হাওর বার্তা ডেস্কঃ রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেছেন, ‘ক্ষমতা দেখানোর বিষয় নয়, এটিকে একমাত্র জনগণের কল্যাণেই ব্যবহার করতে হবে। সর্বস্তরের প্রত্যেক ব্যক্তি অথবা বিভাগকে সাধারণ মানুষের সেবা করতে ক্ষমতা প্রদান করা হয়। আমার বিশ্বাস আমরা যদি যথাযথভাবে এটি করতে পারি তাহলে দেশ সোনার বাংলায় পরিণত হবে।’
বুধবার বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট দিবস ২০১৯ উপলক্ষে সুপ্রিম কোর্ট জাজেস কমপ্লেক্সে এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
রাষ্ট্রপতি বলেন, দেশ, জনগণ ও সংবিধানের প্রতি দায়বদ্ধ থেকে বিচারকগণ তাদের মেধা-মনন প্রয়োগের মাধ্যমে আইনের শাসন এবং ন্যায় বিচার নিশ্চিত করবেন, দেশবাসী তা প্রত্যাশা করে। মামলার পরিমাণ দিন দিন যে হারে বাড়ছে সেটাকে আয়ত্তের মধ্যে আনতে হলে বিচারকদের আরও বেশি কাজ করতে হবে। মামলার রাশ টেনে ধরতে বিকল্প নিষ্পত্তির উদ্যোগ নিতে হবে।
আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় আইনজীবীদের অবদানের কথা শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন রাষ্ট্রপতি। তিনি আশা প্রকাশ করেন, জ্ঞানের চর্চায় আইনজীবীরা আগের চেয়ে আরও এগিয়ে যাবেন এবং মেধা, প্রজ্ঞা, সততা এবং আন্তরিকতা দিয়ে বিচার প্রার্থীদের দ্রুত ন্যায় বিচার প্রাপ্তিতে সাহায্য করবেন।
রাষ্ট্রপতি বলেন, বিচার প্রার্থীরা যাতে আদালতে হয়রানির শিকার না হয় সে ব্যাপারে বিচারকদের প্রতি সতর্ক থাকতে হবে। পাশাপাশি রায় ঘোষণার পর পরই তারা যাতে কপি পেতে পারে সেটা নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, সুপ্রিম কোর্ট যেহেতু কোর্ট অব রেকর্ড, সেহেতু এর সকল নথিতে ডিজিটাল নথিতে পরিণত করার উদ্যোগ গ্রহণ এবং মামলা দায়ের থেকে রায় ঘোষণা পর্যন্ত সকল কার্যক্রম ডিজিটাল পদ্ধতিতে সংরক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে। ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে জেলখানা থেকে আদালতে আসামিদের উপস্থিত করা এবং একই পদ্ধতিতে দূর থেকে সাক্ষীদের সাক্ষ্যগ্রহণের ব্যবস্থা করা যায় কি না তা ভেবে দেখতে হবে। সরকার এসব বিষয় অত্যন্ত আন্তরিক। ইতোমধ্যে সরকার ই-জুডিসিয়ারি প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ হাতে নিয়েছে।
সুপ্রিম কোর্টের জুডিসিয়াল রিভিউ ক্ষমতার কথা উল্লেখ করে তিনি সর্বাত্মক সতর্কতার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের জন্য বিচারকদের প্রতি আহ্বান জানান।
রাষ্ট্রপতি বলেন, বিচার বিভাগ রাষ্ট্রের তিনটি অঙ্গের মধ্যে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। তাই দেশ ও জনগণের কল্যাণকে অগ্রাধিকার দিয়ে কাজ করতে হবে।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন, আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক, অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম, বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান মুহাম্মদ ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি এ এম আমিন উদ্দিন এবং জাজেস কমিটি সভাপতি বিচারপতি মির্জা হোসেন হায়দার বক্তব্য রাখেন।
এছাড়া অনুষ্ঠানে সাবেক প্রধান বিচারপতি, সিনিয়র বিচারক, আইনজীবী, রাষ্ট্রপতির সচিব, পদস্থ বেসামরিক এবং সামরিক কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।