হাওর বার্তা ডেস্কঃ পর্যাপ্ত জ্ঞানের অভাবে ওষুধ ব্যবহারে ভুল হতেই পারে। বিশেষ করে যারা একাধিক ওষুধ সেবন করেন এবং দুই বা ততোধিক স্বাস্থ্য সমস্যায় রয়েছেন তাদের এ ধরনের ভুল বেশি হয়ে থাকে। ভুলের প্রকৃতি অনুসারে হালকা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থেকে মারাত্মক জটিলতায় ভুগতে হতে পারে। ওষুধ ব্যবহারে অসচেতনতার কারণে অনেকের কিডনি বা লিভার ড্যামেজ হয়েছে। এমনকি জরুরি বিভাগে যেতে হয়েছে এমন লোকের সংখ্যাও কম নয়। এখানে ওষুধ ব্যবহার জনিত ভুলের কিছু ধরন দেয়া হলো।
* কম ডোজে ওষুধ সেবন: প্রেসক্রিপশনের নির্দেশনা অনুসারে ওষুধ গ্রহণ না করলে আপনার স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়তে পারে। উদাহরণস্বরূপ, ডিপ ভেইন থ্রম্বোসিস (ডিভিটি) বা পায়ে বিপদজনক রক্ত জমাটবদ্ধতা এড়াতে সঠিক ডোজে ব্লাড থিনার তথা রক্ত পাতলাকারী ওষুধ সেবন করতে হয়। এছাড়া সঠিক সময়ে ওষুধ গ্রহণ না করলেও ক্ষতি হতে পারে। ডা. ইয়াং বলেন, ‘আমাদের শরীর কোনো ওষুধকে প্রেডিক্টেড রেটে বিপাক করে। তাই ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে প্রেসক্রাইবড শিডিউল অনুসারে ওষুধ সেবন করা গুরুত্বপূর্ণ।’
* খাবার ছাড়াই বা ভরাপেটে ওষুধ সেবন: স্বাস্থ্যের অবনতি এড়াতে প্রেসক্রিপশনের নির্দেশনা অনুসারে ওষুধ খেতে হবে। প্রেসক্রিপশনে খাবার খাওয়ার আগে উল্লেখ থাকলে খালিপেটেই ওষুধ গ্রহণ করতে হবে। আবার খাবার খাওয়ার পরে লেখা থাকলে ভরাপেটেই ওষুধ সেবন করতে হবে।
* ওষুধ সমন্বয়ে ভুল: আপনার ওষুধ আপনাকে অসুস্থও করতে পারে। কারণ এমনকিছু ওষুধ রয়েছে যা অন্য ওষুধের সঙ্গে খেলে কার্যকারিতা কমে যেতে পারে অথবা তীব্র পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হতে পারে, বলেন মেডিক্যাল সেফটি অ্যালার্টের এডিটর মাইকেল জে. গন্ট। উদাহরণস্বরূপ, যে সময়ে এন্টাসিড সেবন করবেন তখন লিভক্সিল বা ওয়ারফারিনের মতো কিছু ওষুধ খাওয়া উচিত নয়। কারণ পাকস্থলির অ্যাসিড কমে যায় বলে ওষুধের শোষণ ধীর হয়ে পড়ে, বলেন ডা. ইয়াং।
* চিকিৎসককে অন্য ওষুধ সম্পর্কে না বলা: কোনো রোগের ওষুধ চলাকালে আরেকটি স্বাস্থ্য সমস্যার উদয় হওয়া অস্বাভাবিক কিছু নয়। নতুন সমস্যা নিয়ে চিকিৎসকের কাছে গেলেন, কিন্তু চলমান ওষুধ সম্পর্কে বললেন না। এরকম ভুলে মারাত্মক পরিণতি আসতে পারে। তাই চিকিৎসককে চলমান প্রেসক্রিপশনের ওষুধ, ওভার-দ্য-কাউন্টার ওষুধ (নন-প্রেসক্রিপশন), সাপ্লিমেন্ট ও হার্বাল ওষুধ সম্পর্কে জানাতে হবে। এমনকি আই ড্রপস, ভিটামিন ও ল্যাক্সাটিভ সম্পর্কেও জানানো ভালো। কারণ একটি ওষুধ আরেকটি ওষুধের সঙ্গে মিথষ্ক্রিয়া করে স্বাস্থ্যকে ঝুঁকিতে ফেলতে পারে।
* হঠাৎ ওষুধ বন্ধ করা: ভালো লাগতে শুরু করার পর অনেকেই হঠাৎ করে ওষুধ খাওয়া ছেড়ে দেন। কিন্তু কখনোই এমনটা করা উচিত নয়, বিশেষ করে অ্যান্টিবায়োটিক সেবন করলে। ডা. ওয়াকার বলেন, ‘হঠাৎ ওষুধ বন্ধ করে দিলে মারাত্মক পরিণতিতে ভুগতে হতে পারে, যেমন- রক্তচাপ বা রক্ত শর্করা বেড়ে বিপজ্জনক পর্যায়ে চলে যেতে পারে (যদি রক্তচাপ ও রক্ত শর্করা ব্যবস্থাপনার ওষুধ বন্ধ করে দেয়া হয়)। হঠাৎ করে ফ্লুক্সেটিনের মতো এসএসআরআই বন্ধ করে দিলে উপকার নাও পেতে পারেন, কারণ এটি কার্যকর হতে সময় লাগে। অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়ার কয়েকদিন পর ভালো লাগলেও চিকিৎসার সম্পূর্ণ কোর্স শেষ না করা পর্যন্ত ব্যাকটেরিয়াল সংক্রমণটি সম্পূর্ণরূপে দূর হয় না। তাই পুনরায় অসুস্থ হতে না চাইলে সম্পূর্ণ কোর্স শেষ করতে হবে।’