উপজেলা নির্বাচন সংরক্ষিত আসনে ৩৫২ জন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত

চুতর্থ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে সংরক্ষিত নারী আসনে ৩৫২ জন প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। যা মোট আসনের এক তৃতীয়াংশেরও বেশি।

নির্বাচন কমিশন (ইসি) সূত্রগুলো জান‍ায়, আগামী ১৫ জুন দেশের ৪৮১টি উপজেলায় সংরিক্ষত নারী আসনে নির্বাচন হওয়ার কথা ছিলো। এসব উপজেলায় মোট আসন সংখ্যা ১ হাজার ২৬৬টি। যার মধ্যে ৩৫২টি আসনে কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী পাওয়া যায়নি। ফলে ৩৫২ জন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। যা মোট আসনের এক-তৃতীয়াংশের বেশি।

এদিকে ১৩টি আসনে কোনো প্রার্থীই পাওয়ায় যায়নি। ফলে এসব আসনে পুনরায় তফসিল ঘোষণা করতে হবে ইসিকে। এছাড়া ৯০১ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। যেখানে প্রার্থী রয়েছে মোট ২ হাজার ৫শ ৬৩ জন। ভোট দেবেন ১১ হাজার ৩৫৪ জন। যারা ইউনিয়ন ও পৌরসভার সংরক্ষিত আসনের নারী জনপ্রতিনিধি।

আইন অনুযায়ী, কোনো উপজেলার নারী আসন সংখ্যা, সংশ্লিষ্ট উপজেলার পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদগুলোর নারী সদস্য সংখ্যার এক-তৃতীয়াংশের সমান। এসব নারী সদস্যরা তাদের ভোটেই নির্বাচিত হবেন।

ইসির সহাকারী সচিব আশফাকুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, প্রায় সাড়ে তিনশ আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় প্রার্থী নির্বাচিত হয়েছেন। যাদের গেজেট মধ্য জুনের পরেই প্রকাশ করা হবে। এছাড়া ১৩টি আসনে কোনো প্রার্থী পাওয়া যায়নি। যার জন্য আবার প্রথম থেকে প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে।

যে সব উপজেলায় একটি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচন:
যশোরের মনিরামপুর ও বাঘারপাড়া, মাগুরার সদর ও মোহাম্মদপুর, বাগেরহাটের কচুয়া ও মোল্লাহাট, খুলনার বটিয়াঘাটা, সাতক্ষীরার তালা, বরগুনার বেতাগী ও তালতলী, পটুয়াখালীর সদর, বাউফল ও দশমিনা, ভোলার তজুমদ্দীন, বরিশালের সদর, বাবুগঞ্জ, বাকেরগঞ্জ ও বানারিপাড়া, ঝালকাঠির কাঠালিয়া, পিরোজপুরের নাজিরপুর, টাঙ্গাইলের ভূয়াপুর, গোপালপুর, কালিহাতি, ধনবাড়ি ও ঘাটাইল, জামালপুরের ইসলামপুর, মেলান্দহ ও সরিষাবাড়ী, শেরপুর সদর, ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট ও ফুলপুর, নেত্রকোনার কমলাকান্দা, মদন ও মোহনগঞ্জ, কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ, পাকুন্দিয়া, অষ্টগ্রাম, ইটনা ও মিঠামঈন, মানিকগঞ্জ সদর ও শিবালয়, মুন্সীগঞ্জের সদর, সিরাজদীখান ও গজারিয়া, নরসিংদীর সদর ও পলাশ, নারায়গঞ্জ বন্দর, রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ, ফরিদপুরের বোয়ালমারী, গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর ও টুঙ্গীপাড়া, মাদারীপুরের কালকীনি, শরিয়তপুরের নড়িয়া, সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার, সিলেটের জৈন্তাপুর, কুমিল্লার চান্দিনা, দেবীদ্বার, বুড়িচং, চৌদ্দগ্রাম ও আদর্শসদর, নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ ও চাটখিল, চট্টগ্রামের মিরসরাই, রাঙ্গুনিয়া ও বোয়ালখালী, কক্সবাজারের রামু, খাগড়াছড়ির সদর, রাঙামাটির সদর, বরকল ও কাপ্তাই, বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি, পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ, ঠাকুরগাঁয়ের বালিয়াডাঙ্গি, দিনাজপুরের বিরামপুর, নীলফামারীর জলঢাকা, লালমনিরহাটের সদর, আদিতমারী, পাটগ্রাম, হাতিবান্দা, রংপুরের তারাগঞ্জ, কাউনিয়া, কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ি, উলিপুর, গাইবান্ধার সাঘাঁটা, জয়পুরহাটের পাঁচবিবি, বগুড়ার সারিয়াকান্দি, গাবতলী, নন্দিগ্রাম ও শেরপুর, চাপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ, নওগাঁর রানীনগর, আত্রাই ও বদলগাছি, রাজশাহীর পবা ও তানোর, নাটোর গুরুদাসপুর, সিরাজগঞ্জের কাজীপুর ও উল্লাপাড়া, পাবনার বেড়া, চাটমহর, ঈশ্বরদী ও সুজানগর, কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা ও মিরপুর, চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা ও ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডু।

