হাওর বার্তা ডেস্কঃ বৃষ্টিই হয়তো চট্টগ্রাম টেস্ট টেনে নিয়ে গেল পঞ্চমদিনে। বৃষ্টিই এখন বাঁচাতে পারে বাংলাদেশকে। খুচরো-খাচরা বৃষ্টি না হয়ে শাওনধারা ঝরার জন্য প্রার্থনা করতে পারেন সাকিব আল হাসানরা। আর যদি তা না হয়, তাহলে আজ সারা দিন মাটি কামড়ে পড়ে থাকতে হবে সাকিব ও সৌম্যকে। চতুর্থদিন শেষে এ দু’জন অপরাজিত। কাল দিনের খেলা শেষে সাকিব ম্যাচ বাঁচানোর এই দুটি সম্ভাবনার কথাই জানিয়েছেন। খুবই যৌক্তিক কথা। তবে দ্বিতীয়টি প্রায় অসম্ভব। প্রথমটির সম্ভাবনার ওপরই চট্টগ্রাম টেস্ট বাঁচানো নির্ভর করছে। এজন্য চাই প্রকৃতির কৃপা।
বাংলাদেশ যেমন কায়মনোবাক্যে বৃষ্টির জন্য প্রার্থনা করবে, আফগানিস্তান চাইবে রোদেলা দিন। ঐতিহাসিক জয় থেকে তারা যে চার উইকেট দূরে। রশিদ খানের নেতৃত্বে আফগান স্পিনাররা একমাত্র টেস্টে যেভাবে নিজেদের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করেছেন তাতে সাধুবাদ তাদের প্রাপ্য। রোববারও সামনে থেকে নেতৃত্ব দেয়া রশিদ তিন উইকেট নিয়ে নিজেদের মাত্র তৃতীয় টেস্টে দ্বিতীয় জয়ের উজ্জ্বল সম্ভাবনা জাগিয়ে তুলেছেন। রশিদ, জহির ও নবীর সম্মিলিত স্পিন আক্রমণে বিপাকে বাংলাদেশ। ১৩৬ রানেই ছয় উইকেট বিলীন হয়ে গেছে সাগরিকায়। সাকিব আছেন বটে ক্রিজে। সৌম্য তার সঙ্গী। কিন্তু কাল যেভাবে আয়েশি ভঙ্গিতে ব্যাট চালিয়ে মোসাদ্দেকরা আত্মহননের বিলাসিতায় মেতেছেন তাতে অধিনায়ককেও যে সেই রোগ ধরবে না, তার নিশ্চয়তা কোথায়। ৩৯-এ অক্ষত সাকিব যতক্ষণ ইনিংস টেনে নিয়ে যাবেন, ততক্ষণই আশা বেঁচে থাকবে। সৌম্য রানের খাতা খুলতে পারেননি কাল। অলৌকিক কিছু করতে হবে এ দু’জনকেই। খেলাটা ক্রিকেট বলেই আশার সলতে পাকিয়ে রাখতে হয়। কিন্তু চতুর্থ ইনিংসে ২১৫ তাড়া করার নজিরই যে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ। এখানে লক্ষ্য ৩৯৮। তার মানে, শেষদিন করতে হবে আরও ২৬২ রান। হাতে দ্বিতীয় ইনিংসের চার উইকেট। মন যতই বলুক সম্ভব, মস্তিষ্ক সতর্কবার্তা পাঠাচ্ছে- অসম্ভব।
চতুর্থদিন তিন দফা বৃষ্টি বাগড়া না দিলে ম্যাচ পঞ্চমদিনে গড়াত কি না সন্দেহ। শেষবার যখন বৃষ্টিতে টেকা গেল না, তখনও নির্ধারিত সময়ের খেলা শেষ হতে ঘণ্টাখানেক বাকি। এর আগে অভিমানী আকাশ সকালের সেশনের খেলা দু’ঘণ্টা দেরিতে শুরু করার অনুমতি দেয়। দ্বিতীয়বার মধ্যাহ্নভোজের বিরতি ৪০ মিনিট বাড়িয়ে দেয়া হয় বৃষ্টির তাড়ায়। সুখের বিষয়, পঞ্চমদিনেও বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। সাকিবদের জন্য এটাই বাঁচোয়া!
আফগানিস্তান অবশ্য কাজটা ৭০ ভাগ শেষ করে রেখেছে কাল ছয় উইকেট নিয়ে। লাঞ্চের পর বাঁ-হাতি স্পিনার জহির খান জোড়া আঘাত হানেন। লিটন ও মোসাদ্দেক তার দুই শিকার। মুশফিক টানা দ্বিতীয়বার রশিদকে উইকেট দেন। আর তিন ফরম্যাট মিলিয়ে নয় ইনিংসে ষষ্ঠবার। প্রথম ইনিংসে ৫২ রান করা মুমিনুল রশিদের দ্বিতীয় শিকার হন। চা-বিরতির আগে সাকিবের ফিরতি ক্যাচ ফেলে দেন রশিদ। এরই মাঝে বাংলাদেশ দ্রুত আরও দুটি উইকেট হারায়। ১১৪ বলে ৪১ রান করা সাদমান ইসলামকে ফেরত পাঠান মোহাম্মদ নবী। আর দ্বিতীয়বারও সাত রান করা মাহমুদউল্লাহ শর্ট লেগে ধরা পড়েন রশিদের হাতে।
এর আগে আট উইকেটে ২৩৭ রান নিয়ে চতুর্থদিন শুরু করা আফগানিস্তান বাকি দুই উইকেটে আরও ২৩ রান যোগ করে অলআউট হয়। ইয়ামিন আহমদজাই রানআউট হওয়ার পর জহির খানকে ফিরিয়ে ইনিংসের ইতি টানেন মেহেদী হাসান মিরাজ। ৩৪ রানে দিন শুরু করা আফসার জাজাই অপরাজিত থেকে যান ৪৮ রানে।