ঢাকা ০৯:২১ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১০ জানুয়ারী ২০২৫, ২৭ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
ফেক ছবি শনাক্তে হোয়াটসঅ্যাপের নতুন ফিচার ফ্যাসিস্ট হাসিনার দোসর শামীম ওসমানের দাঁড়ি-গোফ যুক্ত ছবি ভাইরাল, যা বলছে ফ্যাক্টচেক ঢাকায় যানজট নিরসনে দ্রুত পদক্ষেপের নির্দেশ দিলেন প্রধান উপদেষ্টা চার-ছক্কা হাঁকানো ভুলে যাননি সাব্বির হজযাত্রীর সর্বনিম্ন কোটা নির্ধারণে মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্টতা নেই : ধর্ম উপদেষ্টা একাত্তরের ভূমিকার জন্য ক্ষমা না চেয়ে জামায়াত উল্টো জাস্টিফাই করছে: মেজর হাফিজ ‘আল্লাহকে ধন্যবাদ’ পিএইচডি করে ১৯ সন্তানের মা শমী কায়সারের ব্যাংক হিসাব তলব আগামী মাসের মধ্যে পাঠ্যপুস্তক সবাই হাতে পাবে : প্রেস সচিব নিক্কেই এশিয়াকে ড. মুহাম্মদ ইউনূস তিন মেয়াদে ভুয়া নির্বাচন মঞ্চস্থ করেছেন হাসিনা

উদ্বোধনের অপেক্ষায় দেশের দ্বিতীয় মেরিটাইম ইনস্টিটিউট

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১২:০৮:০৯ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৩
  • ৭৯ বার

