ সরকারি ভর্তুকির মাধ্যমে ব্যয় হয়। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক জ্বালানি গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইনস্টিটিউট ফর এনার্জি ইকোনমিকস অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল অ্যানালাইসিসের (আইইইএফএ) এক নতুন গবেষণা প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

প্রতিবেদনে খাত উল্লেখ বলা হয়, বাংলাদেশে বিদ্যমান ক্যাপটিভ জেনারেটরের (নিজস্ব বিদ্যুৎ উৎপাদন অবকাঠামো) মাধ্যমে পূরণ করা বিদ্যুতের অর্ধেক চাহিদা জাতীয় গ্রিডে স্থানান্তর, ৩ হাজার মেগাওয়াট নবায়নযোগ্য জ্বালানির জোগান এবং ২০২৩-২৪ অর্থবছরের তুলনায় লোডশেডিং ৫ শতাংশে নামিয়ে আনার পাশাপাশি, বিদ্যুৎ সঞ্চালন ও বিতরণে ক্ষতি ৮ শতাংশে সীমাবদ্ধ রাখতে পারলে বিদ্যুৎ খাতে ১৪ হাজার কোটি টাকা সাশ্রয় করা সম্ভব।

আইইইএফএ’র প্রতিবেদক এবং বাংলাদেশের জ্বালানিবিষয়ক প্রধান বিশ্লেষক শফিকুল আলম বলেন, বাংলাদেশের বিদ্যুৎ খাতের রিজার্ভ মার্জিন (কোনো একটি নির্দিষ্ট অবকাঠামোর সক্ষমতার যে পরিমাণ অব্যবহৃত থাকে) বর্তমানে ৬১ দশমিক ৩ শতাংশের আশপাশে, যা অতিরিক্ত সক্ষমতা সমস্যার ইঙ্গিত দেয় এবং পিডিবির ভর্তুকি নির্ভরতার একটি প্রধান কারণ এটি।

প্রতিবেদনে বলা হয় ২০১৯-২০ থেকে ২০২৩-২৪ অর্থবছর পর্যন্ত পিডিবির বার্ষিক মোট ব্যয় ২ দশমিক ৬ গুণ বেড়েছে, যেখানে রাজস্ব প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১ দশমিক ৮ গুণ। বিদ্যুৎব্যবস্থা সচল রাখতে সরকার মোট ১ লাখ ২৬ হাজার ৭০০ কোটি টাকা

ভর্তুকি দিয়েছে। তবু এই সময়ে পিডিবির ক্ষতি হয়েছে ২৩ হাজার ৬৪২ কোটি টাকা। বাংলাদেশ সরকার কেবল ২০২৩-২৪ অর্থবছরেই বিপিডিবিকে ৩৮ হাজার ২৮৯ কোটি টাকা ভর্তুকি দিয়েছে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ২০২৩ সালের জুলাইয়ে প্রকাশিত সমন্বিত জ্বালানি ও বিদ্যুৎ মহাপরিকল্পনা (আইইপিএমপি) অনুযায়ী ২০৩০ সালে দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ চাহিদার সম্ভাব্য পরিমাণ হতে পারে ২৭ হাজার ১৩৮ মেগাওয়াট থেকে ২৯ হাজার ১৫৬ মেগাওয়াটের মধ্যে। তবে আইইইএফএ’র হিসাব অনুসারে, ২০৩০ সালে দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ চাহিদা হবে ২৫ হাজার ৮৩৪ মেগাওয়াট। অর্থাৎ, আইইইএফএ’র হিসাবে চাহিদা সরকারি হিসাবের চেয়ে একটু কম হবে

সংস্থাটি বলেছে, জীবাশ্ম (মূলত কয়লাভিত্তিক) জ্বালানিভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে বিনিয়োগ বন্ধ রাখা এবং মোট বিদ্যুৎ উৎপাদনে তেলচালিত কেন্দ্রের ব্যবহার ৫ শতাংশে সীমাবদ্ধ রাখা, এবং ৪ হাজার ৫০০ মেগাওয়াট জীবাশ্ম জ্বালানিভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের কার্যক্রম বন্ধ করা হয়, তবে ২০৩০ সালে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা হবে ৩৫ হাজার ২৩৯ মেগাওয়াট, যা থেকে সে বছরের সম্ভাব্য সর্বোচ্চ চাহিদা (২৫ হাজার ৮৩৪ মেগাওয়াট) পূরণ করতে সহায়ক হবে। এর ফলে ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে যে রিজার্ভ মার্জিন আছে ৬৬ দশমিক ১ শতাংশে, ২০৩০ সালে তা ৩৬ দশমিক ৪ শতাংশে নেমে আসবে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

বিদ্যুৎ খাত সংস্কারে বছরে বাঁচবে ১৪ হাজার কোটি টাকা

আপডেট টাইম : ১০:৪৩:২৭ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৫ ডিসেম্বর ২০২৪

বিদ্যুৎ খাতে মূল সমস্যাগুলোর সমাধান করলে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিপিডিবি) বছরে প্রায় ১৪ হাজার (১২০ কোটি মার্কিন ডলার) কোটি টাকা সাশ্রয় হতে পারে। বর্তমানে এই পরিমাণ অর্থ সরকারি ভর্তুকির মাধ্যমে ব্যয় হয়। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক জ্বালানি গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইনস্টিটিউট ফর এনার্জি ইকোনমিকস অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল অ্যানালাইসিসের (আইইইএফএ) এক নতুন গবেষণা প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

প্রতিবেদনে খাত উল্লেখ বলা হয়, বাংলাদেশে বিদ্যমান ক্যাপটিভ জেনারেটরের (নিজস্ব বিদ্যুৎ উৎপাদন অবকাঠামো) মাধ্যমে পূরণ করা বিদ্যুতের অর্ধেক চাহিদা জাতীয় গ্রিডে স্থানান্তর, ৩ হাজার মেগাওয়াট নবায়নযোগ্য জ্বালানির জোগান এবং ২০২৩-২৪ অর্থবছরের তুলনায় লোডশেডিং ৫ শতাংশে নামিয়ে আনার পাশাপাশি, বিদ্যুৎ সঞ্চালন ও বিতরণে ক্ষতি ৮ শতাংশে সীমাবদ্ধ রাখতে পারলে বিদ্যুৎ খাতে ১৪ হাজার কোটি টাকা সাশ্রয় করা সম্ভব।

আইইইএফএ’র প্রতিবেদক এবং বাংলাদেশের জ্বালানিবিষয়ক প্রধান বিশ্লেষক শফিকুল আলম বলেন, বাংলাদেশের বিদ্যুৎ খাতের রিজার্ভ মার্জিন (কোনো একটি নির্দিষ্ট অবকাঠামোর সক্ষমতার যে পরিমাণ অব্যবহৃত থাকে) বর্তমানে ৬১ দশমিক ৩ শতাংশের আশপাশে, যা অতিরিক্ত সক্ষমতা সমস্যার ইঙ্গিত দেয় এবং পিডিবির ভর্তুকি নির্ভরতার একটি প্রধান কারণ এটি।

প্রতিবেদনে বলা হয় ২০১৯-২০ থেকে ২০২৩-২৪ অর্থবছর পর্যন্ত পিডিবির বার্ষিক মোট ব্যয় ২ দশমিক ৬ গুণ বেড়েছে, যেখানে রাজস্ব প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১ দশমিক ৮ গুণ। বিদ্যুৎব্যবস্থা সচল রাখতে সরকার মোট ১ লাখ ২৬ হাজার ৭০০ কোটি টাকা

ভর্তুকি দিয়েছে। তবু এই সময়ে পিডিবির ক্ষতি হয়েছে ২৩ হাজার ৬৪২ কোটি টাকা। বাংলাদেশ সরকার কেবল ২০২৩-২৪ অর্থবছরেই বিপিডিবিকে ৩৮ হাজার ২৮৯ কোটি টাকা ভর্তুকি দিয়েছে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ২০২৩ সালের জুলাইয়ে প্রকাশিত সমন্বিত জ্বালানি ও বিদ্যুৎ মহাপরিকল্পনা (আইইপিএমপি) অনুযায়ী ২০৩০ সালে দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ চাহিদার সম্ভাব্য পরিমাণ হতে পারে ২৭ হাজার ১৩৮ মেগাওয়াট থেকে ২৯ হাজার ১৫৬ মেগাওয়াটের মধ্যে। তবে আইইইএফএ’র হিসাব অনুসারে, ২০৩০ সালে দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ চাহিদা হবে ২৫ হাজার ৮৩৪ মেগাওয়াট। অর্থাৎ, আইইইএফএ’র হিসাবে চাহিদা সরকারি হিসাবের চেয়ে একটু কম হবে

সংস্থাটি বলেছে, জীবাশ্ম (মূলত কয়লাভিত্তিক) জ্বালানিভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে বিনিয়োগ বন্ধ রাখা এবং মোট বিদ্যুৎ উৎপাদনে তেলচালিত কেন্দ্রের ব্যবহার ৫ শতাংশে সীমাবদ্ধ রাখা, এবং ৪ হাজার ৫০০ মেগাওয়াট জীবাশ্ম জ্বালানিভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের কার্যক্রম বন্ধ করা হয়, তবে ২০৩০ সালে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা হবে ৩৫ হাজার ২৩৯ মেগাওয়াট, যা থেকে সে বছরের সম্ভাব্য সর্বোচ্চ চাহিদা (২৫ হাজার ৮৩৪ মেগাওয়াট) পূরণ করতে সহায়ক হবে। এর ফলে ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে যে রিজার্ভ মার্জিন আছে ৬৬ দশমিক ১ শতাংশে, ২০৩০ সালে তা ৩৬ দশমিক ৪ শতাংশে নেমে আসবে।