আমের রাজধানী চাঁপাইনবাবগঞ্জের গাছে মুকুল আসতে শুরু করায় আমচাষীদের মুখে হাসি ফুটেছে। আম বাগানগুলো এখন মুকুলের মৌ মৌ গন্ধে মুখরিত। স্থানীয় আমচাষীদের মতে, এখন পর্যন্দ জেলার আমবাগানগুলোর মধ্যে ৭০ থেকে ৭৫ ভাগ গাছে মুকুল এসেছে এবং আগামী কয়েকদিনের মধ্যে বাকি গাছগুলোতেই মুকুল চলে আসবে। তবে স্থানীয় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সাজদার রহমান জানান, জেলায় প্রায় ৮০ ভাগ গাছে মুকুল এসেছে এবং কয়েকদিনের মধ্যেই বাকি গাছগুলোতে মুকুল আসবে। তিনি আরও জানান, এখন পর্যন্ত আবহাওয়া অনুকুল থাকায় এবং কুয়াশা না থাকায় এবার গাছে দেরিতে মুকুল আসলেও বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে। কারণ এমনিতেই এবার অফ-ইয়ার।
জানা গেছে, এবার জেলায় ২ লাখ মেট্রিক টন আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। গত বছর অন-ইয়ার হওয়ায় আমের আশানুর’প ফলন হয়েছিল। অতীত অভিজ্ঞতায় দেখা যায়, এক বছর আমের উৎপাদন ভালো হলে পরের বছর খারাপ হয়। কিন্তু এবারও আমের উৎপাদন ভালো হবে বলে আশা করছেন আম চাষীরা।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ কৃষি সমপ্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় প্রায় আড়াই’ জাতের আম চাষ হয় এবং গত কয়েক বছরে বরেন্দ্র অঞ্চলের উচু-নিচু জমিতে গড়ে উঠেছে দু হাজারেরও বেশি ছোট বড় আম বাগান। স্থানীয় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের হিসাব মতে, এবার চাঁপাইনবাবগজ্ঞ জেলায় ২৪ হাজার ২৬০ হেক্টর জমিতে আম বাগান গড়ে উঠেছে। এর মধ্যে চাঁপাইনবাবগজ্ঞ সদর উপজেলায় ৪ হাজার ৩শ’ ৫০ হেক্টর, গোমস্তাপুর উপজেলায় ১ হাজার ৭শ হেক্টর, শিবগজ্ঞ উপজেলায় ১৩ হাজার ২শ ৫০ হেক্টর, ভোলাহাট উপজেলায় ২ হাজার হেক্টর এবং নাচোল উপজেলায় ২ হাজার ৯শ ৬০ হেক্টর জমিতে আম গাছ রয়েছে প্রায় ১৬ লাখ ১৪হাজার ৯শ’টি। গত বছর আম উৎপাদন হয়েছিল প্রায় ১ লাখ ৮৪ হাজার ৫শ’ ৬০ মেট্রিক টন। এবার উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২ লাখ মেট্রিক টন।
কানসাটের আমচাষী রাসেল জাহান জানান, আমের ভালো ফলন হবার জন্য তিনি এখন বাগান পরিচর্যার কাজ পুরোদমে চালিয়ে যাচ্ছেন। তিনি আরও জানান, তুলনামূলকভাবে এবার বড় আমগাছের চেয়ে ছোট আমগাছে বেশি মুকুল এসেছে। তবে যেসব আমবাগান চলতি সময় পর্যন্ত ৫-৬ ব্যবসায়ীর হাত বদল হয় সেসব বাগান এখন পর্যন্ত বেচা-কেনা না হওয়ায় বাগান মালিকরা হতাশায় রয়েছেন। এর কারণ হিসেবে চাষীরা আমে ফরমালিনের অজুহাতে আইনশৃংখলা বাহিনীর হাতে আমচাষীদের হয়রানিকে দায়ী করেছেন।