বাঘ-ছাগলের ভালোবাসা

বাঘের খাঁচায় ছাগলকে পাঠানোর অর্থ কয়েক মিনিটের মধ্যেই ছাগলটি নির্ঘাৎ বাঘের খাবারে পরিণত হবে। কিন্তু তিমুর নামের একটি অদ্ভূত ছাগলকে বাঘের খাঁচায় পাঠানোর পরে ছাগলটি বাঘের সাথে বন্ধুত্ব গড়ে তোলে এবং তারা বর্তমানে একই খাঁচায় অবস্থান করছে। এই অভূতপূর্ব ঘটনাটি ঘটেছে রাশিয়ার সাইবেরিয়ার প্রিমস্কি সাফারি পার্কে। আলোচিত ছাগল তিমুর দেশীয় রাশিয়ান জাতের এবং আমুর নামের বাঘটির জন্মস্থান সাইবেরিয়া। সাফারি পার্কের পরিচালক দিমিত্রি মেজেনসেভ বলেন, তিমুরকে পাঠানো হয়েছিল ক্ষুধার্ত আমুর বাঘের খাবার হিসেবে। এক বছরের বেশি বয়সী আমুর সপ্তাহে দু’টি করে ছাগল খায়। অতীতে অনেক ছোট-বড় ছাগল অনায়াসে খেয়ে ফেলেছে বাঘটি। কিন্তু এ সপ্তাহে তিমুরকে পাঠানোর পরে অদ্ভূত ঘটনা ঘটে। তিনি বলেন, ‘ছাগলটি অত্যন্ত সাহসী প্রকৃতির। যখনই বাঘটি তাকে ধরতে উদ্যত হতো, তখনই সে তার শিং বাগিয়ে বাঘটির দিকে তেড়ে যেত। সাবধানী বাঘটি এতে হতভম্ব হয়ে যায় এবং সিদ্ধান্ত নেয় ছাগলটিকে আক্রমণ না করার।’ পার্ক কর্তৃপক্ষের ধারণকৃত কিছু ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, তিমুর নামের ছাগলটি বড় আকৃতির বিড়ালকে ধাওয়া করছে। আরো অবাক করার মতো বিষয় হল, ছাগলটি বাঘের ঘুমানোর জায়গা দখল করে নিজে সেখানে ঘুমায় এবং বাঘটি স্বেচ্ছায় তাকে জায়গা ছেড়ে দিয়ে পাশের আরেকটি জায়গায় ঘুমায়। তাদের মধ্যে প্রাথমিক রেষারেষি খুব দ্রুতই বন্ধুত্বে রূপান্তরিত হয়েছে বলে পার্ক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। বর্তমানে তারা পরস্পরের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ বন্ধু। মেজেনসেভ বলেন, ‘ তিমুর সারাক্ষণ আমুরকে অনুসরণ করে এবং বাঘটি এতে মোটেও বিরক্ত হয় না। যখন আমুরকে আশেপাশে দেখা না যায়, তখন তিমুরকে উদ্বিগ্ন দেখায় এবং সে আমুরকে খুঁজতে থাকে।’ তিমুর নামটির উৎস জানতে চাইলে কর্তৃপক্ষ জানায়, সোভিয়েত যুগের একটি জনপ্রিয় শিশুতোষ বইয়ের সাহসী বালক চরিত্রের নাম ছিল তিমুর। সেখান থেকেই নামটি ধার করা হয়েছে। পার্ক কর্তৃপক্ষের মতে, ‘নামটির যথার্থতা ইতিমধ্যেই এই অদ্ভূত ছাগলটি প্রমাণ করেছে।’ সূত্র: ডেইলি মেইল

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর