তিনদিন পর মুখ খুলেই বিএনপি নেতাকে দুষলেন এমপি

কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের বিরোধিতায় চট্টগ্রামের বাঁশখালীর গন্ডামারায় আহুত কর্মসূচিতে পুলিশের গুলিতে চারজন নিহত হওয়ার তিনদিন পর ঘটনার বিষয়ে মুখ খুলেছেন স্থানীয় সাংসদ মুস্তাফিজুর রহমান। পুরো ঘটনার জন্য তিনি দায়ী করেছেন বিদ্যুৎ কেন্দ্রবিরোধী আন্দোলনের অন্যতম নেতা ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান লিয়াকত আলীকে; যিনি স্থানীয়ভাবে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে সরাসরি জড়িত।

একইসঙ্গে নিহত চারজনের প্রত্যেকের পরিবারকে সরকার ১০ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেবে বলেও জানিয়েছেন তিনি। প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন আহতদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করার।

বৃহস্পতিবার দুপুরে চট্টগ্রাম মহানগরীর বায়োজিদ থানার রহমান নগরের নিজ বাসভবনে সংবাদ সম্মেলনে এই সাংসদ বলেন, পরিকল্পিতভাবে পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করে ফায়দা হাসিলের জন্য গ্রামবাসীকে বিদ্যুৎ প্রকল্পের বিরুদ্ধে উসকানি দেয়া হয়েছে।

প্রস্তাবিত কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্পের জন্য ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামবাসীকে যথাযথভাবে পুনর্বাসন করার সিদ্ধান্ত সরকারের আছে বলেও দাবি করেন তিনি।

ঘটনাস্থলে দুই পক্ষের বিরোধপূর্ণ অবস্থান এড়াতে ১৪৪ ধারা জারি থাকলেও তা জানতেন না দাবি করে এ সংসদ সদস্য বলেন, এলাকার শান্তি-শৃঙ্খলার জন্য প্রশাসন ১৪৪ ধারা জারি করতেই পারে। এটা আমাকে জানতে হবে কেন।

বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের প্রকল্প এলাকায় কোনো বিরোধিতা নেই দাবি করে তিনি বলেন, এটা নিয়ে রাজনীতি হচ্ছে। চাঁদাবাজি করার জন্য একটি পক্ষ এ ঘটনা ঘটিয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দাদের বিরোধিতার মুখে বিদ্যুৎ প্রকল্পটি বাস্তবায়নে স্থানীয় সংসদ সদস্য হিসেবে তার ভূমিকা সম্পর্কে জানতে চাইলে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, এটা সরকার ও প্রকল্প বাস্তায়নকারী প্রতিষ্ঠানের বিষয়। তারাই এ বিষয়টা দেখবে।

সরকার এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে উল্লেখ করে তিনি প্রশ্ন রাখেন, ‘সন্ত্রাসীদের জন্য কি উন্নয়ন প্রকল্প বন্ধ থাকবে?’

ঘটনার তিনদিনেও এলাকায় যাওয়া হয়নি কেন- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ঘটনার দিন আমি বিশেষ কাজে ঢাকায় ছিলাম। ওইদিন বিকেলে মোবাইলে সংঘর্ষের খবর পাই। পরে চারজন নিহতের খবর পাই। ঢাকায় অবস্থানের কারণে নিহতদের জানাজায় উপস্থিত থাকতে পারিনি।

সংবাদ সম্মেলনে মোস্তাফিজুর রহমানের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন- বাঁশখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আব্দুল গফুর। এতে উপস্থিত ছিলেন- বাঁশখালী পৌর মেয়র সেলিমুল হক চৌধুরী, উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রেহানা আক্তার, উপজেলা আ. লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মহিউদ্দিন চৌধুরী।

গণ্ডামারায় কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের বিরোধিতায় আহুত কর্মসূচি থেকে গেল সোমবার পুলিশ-গ্রামবাসী সংঘর্ষে চারজন নিহত হন। ঘটনার দিন অবশ্য তিনজন নিহত হওয়ার বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া গিয়েছিল। তবে আন্দোলনকারীদের অভিযোগ বাঁশখালীতে নিহতের সংখ্যা নিয়ে লুকোচুরি কার হচ্ছে। তারা বলছেন, সোমবারের সংঘর্ষে সাতজন নিহত হয়েছেন।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর