আমাদের প্রায় সকলেই কমবেশি কর্মস্থলে অবসাদের শিকার হয়ে থাকি। কারণ আমাদের বেশিরভাগই এমন কোনো ধ্যানমগ্ন প্রতিভাবান নই যে চারপাশের ঘটনাপ্রবাহে প্রভাবিত হওয়া থেকে বেঁচে থাকতো পারবো।
গতানুগতিক যে কোনো কর্মস্থলেই প্রতিদিন কাজের চাপ বেড়েই চলে। এর উপর রয়েছে অফিস রাজনীতি, ক্যান্টিনের বিস্বাদ খাবারের হ্যাপা আর সর্বোপরি সব সময় ঘাড়ের উপর গরম নিঃশ্বাস ফেলা সর্বময় কর্তৃত্ববাদি ও জ্বালাতনকারী বস!
এমন পরিস্থিতিতে করণীয়টা কী? কীভাবে এই পরিস্থিতির মোকাবেলা করবেন? সকাল দশটা থেকে শুরু করে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্তই যদি আপনার অস্তিত্বের উপর ভর করে থাকে এই পরিস্থিতি, তাহলে মনোযোগ দিয়ে শুনুন- কর্মস্থলের অবসাদ মোকাবেলায় আপনার জন্য রইল ছয়টি টিপস।
শান্ত থাকুন: যখন কর্মস্থল আপনার ঘাড়ে চেপে বসে তখন একটু বিরতি নিন। কারো সঙ্গে একটু আলাপচারিতায় মেতে উঠুন বা গান শুনুন অথবা ছোট্ট একটি দিবানিদ্রাও দিয়ে নিতে পারেন। মনকে সকল সমস্যা থেকে একটু স্বস্তি দিন। এতে আপনি আরো স্পষ্ট করে ভাবতে পারবেন। যার ফলে সবকিছু নতুন করে দেখা ও নতুন নতুন আইডিয়াও উদ্ভাবন করতে পারবেন।
কফি এড়িয়ে চলুন: কাজের ফাঁকে মাঝে-মধ্যেই বিরতি নিন। তবে বিরতিতে যেন কফি পান করবেন না। কফি পানে আপনার মানসিক চাপ আরো বেড়ে যাবে। কফিতে থাকা ক্যাফেইন আপনার মানসিক অস্বস্তি আরো বাড়িয়ে দিবে।
যৌক্তিক হউন: রাগ বা মানসিক অবসাদের নিশ্চয়ই একটা উৎস আছে। ফলে ওই উৎসটা কী সেটা বুঝার চেষ্টা করা এবং যৌক্তিকভাবে তার সমাধানে এগিয়ে যাওয়াটাই রাগ ও অবসাদমুক্তির সর্বোত্তম পন্থা।
ধ্যান করুন: কাজের টেবিল থেকে ওঠার সুযোগ পেলেই একটু হেঁটে আসুন বা নির্জনে বসে ধ্যানমগ্ন হয়ে পড়ুন। মাথা থেকে কাজসংশ্লিষ্ট সব চিন্তা বের করে দিন। এতে মুহূর্তেই আপনার সকল অবসাদ দূর হয়ে যাবে। এছাড়া সামান্য যোগ ব্যায়াম করতে পারলেও আপনি মানসিক ও শারীরিকভাবে সুস্থ থাকতে পারবেন।
পেশাগত ও ব্যক্তিগত জীবন আলাদা রাখুন: কর্মস্থলের অবসাদ আপনার ব্যক্তিগত জীবনকে যেমন ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে তেমনি আপনার ব্যাক্তিগত জীবনও কর্মজীবনকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। সূতরাং এ দুটোর মধ্যে একটি পরিষ্কার ভেদ রেখা টেনে নিন। আর ওই পর্থক্যটা সবসময়ই বজায় রাখার চেষ্টা করুন।
নেতিবাচক সহকর্মীদের এড়িয়ে চলুন: নেতিবাচক সহকর্মীদের এড়িয়ে চলুন। দৃঢ়চেতা হউন; তবে কর্তৃত্ব ফলাতে যাবেন না। এরপরও যদি তারা আপনার পেছনে লেগে থাকে তাহলে ঠাণ্ডা মাথায় তাদের কথা মনোযোগ দিয়ে শুনুন এবং কোনো প্রতিউত্তর দেওয়ার ক্ষেত্রে কৌশল অবলম্বন করুন। ভদ্রতার সঙ্গে কথা বলুন এবং অন্যকে সম্মান করতে শিখুন। আর, না বলতে শিখুন; নয়তো অন্যরা সবসময়ই আপনার ঘাড়ে তাদের কাজ চাপিয়ে দিয়ে পগার পার হতে চাইবে!
আর মনে রাখবেন কখনোই কোনো কিছু নিয়ে অতিরিক্ত জেদাজেদি করবেন না।