ঢাকা ০৭:৫৫ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১০ জানুয়ারী ২০২৫, ২৭ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
ফেক ছবি শনাক্তে হোয়াটসঅ্যাপের নতুন ফিচার ফ্যাসিস্ট হাসিনার দোসর শামীম ওসমানের দাঁড়ি-গোফ যুক্ত ছবি ভাইরাল, যা বলছে ফ্যাক্টচেক ঢাকায় যানজট নিরসনে দ্রুত পদক্ষেপের নির্দেশ দিলেন প্রধান উপদেষ্টা চার-ছক্কা হাঁকানো ভুলে যাননি সাব্বির হজযাত্রীর সর্বনিম্ন কোটা নির্ধারণে মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্টতা নেই : ধর্ম উপদেষ্টা একাত্তরের ভূমিকার জন্য ক্ষমা না চেয়ে জামায়াত উল্টো জাস্টিফাই করছে: মেজর হাফিজ ‘আল্লাহকে ধন্যবাদ’ পিএইচডি করে ১৯ সন্তানের মা শমী কায়সারের ব্যাংক হিসাব তলব আগামী মাসের মধ্যে পাঠ্যপুস্তক সবাই হাতে পাবে : প্রেস সচিব নিক্কেই এশিয়াকে ড. মুহাম্মদ ইউনূস তিন মেয়াদে ভুয়া নির্বাচন মঞ্চস্থ করেছেন হাসিনা

মহিষের সঙ্গে লাঙ্গল-জোয়াল দিয়ে হালচাষ

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১১:০৮:৪৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১১ ফেব্রুয়ারী ২০২১
  • ২৪৪ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ আধুনিক কৃষি ব্যবস্থাপনার কারণে গ্রামগঞ্জে গরু কিংবা মহিষ দিয়ে হালচাষ এখন আর তেমন একটা দেখা যায় না। ফলে সকালবেলা কাঁধে লাঙ্গল, জোয়াল, দড়ি আর সঙ্গে জোড়া গরু কিংবা মহিষ নিয়ে কৃষককে মাঠে যেতেও দেখা যায় না।

তারপরও বাংলার এই ঐতিহ্য ধরে রেখে এখনো অনেকে নিজের ও পরিবারের রুটি-রুজির ব্যবস্থা করছেন।

আধুনিক কৃষি ব্যবস্থাপনায় প্রযুক্তির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে না পারলেও কৌশলগত দিক থেকে গরু-মহিষের চাষ করেও এখনো রোজগার করে চলছেন কেউ কেউ।
বরিশাল সদর উপজেলার কাশিপুর ইউনিয়নের সারসী এলাকার বাসিন্দা খলিল রহমান খান। যিনি সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চললেও এখনো দুটি মহিষ দিয়ে হালচাষের কাজটি করেন। স্থানীয়ভাবে আধুনিক যন্ত্র ট্রাক্টরের ব্যাপক চাহিদা থাকার পরেও মহিষ দিয়ে অন্যের জমি হালচাষ করে ভালো আয়-রোজগারও করছেন তিনি। আর যা রোজগার হচ্ছে তা নিয়ে তিনি সন্তুষ্টও।

তিনি, গোটা সারসী এলাকায় তার কদর আলাদা। সবাই যেখানে ট্রাক্টর দিয়ে হালচাষ করছেন সেখানে তিনি তার নিজের দুটো মহিষ দিয়ে হালচাষ করেও এ বাজারে টিকে রয়েছেন। বর্ষা ও ধুলাট উভয় সময়ের চাষেই তিনি কাজ পেয়ে থাকেন।

কিছু কারণে কৃষক তার জমিতে মহিষ দিয়ে হালচাষ করান বলে জানিয়ে তিনি বলেন, এখানকার কৃষকদের জমিগুলো ছোট ছোট এটাই প্রধান কারণ গরু ও মহিষ দিয়ে হালচাষ করার। কারণ ছোট ছোট জমি ট্রাক্টর দিয়ে চাষ করে পোষায় না। আবার ছোট জমির কারণে আবাদের সময় হেরফের হলে অন্যের জমি ব্যবহার করে ট্রাক্টর আসতেও পারে না। এতে আবাদবিহীন জমিতে ট্রাক্টর নিয়ে আসতে হলে আবাদ করা জমির ফসল নষ্ট হয়ে যায়। সে সময় চার পা ওয়ালা এই প্রাণীটিই ফসলবিহীন জমির হালচাষ করার প্রধান হাতিয়ার।

তিনি বলেন, এর বাইরে ট্রাক্টরের লাঙ্গলের ফলা বেশি একটা মাটির নিচে যেতে পারে না কিন্তু গরু ও মহিষ দিয়ে হালচাষ করা লাঙ্গলের ফলা বেশি মাটির নিচে যায় এবং মাটিও ঝুরঝুরা থাকে। ফলে বেশি মাটি পেয়ে বিশেষ করে মূলজাতীয় ফসল ও গাছগুলো ভালোভাবে বেড়ে উঠতে পারে।

স্থানীয়ভাবে হালচাষের গরুর সংকট রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, গরু সংকটের কারণেই তিনি দুটি মহিষ দিয়ে অন্যের জমি চাষাবাদের কাজটি করেন। আর মহিষের পেছনে তার তেমন একটা কষ্ট এবং ব্যয়ও হয় না। বরং মাঠে হালচাষ করতে গিয়ে মহিষকে বিভিন্ন দিক-নির্দেশনা দিতে দিতে সময় পার হয়ে যায় তার।

ট্রাক্টরের চাষে ব্যয় কম হলেও তিনি এ এলাকায় বেশ জনপ্রিয় ব্যক্তি বলে নিজেকে দাবি করে জানান, যদিও ট্রাক্টর দিয়ে এক জৈষ্ঠ অর্থাৎ জমি তিন চাষ দিতে ব্যয় হয় মাত্র ৬শ টাকা। কিন্তু তিনি যে হিসেবে কাজ করেন সেখানে সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত এক হাল, আর এই একহাল সময়ের মধ্যে তিনি ৮শ টাকা উপার্জন করেন। যেখানে ট্রাক্টরের সমপরিমান চাষ সম্ভব হয় না।

আধুনিক কৃষি ব্যবস্থাপনায় কৃষকের কাজ আগের থেকে অনেক সহজ হয়েছে। আর ব্যয়ও কমেছে। তাই ট্রাক্টরের ব্যবহার সর্বোত্র বলে জানিয়েছেন সদর উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা ফাহিমা হক।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

ফেক ছবি শনাক্তে হোয়াটসঅ্যাপের নতুন ফিচার

মহিষের সঙ্গে লাঙ্গল-জোয়াল দিয়ে হালচাষ

আপডেট টাইম : ১১:০৮:৪৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১১ ফেব্রুয়ারী ২০২১

হাওর বার্তা ডেস্কঃ আধুনিক কৃষি ব্যবস্থাপনার কারণে গ্রামগঞ্জে গরু কিংবা মহিষ দিয়ে হালচাষ এখন আর তেমন একটা দেখা যায় না। ফলে সকালবেলা কাঁধে লাঙ্গল, জোয়াল, দড়ি আর সঙ্গে জোড়া গরু কিংবা মহিষ নিয়ে কৃষককে মাঠে যেতেও দেখা যায় না।

তারপরও বাংলার এই ঐতিহ্য ধরে রেখে এখনো অনেকে নিজের ও পরিবারের রুটি-রুজির ব্যবস্থা করছেন।