যেসব উপজেলায় দু’টি আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচন:
টাঙ্গাইলের সখিপুর, শেরপুরের শ্রীবর্দি, ময়মনসিংহ সদর ও নান্দাইল, নেত্রকোনা সদর ও পূর্বধলা, মানিকগঞ্জের দৌলতপুর, নরসিংদীর শিবপুর ও মনোহরদী, গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী ও কোটালীপাড়া, শরিয়তপুরের ভেদরগঞ্জ, ডামুড্যা ও গোসাইরহাট, সুনামগঞ্জের ছাতক, সিলেট সদর, জকিগঞ্জ ও বিয়ানীবাজার, মৌলভীবাজার সদর, কমলগঞ্জ ও রাজনগর, হবিগঞ্জ সদর ও নবীগঞ্জ, দিনাজপুরের বীরগঞ্জ ও চিরিরবন্দর, লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ, রংপুরের বদরগঞ্জ, পীলগঞ্জ ও মিঠাপুকুর, কুড়িগ্রামের সদর ভুরুঙ্গামারি, গাইবান্দার সাদুল্যাপুর, জয়পুরহাট সদর, বগুড়ার ধুনট ও শিবগঞ্জ, চাপাইনবাবগঞ্জ সদর, রাজশাহীর বাগমারা, নাটোর সিংড়া, কুষ্টিয়ার কুমারখালী, চুয়াডাঙ্গার সদর, ঝিনাইদহের শৈলকূপা, বাগেরহাটের ফকিরহাট, বরগুনার আমতলী, ভোলার বুরহানউদ্দীন, বরিশালের গৌরনদী, পিরোজপুর সদর ও নেছারাবাদ, কুমিল্লার মেঘনা ও তিতাস, চাঁদপুর কচুয়া, সাহরাস্তি, মতলব উত্তর ও হাজীগঞ্জ, ফেনীর সোনাগাজী, নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ ও সোনাইমুড়ি, লক্ষ্মীপুরের রামগতি, চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ, চন্দনাইশ ও আনোয়ারা।

যেসব উপজেলায় তিনটি আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচন:
ঠাঁকুরগাঁয়ের সদর, দিনাজপুরের বিরল, যশোরের ঝিকরগাছা, বাগেরহাটের মোড়েলগঞ্জ, সাতক্ষীরার আশাশুনি, পটুয়াখালীর গলাচিপা, ঝালকাঠির নলছিটি, ময়মনসিংহের গৌরীপুর, কিশোরগঞ্জ সদর ও বাজিতপুর, ঢাকার সাভার, নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার, রাজবাড়ী সদর, ফরিদপুর সদর ও মধুখালী, মাদারীপুর সদর ও রাজৈর, সিলেটের বালাগঞ্জ, গোলাপগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা ও নবীনগর, কুমিল্লার সদর দক্ষিণ, বরুড়া ও দাউদকান্দি, নোয়াখালীর হাতিয়া, লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ, চট্টগ্রামের বাঁশখালী ও পটিয়া এবং কক্সবাজারের চকরিয়া।

যেসব উপজেলায় চারটি আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচন:
টাঙ্গাইলের মির্জাপুর, জামালপুর সদর, নড়াইল সদর, নরসিংদীর রায়পুরা, গোপালগঞ্জ সদর, চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি ও সাতকানিয়া।

এছাড়া কুমিল্লার মুরাদনগরে ৫টি আসনে ও ভোলার চরফ্যাশন উপজেলায় ৬টি আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় প্রার্থী নির্বাচিত হয়েছে।

যেসব উপজেলায় ১৩ আসনে প্রার্থী নেই:
চট্টগ্রামের হাইহাজারী উপজেলার ৫ নম্বর আসন, গোপালগঞ্জের কাশিয়ানির ৫ নম্বর আসন, চাঁদপুরের মতলব উত্তরের ১, ৩ ও ৪ আসন, নোয়াখালীর বেগমগঞ্জের ৪ ও ৫ নম্বর আসন, বাগেরহাটের মোড়েলগঞ্জের ৪ নম্বর আসন, ফরিপুরের মধুখালীর ১ নম্বর আসন, ব্রাহ্মবাড়িয়ার কসবার ৩ নম্বর আসন, চট্টগ্রামের পটিয়ার ৩ নম্বর আসন, ফটিকছড়ির ৫ নম্বর আসন, গোপালগঞ্জ সদরের ৩ নম্বর আসন।

দেশে প্রথমবারের মতো উপজেলায় নারী আসনের এ নির্বাচনে প্রায় এক চতুর্থাংশ উপজেলায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচনের ঘটনা ঘটলো। এর আগে দশম সংসদ নির্বাচনের সময় অর্ধেকের বেশি আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচন হয়েছিলো। যেখানে ৩০০ আসনের মধ্যে ১৫৩ আসনে কোনো ভোটগ্রহণ হয়নি।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর