ঢাকা ০৫:৫২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১০ জানুয়ারী ২০২৫, ২৭ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

গুলিতে নিহত ইমরান মাকে বলেছিলেন, ‘দেশ স্বাধীন হবেই

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১১:৪৫:৩২ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৭ অগাস্ট ২০২৪
  • ৩৯ বার

কোটা সংস্কার অন্দোলনে সহিংসতায় পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছেন পটুয়াখালীর মো. ইমরান হোসেন (১৮)।

শনিবার (১৭ আগস্ট) ঢাকার মীরহাজির বাগে ইমরানের ভাড়া বাসায় গিয়ে দেখা যায়, এখনও শোক কাটিয়ে উঠতে পারেননি তার পরিবার। অঝোরে কাঁদছেন মা নাজনীন বেগম।

তিনি বলেন, ঘটনার দিন বাসা থেকে বের হওয়ার আগে ইমরান আমাকে বলেছিল, ‘মা দেশ কিন্তু স্বাধীন হবেই, প্রয়োজনে ছাত্রসমাজের জন্য শহীদ হবো।’ আমি শত নিষেধ করলেও সে আমার কথা শোনেনি।

ইমরানের বাবা কবির হোসেন জোমাদ্দার বলেন, ‘আমার এই ছেলেটা (ইমরান) দেশপ্রেমিক ছিল। দেশের জন্য পুলিশের গুলিতে শহীদ হয়েছে। এই দুনিয়াতে আমার ছেলের হত্যার বিচার হবে কি না আমি জানি না। আমি আল্লাহ্ কাছে বিচার দিছি।’

জানা গেছে, মো. ইমরান হোসেনের বাড়ি পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নের উত্তর বড় ডালিমা গ্রামে। দশম শ্রেণিতে লেখাপড়ার পর অভাবের কারণে আর লেখাপড়া সম্ভব হয়নি। ইমরান ঢাকার বায়তুল মোকারম মার্কেটে কার্পেটের একটি দোকানে চাকরি করতেন। ঢাকার মীরহাজির বাগ পরিবারের সঙ্গে বসবাস করতেন তিনি। গত ৫ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে উত্তপ্ত হয় পুরো ঢাকা। এ সময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে রাবার বুলেট, টিয়ারশেল ও গুলি বর্ষণ করে পুলিশ।

যাত্রাবাড়ি এলাকায় বেলা ১১টার দিকে পুলিশের একটি গুলি এসে ইমরানের গলায় লাগে। ইমরানের মা মোবাইল ফোনে কল করলে একজন রিসিভ করে জানান, ইমরানের গুলি লেগেছে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছে। তিনি হাসপাতালে গিয়ে জানতে পারেন ইমরান মারা গেছেন। ওই দিন রাত ১১টার দিকে ইমরানের মরদেহ গ্রামের বাড়ি পটুয়াখালী বাউফলে নিয়ে যাওয়া হয়। পরের দিন ৬ আগস্ট সকাল ১০টার দিকে জানাজা শেষে জোমাদ্দার বাড়ি মসজিদের পাশে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। ৯ আগস্ট পরিবারের সবাই ঢাকায় ফিরে আসেন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

গুলিতে নিহত ইমরান মাকে বলেছিলেন, ‘দেশ স্বাধীন হবেই

আপডেট টাইম : ১১:৪৫:৩২ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৭ অগাস্ট ২০২৪

কোটা সংস্কার অন্দোলনে সহিংসতায় পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছেন পটুয়াখালীর মো. ইমরান হোসেন (১৮)।

শনিবার (১৭ আগস্ট) ঢাকার মীরহাজির বাগে ইমরানের ভাড়া বাসায় গিয়ে দেখা যায়, এখনও শোক কাটিয়ে উঠতে পারেননি তার পরিবার। অঝোরে কাঁদছেন মা নাজনীন বেগম।

তিনি বলেন, ঘটনার দিন বাসা থেকে বের হওয়ার আগে ইমরান আমাকে বলেছিল, ‘মা দেশ কিন্তু স্বাধীন হবেই, প্রয়োজনে ছাত্রসমাজের জন্য শহীদ হবো।’ আমি শত নিষেধ করলেও সে আমার কথা শোনেনি।

ইমরানের বাবা কবির হোসেন জোমাদ্দার বলেন, ‘আমার এই ছেলেটা (ইমরান) দেশপ্রেমিক ছিল। দেশের জন্য পুলিশের গুলিতে শহীদ হয়েছে। এই দুনিয়াতে আমার ছেলের হত্যার বিচার হবে কি না আমি জানি না। আমি আল্লাহ্ কাছে বিচার দিছি।’

জানা গেছে, মো. ইমরান হোসেনের বাড়ি পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নের উত্তর বড় ডালিমা গ্রামে। দশম শ্রেণিতে লেখাপড়ার পর অভাবের কারণে আর লেখাপড়া সম্ভব হয়নি। ইমরান ঢাকার বায়তুল মোকারম মার্কেটে কার্পেটের একটি দোকানে চাকরি করতেন। ঢাকার মীরহাজির বাগ পরিবারের সঙ্গে বসবাস করতেন তিনি। গত ৫ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে উত্তপ্ত হয় পুরো ঢাকা। এ সময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে রাবার বুলেট, টিয়ারশেল ও গুলি বর্ষণ করে পুলিশ।

যাত্রাবাড়ি এলাকায় বেলা ১১টার দিকে পুলিশের একটি গুলি এসে ইমরানের গলায় লাগে। ইমরানের মা মোবাইল ফোনে কল করলে একজন রিসিভ করে জানান, ইমরানের গুলি লেগেছে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছে। তিনি হাসপাতালে গিয়ে জানতে পারেন ইমরান মারা গেছেন। ওই দিন রাত ১১টার দিকে ইমরানের মরদেহ গ্রামের বাড়ি পটুয়াখালী বাউফলে নিয়ে যাওয়া হয়। পরের দিন ৬ আগস্ট সকাল ১০টার দিকে জানাজা শেষে জোমাদ্দার বাড়ি মসজিদের পাশে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। ৯ আগস্ট পরিবারের সবাই ঢাকায় ফিরে আসেন।