রফিকুল ইসলামঃ “আলী আজগর ভূঁঞা সা’ব ধলাই-বগাদিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের সভাপতি থাকাকালীন এলাকার একটি কুচক্রী মহল ষড়যন্ত্র করে তাকে সভাপতির পদ থেকে সরিয়ে দেয়।”
গত ২১/০৩/২০২৩ খ্রি. মরহুম মো. আলী আজগর ভূঞার স্মরণে অনুষ্ঠিত এক মিলাদ ও দোয়া মাহফিলে অপ্রাসঙ্গিক এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এ বক্তব্য দিয়ে এলাকায় বিতর্ক ও অনাকাঙ্ক্ষিত বিশৃঙ্খলার জন্ম দিয়েছেন ধলাই-বগাদিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের বর্তমান সভাপতি মো. নূরুল হক ভূঞা। বগাদিয়া প্রাইমারি স্কুলের সভাপতিও তিনি।
কিশোরগঞ্জ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট মো. জিল্লুর রহমানের সভাপতিত্বে এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কিশোরগঞ্জ-৪ (ইটনা-মিঠামইন-অষ্টগ্রাম) আসনের তিনবারের নির্বাচিত এমপি জননেতা প্রকৌশলী রেজওয়ান আহাম্মদ তৌফিক।
এছাড়া জেলা ও উপজেলাসহ তৃণমূল আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মী, সমর্থক-অনুগামী, বিভিন্ন মসজিদের ইমাম ও উলামায়ে কেরামসহ ধর্মপ্রাণ মুসলমানেরা তাতে অংশ নেন।
মরহুম মো. আলী আজগর ভূঁঞার স্মরণসভায় মো. নূরুল হক ভূঞা সর্বপ্রথম আলোচনায় অংশ নিয়ে কাণ্ডজ্ঞানহীন বিদ্বেষপূর্ণ বক্তৃতা দিলে এলাকায় অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়ে।
এ বক্তব্যকে চ্যালেঞ্জ করে আমি ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেই। যা ছিল এরকম – “মরহুমের হাইস্কুলে সভাপতির পদকে নিয়ে মিলাদ ও দোয়া মাহফিলে এক মাকাল নেতার মিথ্যাচার শেষতক নিজের ওপরই না বর্তায়!”
এর পরিপ্রেক্ষিতে বিষয়টি পরিস্কার করতে নূরু হক ভূঞারই এক ব্যক্তিকেন্দ্রিক অনুগামী মো. ফারুক আহমেদ কমেন্ট করেন। এর কিয়দাংশ এরকম – “… স্কুলের সার্বিক উন্নয়নের স্বার্থে নূরুল হক ভূঁইয়া সাবকে সভাপতি করার আগ্রহ প্রকাশ করেন মরহুম নিজেই।”
তাহলে এখানে কুচক্রী মহল আসলো কোত্থেকে আর ষড়যন্ত্রইবা হলো কেমন করে?
সবসময় ষড়যন্ত্রে লিপ্ত থাকেন যে জন এবং স্থান কাল পাত্র বিষয় বাছবিচার করতে পারেন না যে জন তিনি মাকাল নেতা ছাড়া বৈ কিছু নয়।
মরহুমের স্মরণে ও তার রুহের মাগফিরাত কামনা করা একটি মিলাদ ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠানে মো. নূরুল হক ভূঞার এহেন বক্তব্য নিঃসন্দেহে মিথ্যাচার। আর মওকা নিতে নিজে সভাপতি হতে ষড়যন্ত্রটা তার তরফ থেকেই হয়েছে বলে প্রমাণ করছে।
আসলে নূরুল হক ভূঞা সমাজে বেস্টওয়ান সাজতে ও কেষ্টবিষ্টু বনতে সদাসর্বদা একটা না একটা বিশৃঙ্খলা লাগিয়েই রাখেন। তা জিইয়ে রেখে পানি ঘোলা করে ডিমান্ড বাড়ান। মানে, ‘খাইট্টা লাগায় আইট্টা ভাঙে।’
সমাজে এ উদাহরণ অসংখ্যের মধ্যে কয়েকটা হলো:
১. মিঠামইন উপজেলার গোপদিঘী ইউনিয়নে অবস্থিত শ্যামপুর দারুল উলুম দাখিল মাদ্রাসাটি নূরুল হক ভূঞার ইন্ধন ও আশকারা কেবল নয়, শ্যামপুর থেকে সরিয়ে নিয়ে নিজ বাজারের ভিটায় ১৩ বছর ধরে জায়গা বরাদ্দ ও আশ্রয় দিয়ে মানবাধিকার লঙ্ঘনের মতো অপরাধ করে আসছেন।
২. কাওলামূলে মালিক না হওয়া সত্বেও নূরুল হক ভূঞা বগাদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জমিদাতা সদস্য হিসেবে মনোনীত হয়ে আসছেন যুগের পর যুগ ধরে, ক্ষমতা খাটিয়ে। অথচ, বাস্তবিক ও কাওলামূলে ( স্কুলের নতুন বিল্ডিংসহ) সিংহভাগ জায়গার মালিক মরহুম হাজী মো. রমজান আলী ভূঁইয়ার ওয়ারিশানরা।
উল্লেখ্য, নূরুল হক ভূঞা উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আছিয়া আলমের কাছে প্রাইমারি স্কুলের দলিল সংশোধন করার কথা বলে গত প্রায় ৪ বছর হলো তালবাহানা করে যাচ্ছেন অন্যরা জমিদাতা হয়ে গিয়ে তার একক আধিপত্যে ও দাপটে না চিড় ধরায়।
৩. শুধু তা-ই নয়, বগাদিয়া প্রাইমারি স্কুলের প্রায় ৭০ বছরের পুরনো একমাত্র খেলার বিশাল মাঠটি নূরুল হক ভূঞা তার নিকটাত্মীয়দের নামে গোপনে কাগজের ফাঁকফোকরে কিনে নিয়েছেন।
এসবের দলিল নং- ২২৩৭, তাং- ১৩/১০/২০২১; গ্রহীতা- কাজি মিয়া গং। দলিল নং- ১৯৮৭, তাং- ২২/০৯/২০২১; গ্রহীতা- জামাল মিয়া। দলিল নং- ২১৬৭, তাং- ০৬/১০/২০২১; গ্রহীতা- কাজি মিয়া গং। দলিল নং- ১৪০৭, তাং- ১৮/০৮/২০২১। দলিল নং- ১৫০০, তাং- ২৬/০৮/২০২১; গ্রহীতা- আবদুল হক গং।
এমনি এক হীরক রাজা ভগবানের দেশে চলছে সত্য ও মিথ্যার দ্বন্দ্ব। কে না জানে, ‘মিথ্যার শোর বেশি আর সত্যের জোর বেশি।’
যে যা-ই বলুক, “সত্যের জন্য সবকিছু ত্যাগ করা যায় কিন্তু সবকিছুর জন্য সত্যকে ত্যাগ করা যায় না।”
লেখক: জ্যেষ্ট সাংবাদিক ও কলামিস্ট
সহযোগী সম্পাদক, আজকের সূর্যোদয়, ঢাকা