হাওর বার্তা ডেস্কঃ হাওরে মানেই বর্ষায় থৈ থৈ পানি, আর শীতে অবাধ সবুজের সমারোহ। দিগন্ত জোড়া মাঠের চারদিকে এখন সবুজ ধানের কোলাহল তৈরি হবে। যতদূর চোখ যাবে শুধু চোখে ভাসবে সবুজ ধানের ক্ষেত।
কিশোরগঞ্জের হাওরাঞ্চলের কৃষকরা এখন বোরো ধানের বীজতলা পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। প্রতিবছর হাওরের চিত্র, আর এবছরের চিত্র কিছুটা ভিন্ন।এবার হাওরের পানি দ্রুত নেমে যাওয়ায় বোরো চাষিরা অত্যন্ত খুশি। তারা এখন দলবেঁধে বোরা চাষ নিয়ে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন।
দেশের খাদ্য ভাণ্ডার খ্যাত হাওরাঞ্চলের চাষিরা আশা করছেন সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে ভাল ফলন হতে পারে। এদিকে জেলা কৃষি বিভাগ বলছে, চাষকালীন সময়ে আবহাওয়ার বৈরী প্রভাব না থাকলে চলতি বোরো মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রার অধিক ফলন হতে পারে।
বোরো ধানের বীজতলায় হাওরাঞ্চল এখন সবুজে সবুজে একাকার। কিশোরগঞ্জের এক হাজার চারশত সত্তুর বর্গকিলোমিটার হাওরাঞ্চলে চলছে বোরো আবাদের প্রস্তুতি। এ অঞ্চলের কৃষকরা এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন বীজতলার পরিচর্যায়।
জেলার মিঠামইন উপজেলার কৃষক ছফির উদ্দিন জানান, হাওরের পানি আগেভাগে নেমে যাওয়ায় চলতি বোরো মৌসুমে বীজতলা তৈরি করতে আমাদের সুবিধা হয়েছে। এখন বীজতলা পরিচর্যার পাশাপাশি জমিও প্রস্তুত করছি। কয়েকদিনের মধ্যে ধানের চারা জমিতে লাগাতে পারবো।
আরেক চাষি মো. লতিফ মিয়া বলেন, সময়টা ভালই আশা করি সব ঠিকঠাক থাকলে ফলনও ভাল হবে। প্রাকৃতিক দুর্যোগতো প্রতি বছরই কমবেশি থাকে। কিন্তু ডিজেলের দাম বেড়ে যাওয়ায় আমরা শঙ্কায় আছি। এতে করে উৎপাদন খরচও বেড়ে যাবে এ বছর। ধানের ফলন ভাল হলেও, ধানের দাম যদি বেশি না পাই তাহলে আমরা ক্ষতির মুখে পড়বো।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণের উপ-পরিচালক মো. ছাইফুল আলম বলেন, হাওরাঞ্চলের চাষিদের বোরো ধানের বীজতলা তৈরির বিভিন্ন পরামর্শ দিয়েছি। এমনকি সরেজমিনেও তাদের জায়গাগুলো দেখেছি। অন্যান্য বছরের তুলনায় এবছর হাওরের পানি দ্রুত চলে যাওয়ায়, হাওরের কৃষকরা বীজতলা প্রস্তুত করার সময় অনেক আগেই পেয়ে গেছেন। এটা কৃষকদের জন্য খুশির খবর। যদি বড় ধরনের প্রাকৃতিক কোন দুর্যোগ না হয়, তাহলে হাওরে এবছর বোরো উৎপাদনে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করবে।
কৃষি বিভাগের তথ্য মতে, চলতি বছর জেলায় ১ লক্ষ ৬৪ হাজার ৪০০শ ৮৫ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। বাজারে ধানের দাম ভাল, তাই এ মৌসুমে বোরো আবাদ লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে আশা করা যাচ্ছে। তবে, ডিজেলের দাম বেড়ে যাওয়ায় ধানের ন্যায্য দাম নিয়েও শঙ্কায় রয়েছে কৃষক।