বাংলাদেশে মেরিনদের প্রশিক্ষণে কাজ করা এবং গবেষণা পরিচালনা করা একমাত্র রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন গবেষণা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হলো ন্যাশনাল মেরিটাইম ইনস্টিটিউট, চট্টগ্রাম। বাংলাদেশ ও জাপান সরকারের সহযোগিতায় ১৯৯৪ সালে ইনস্টিটিউটির স্থায়ী ক্যাম্পাস প্রতিষ্ঠিত হয়। ইনস্টিটিউটটি নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ। এটি বাংলাদেশে প্রথম রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান যা বাংলাদেশের সামুদ্রিক শিক্ষা প্রদান করে। তবে প্রতিবছর ৬০০ নাবিক-ক্রুকে প্রশিক্ষণ দিতে এবং পায়রা-মংলা সমুদ্রবন্দরহ দেশি-বিদেশি জাহাজে দক্ষ নাবিক-ক্রু তৈরী করতে চট্টগ্রামের পর মাদারীপুরে নির্মাণ করা হয়েছে দেশের দ্বিতীয় ও সর্ববৃহৎ ন্যাশনাল মেরিটাইম ইনস্টিটিউট। দক্ষিণাঞ্চলের মধ্যাঞ্চল মাদারীপুর হওয়ায় সরাসরি কয়েকটি জেলার মানুষ এ সুবিধা পাওয়ার লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠানটি এখানে নির্মাণ করেছে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়। ৬২ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত প্রতিষ্ঠানটি চালু হলে প্রতিবছর ৬শ’ বেকার যুবক-যুবতি প্রশিক্ষণ নিতে পারবেন। রয়েছে সরকারিভাবে দেশি-বিদেশি জাহাজে চাকুরির সুযোগও। এরইমধ্যে শতভাগ কাজ শেষও হয়েছে। এখন শুধু উদ্বোধনের অপেক্ষা। জানা যায়, দক্ষিণাঞ্চলের পুটয়াখালীর পায়রা ও বাগেরহাটের মংলা সমুদ্রবন্দরসহ দেশি-বিদেশি জাহাজে দক্ষ নাবিক ও ক্রু তৈরীর লক্ষ্যে মাদারীপুরে নির্মাণ করা হয়েছে ন্যাশনাল মেরিটাইম ইনস্টিটিউট। সদর উপজেলার দুধখালী ইউনিয়নের এওজ গ্রামে ৬ তলাবিশিষ্ট ভবনটি নির্মাণেব্যয় করা হয়েছে ৬২ কোটি টাকা। ২০১৮ সালের অক্টোবরে ৮টি প্রকল্পে শুরু হওয়া কাজ শেষ হয় ২০২২ সালের ডিসেম্বরে। এরমধ্যে বিদ্যুৎ স্টেশন, ফায়ার ফাইটিং ব্লক নির্মাণ, লাইফ বোট জেটি, প্রশিক্ষণ পুকুর, এলটি ফিডার কেবল, সোলার প্যানেল, মসজিদ, শহীদ মিনার নির্মাণসহ একাধিক কাজ রয়েছে। প্রতিবছর দুটি ব্যাচে এখান থেকে প্রশিক্ষণ দিতে পারবেন ৬শ’ বেকার যুবক-যুবতী। হবে বহু মানুষের কর্মসংস্থান, সেই অপেক্ষায় এলাকাবাসী। স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, আমাদের এলাকায় এত সুন্দর একটি প্রতিষ্ঠান হয়েছে যা কল্পনার বাহির ছিল। এটা চালু হলে শুধু এ এলাকাই নয়, দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের ব্যাপক আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন হবে। আমরা চাই এটি দ্রুত চালু হোক। তারা বলেন, এটি চালু হলে এ এলাকা ও তার আশপাশের বেকাররা প্রশিক্ষণ নিয়ে কাজ করতে পারবে। এটি বেকারত্ব দূর হবে, পাশাপাশি বিদেশের জাহাজে চাকুরী করতে পারলে দেশের রেমিট্যান্সও বাড়বে। এটি চালু দ্রতু করার দাবি জানাচ্ছি। বাস্তবায়নকারী কর্তৃপক্ষ গণপূর্ত অধিদপ্তরের মাদারীপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. কামরুল ইসলাম জানান, আধুনিক সব সুযোগ-সুবিধা সম্পন্ন ন্যাশনাল মেরিটাইম ইনস্টিটিউট’টির সব কাজ শেষ হয়েছে। এখন শুধু উদ্বোধনের অপেক্ষায়। ন্যাশনাল মেরিটাইম ইনস্টিটিউট-এর ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ক্যাপ্টেন মো. আতাউর রহমান জানান, এনএমআই’টি চালুর লক্ষ্যে অধ্যক্ষ, উপাধ্যাক্ষ, বিভাগীয় প্রধান, হিসাবরক্ষকসহ ৭৩টি ক্যাটাগরিতে মোট ১৮৭ জন জনবলের আবেদন চেয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রনাণয়ে চিঠি দিয়েছে নৌপরিবহন মন্ত্রনালয়। এটি দেশের দ্বিতীয় ও সর্ববৃহৎ এ প্রষ্ঠিান। চালু হলে একদিকে এলাকার অর্থনৈতিক উন্নয়ন হবে। অন্যদিকে দেশের রেমিট্যান্স বাড়াতে কাজ করবে। সাবেক নৌপরিবহন মন্ত্রী ও মাদারীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য শাজাহান খান জানান, প্রশিক্ষণ শেষে যুবক-যুবতীদের দেশি-বিদেশি জাহাজে কাজের সুযোগ করে দিবে সরকার। প্রতিষ্ঠানটিতে আবাসিক ও অনাবাসিক এ দুই ধরনের’ই সুবিধা রয়েছে। শাজাহান খান বলেন, দেশ-বিদেশে কর্মরত নাবিক ও ক্রুদের প্রশিক্ষণ দিতে ৭৬ কোটি টাকা ব্যয়ে মাদারীপুর ন্যাশনাল মেরিটাইম ইনস্টিটিউট নির্মাণ করা হয়েছে। প্রতিবছর দুটি দলে ৬০০ শিক্ষার্থী প্রতিষ্ঠানটিতে ভর্তি হতে পারবেন। যাঁরা বিদেশে জাহাজে চাকরি করেন, তাঁরা ১০ বছর চাকরি করলে ১০ কোটি টাকা দেশে আনতে পারেন। এখান থেকে যাঁরা প্রশিক্ষণ নেবেন, তাঁরা ভালো আয় করবেন। প্রশিক্ষণার্থীর জন্য থাকা-খাওয়াসহ খেলাধুলার সুব্যবস্থা আছে প্রতিষ্ঠানটিতে। শাজাহান খান আরও বলেন, যাঁরা এ প্রতিষ্ঠানে প্রশিক্ষণ নেবেন, তাঁদের চাকরির কোনো সমস্যা হবে না। তাঁরা কেউ বেকার থাকবেন না। এ খাতে প্রচুর চাহিদা আছে। এ প্রতিষ্ঠানের ফলে অবহেলিত দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটবে বলে তিনি আশাবাদী।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

ফেক ছবি শনাক্তে হোয়াটসঅ্যাপের নতুন ফিচার

উদ্বোধনের অপেক্ষায় দেশের দ্বিতীয় মেরিটাইম ইনস্টিটিউট

আপডেট টাইম : ১২:০৮:০৯ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৩

বাংলাদেশে মেরিনদের প্রশিক্ষণে কাজ করা এবং গবেষণা পরিচালনা করা একমাত্র রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন গবেষণা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হলো ন্যাশনাল মেরিটাইম ইনস্টিটিউট, চট্টগ্রাম। বাংলাদেশ ও জাপান সরকারের সহযোগিতায় ১৯৯৪ সালে ইনস্টিটিউটির স্থায়ী ক্যাম্পাস প্রতিষ্ঠিত হয়। ইনস্টিটিউটটি নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ। এটি বাংলাদেশে প্রথম রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান যা বাংলাদেশের সামুদ্রিক শিক্ষা প্রদান করে। তবে প্রতিবছর ৬০০ নাবিক-ক্রুকে প্রশিক্ষণ দিতে এবং পায়রা-মংলা সমুদ্রবন্দরহ দেশি-বিদেশি জাহাজে দক্ষ নাবিক-ক্রু তৈরী করতে চট্টগ্রামের পর মাদারীপুরে নির্মাণ করা হয়েছে দেশের দ্বিতীয় ও সর্ববৃহৎ ন্যাশনাল মেরিটাইম ইনস্টিটিউট। দক্ষিণাঞ্চলের মধ্যাঞ্চল মাদারীপুর হওয়ায় সরাসরি কয়েকটি জেলার মানুষ এ সুবিধা পাওয়ার লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠানটি এখানে নির্মাণ করেছে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়। ৬২ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত প্রতিষ্ঠানটি চালু হলে প্রতিবছর ৬শ’ বেকার যুবক-যুবতি প্রশিক্ষণ নিতে পারবেন। রয়েছে সরকারিভাবে দেশি-বিদেশি জাহাজে চাকুরির সুযোগও। এরইমধ্যে শতভাগ কাজ শেষও হয়েছে। এখন শুধু উদ্বোধনের অপেক্ষা। জানা যায়, দক্ষিণাঞ্চলের পুটয়াখালীর পায়রা ও বাগেরহাটের মংলা সমুদ্রবন্দরসহ দেশি-বিদেশি জাহাজে দক্ষ নাবিক ও ক্রু তৈরীর লক্ষ্যে মাদারীপুরে নির্মাণ করা হয়েছে ন্যাশনাল মেরিটাইম ইনস্টিটিউট। সদর উপজেলার দুধখালী ইউনিয়নের এওজ গ্রামে ৬ তলাবিশিষ্ট ভবনটি নির্মাণেব্যয় করা হয়েছে ৬২ কোটি টাকা। ২০১৮ সালের অক্টোবরে ৮টি প্রকল্পে শুরু হওয়া কাজ শেষ হয় ২০২২ সালের ডিসেম্বরে। এরমধ্যে বিদ্যুৎ স্টেশন, ফায়ার ফাইটিং ব্লক নির্মাণ, লাইফ বোট জেটি, প্রশিক্ষণ পুকুর, এলটি ফিডার কেবল, সোলার প্যানেল, মসজিদ, শহীদ মিনার নির্মাণসহ একাধিক কাজ রয়েছে। প্রতিবছর দুটি ব্যাচে এখান থেকে প্রশিক্ষণ দিতে পারবেন ৬শ’ বেকার যুবক-যুবতী। হবে বহু মানুষের কর্মসংস্থান, সেই অপেক্ষায় এলাকাবাসী। স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, আমাদের