আধুনিক কৃষি ব্যবস্থাপনায় প্রযুক্তির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে না পারলেও কৌশলগত দিক থেকে গরু-মহিষের চাষ করেও এখনো রোজগার করে চলছেন কেউ কেউ।
বরিশাল সদর উপজেলার কাশিপুর ইউনিয়নের সারসী এলাকার বাসিন্দা খলিল রহমান খান। যিনি সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চললেও এখনো দুটি মহিষ দিয়ে হালচাষের কাজটি করেন। স্থানীয়ভাবে আধুনিক যন্ত্র ট্রাক্টরের ব্যাপক চাহিদা থাকার পরেও মহিষ দিয়ে অন্যের জমি হালচাষ করে ভালো আয়-রোজগারও করছেন তিনি। আর যা রোজগার হচ্ছে তা নিয়ে তিনি সন্তুষ্টও।

তিনি, গোটা সারসী এলাকায় তার কদর আলাদা। সবাই যেখানে ট্রাক্টর দিয়ে হালচাষ করছেন সেখানে তিনি তার নিজের দুটো মহিষ দিয়ে হালচাষ করেও এ বাজারে টিকে রয়েছেন। বর্ষা ও ধুলাট উভয় সময়ের চাষেই তিনি কাজ পেয়ে থাকেন।

কিছু কারণে কৃষক তার জমিতে মহিষ দিয়ে হালচাষ করান বলে জানিয়ে তিনি বলেন, এখানকার কৃষকদের জমিগুলো ছোট ছোট এটাই প্রধান কারণ গরু ও মহিষ দিয়ে হালচাষ করার। কারণ ছোট ছোট জমি ট্রাক্টর দিয়ে চাষ করে পোষায় না। আবার ছোট জমির কারণে আবাদের সময় হেরফের হলে অন্যের জমি ব্যবহার করে ট্রাক্টর আসতেও পারে না। এতে আবাদবিহীন জমিতে ট্রাক্টর নিয়ে আসতে হলে আবাদ করা জমির ফসল নষ্ট হয়ে যায়। সে সময় চার পা ওয়ালা এই প্রাণীটিই ফসলবিহীন জমির হালচাষ করার প্রধান হাতিয়ার।

তিনি বলেন, এর বাইরে ট্রাক্টরের লাঙ্গলের ফলা বেশি একটা মাটির নিচে যেতে পারে না কিন্তু গরু ও মহিষ দিয়ে হালচাষ করা লাঙ্গলের ফলা বেশি মাটির নিচে যায় এবং মাটিও ঝুরঝুরা থাকে। ফলে বেশি মাটি পেয়ে বিশেষ করে মূলজাতীয় ফসল ও গাছগুলো ভালোভাবে বেড়ে উঠতে পারে।

স্থানীয়ভাবে হালচাষের গরুর সংকট রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, গরু সংকটের কারণেই তিনি দুটি মহিষ দিয়ে অন্যের জমি চাষাবাদের কাজটি করেন। আর মহিষের পেছনে তার তেমন একটা কষ্ট এবং ব্যয়ও হয় না। বরং মাঠে হালচাষ করতে গিয়ে মহিষকে বিভিন্ন দিক-নির্দেশনা দিতে দিতে সময় পার হয়ে যায় তার।

ট্রাক্টরের চাষে ব্যয় কম হলেও তিনি এ এলাকায় বেশ জনপ্রিয় ব্যক্তি বলে নিজেকে দাবি করে জানান, যদিও ট্রাক্টর দিয়ে এক জৈষ্ঠ অর্থাৎ জমি তিন চাষ দিতে ব্যয় হয় মাত্র ৬শ টাকা। কিন্তু তিনি যে হিসেবে কাজ করেন সেখানে সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত এক হাল, আর এই একহাল সময়ের মধ্যে তিনি ৮শ টাকা উপার্জন করেন। যেখানে ট্রাক্টরের সমপরিমান চাষ সম্ভব হয় না।

আধুনিক কৃষি ব্যবস্থাপনায় কৃষকের কাজ আগের থেকে অনেক সহজ হয়েছে। আর ব্যয়ও কমেছে। তাই ট্রাক্টরের ব্যবহার সর্বোত্র বলে জানিয়েছেন সদর উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা ফাহিমা হক।