এলাকায় এত সুন্দর একটি প্রতিষ্ঠান হয়েছে যা কল্পনার বাহির ছিল। এটা চালু হলে শুধু এ এলাকাই নয়, দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের ব্যাপক আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন হবে। আমরা চাই এটি দ্রুত চালু হোক। তারা বলেন, এটি চালু হলে এ এলাকা ও তার আশপাশের বেকাররা প্রশিক্ষণ নিয়ে কাজ করতে পারবে। এটি বেকারত্ব দূর হবে, পাশাপাশি বিদেশের জাহাজে চাকুরী করতে পারলে দেশের রেমিট্যান্সও বাড়বে। এটি চালু দ্রতু করার দাবি জানাচ্ছি। বাস্তবায়নকারী কর্তৃপক্ষ গণপূর্ত অধিদপ্তরের মাদারীপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. কামরুল ইসলাম জানান, আধুনিক সব সুযোগ-সুবিধা সম্পন্ন ন্যাশনাল মেরিটাইম ইনস্টিটিউট’টির সব কাজ শেষ হয়েছে। এখন শুধু উদ্বোধনের অপেক্ষায়। ন্যাশনাল মেরিটাইম ইনস্টিটিউট-এর ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ক্যাপ্টেন মো. আতাউর রহমান জানান, এনএমআই’টি চালুর লক্ষ্যে অধ্যক্ষ, উপাধ্যাক্ষ, বিভাগীয় প্রধান, হিসাবরক্ষকসহ ৭৩টি ক্যাটাগরিতে মোট ১৮৭ জন জনবলের আবেদন চেয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রনাণয়ে চিঠি দিয়েছে নৌপরিবহন মন্ত্রনালয়। এটি দেশের দ্বিতীয় ও সর্ববৃহৎ এ প্রষ্ঠিান। চালু হলে একদিকে এলাকার অর্থনৈতিক উন্নয়ন হবে। অন্যদিকে দেশের রেমিট্যান্স বাড়াতে কাজ করবে। সাবেক নৌপরিবহন মন্ত্রী ও মাদারীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য শাজাহান খান জানান, প্রশিক্ষণ শেষে যুবক-যুবতীদের দেশি-বিদেশি জাহাজে কাজের সুযোগ করে দিবে সরকার। প্রতিষ্ঠানটিতে আবাসিক ও অনাবাসিক এ দুই ধরনের’ই সুবিধা রয়েছে। শাজাহান খান বলেন, দেশ-বিদেশে কর্মরত নাবিক ও ক্রুদের প্রশিক্ষণ দিতে ৭৬ কোটি টাকা ব্যয়ে মাদারীপুর ন্যাশনাল মেরিটাইম ইনস্টিটিউট নির্মাণ করা হয়েছে। প্রতিবছর দুটি দলে ৬০০ শিক্ষার্থী প্রতিষ্ঠানটিতে ভর্তি হতে পারবেন। যাঁরা বিদেশে জাহাজে চাকরি করেন, তাঁরা ১০ বছর চাকরি করলে ১০ কোটি টাকা দেশে আনতে পারেন। এখান থেকে যাঁরা প্রশিক্ষণ নেবেন, তাঁরা ভালো আয় করবেন। প্রশিক্ষণার্থীর জন্য থাকা-খাওয়াসহ খেলাধুলার সুব্যবস্থা আছে প্রতিষ্ঠানটিতে। শাজাহান খান আরও বলেন, যাঁরা এ প্রতিষ্ঠানে প্রশিক্ষণ নেবেন, তাঁদের চাকরির কোনো সমস্যা হবে না। তাঁরা কেউ বেকার থাকবেন না। এ খাতে প্রচুর চাহিদা আছে। এ প্রতিষ্ঠানের ফলে অবহেলিত দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটবে বলে তিনি আশাবাদী।