নাড়ির টানে প্রিয়জনের সাথে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নেবার জন্য পরিবার-পরিজন নিয়ে সবাই ছুটে যান গ্রামের বাড়িতে। তবে বছরের অন্যান্য সময় বাড়িতে যাওয়া ও ঈদের ছুটিতে বাড়িতে যাওয়া এই দুইয়ের মধ্যে অনেক পার্থক্য রয়েছে। ঈদের সময়টায় বাস, ট্রেন ও লঞ্চে তুলনামূলক বেশি ভীড় হয়। অতিরিক্ত ভীড়ের মধ্যে ভ্রমণের ফলে শরীরে ক্লান্তি ভাব চলে আসে। অনেকসময় এই ক্লান্তি থেকেই অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়েন। তবে কিছু সতর্কতা অবলম্বন করলে অনাকাঙ্ক্ষিত এই অবস্থা প্রতিরোধ করা যায়।
নাড়ীর টানের বাড়ি ফেরা আর ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে কাঁটানোর জন্য বাড়ি যেতে উৎসুক থাকে রাজধানীবাসী। কিন্তু আনন্দে এই বাড়ি ফেরা অনেক সময় চোখের জলে ভেসে যায়। ঈদ নয় লাশ হয়ে ফিরতে হয় বাড়িতে।
সতর্কতামূলক কিছু ব্যবস্থা:
ঈদে বাড়িতে যাওয়ার সময় যে বিষয়টি সবার আগে গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করা উচিত সেটি হলো কোনো অবস্থাতেই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাস, ট্রেন বা লঞ্চে আরোহন না করা। সময়ের চাইতে জীবনের মূল্য অনেক বেশি।
ভ্রমণের সময় প্রয়োজনীয় কাপড়-চোপড় সঙ্গে নিতে হবে। বাস, ট্রেন ও লঞ্চের ভ্রমণে জানালার পাশে অতিরিক্ত বাতাসের ঝাপটা থেকেও সর্দিজ্বরে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে। এ ধরনের ছোটখাটো বিষয়গুলোও মাথায় রাখা উচিত। বিশেষ করে শিশুরা জানালার ধারের সিটটি পছন্দ করে থাকে। এ কারণে হঠাৎ করেই শিশুরা অতিরিক্ত বাতাসের ঝাপটার মুখোমুখি হয়, যা অনেকেরই সহ্য ক্ষমতার বাইরে। এর ফলে শিশুরা অনেকেই ঠিক ভ্রমণের পর আক্রান্ত হয় সর্দিজ্বর কিংবা কাশিতে।
ভ্রমণে শিশুরা সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয় ডায়রিয়ায়। এর কারণ হলো বাইরের পানীয় এবং খাবার গ্রহণ। আর তাই বাইরের খাবার কোনোভাবেই গ্রহণ করা ঠিক নয়। বিশেষ করে ঘরের তৈরি কিছু খাবার ও পানি সঙ্গে নিয়ে ভ্রমণে বের হওয়া উচিত।
ভ্রমণে খাদ্য ও পানিবাহিত রোগ প্রতিরোধের ব্যাপারে সচেষ্ট থাকতে হবে সবচেয়ে বেশি। এ ছাড়া অনেকেই আছেন বাসে চড়লে সঙ্গে সঙ্গে বমিভাব কিংবা বমি শুরু হয়। ভ্রমণজনিত বমি বা মোশন সিকনেস প্রতিরোধে স্টেমেটিল/ভার্টিনা ট্যাবলেট ভ্রমণের আধা ঘণ্টা আগে গ্রহণ করা যেতে পারে।
ঈদের ভ্রমণে অধিকাংশ মানুষই গ্রামের বাড়িতে যান। যেখানে অনেক সাধারণ ওষুধও পাওয়া যায় না। তাই সম্ভাব্য অসুস্থতার কথা বিবেচনায় রেখে সাধারণ কিছু ওষুধপত্র সঙ্গে নিয়ে যাওয়া খুবই বুদ্ধিমানের কাজ। এছাড়া একটি ফার্স্টএইড বক্স নিজের মতো তৈরি করে নেওয়া যেতে পারে।
একটু সতর্কতা আপনার ঈদ আনন্দকে আরও বাড়িয়ে দিতে পারে। আর সামান্য একটু অসতর্কতা আপনাকে ঈদের দিন অসুস্থ হয়ে বিছানায় শুইয়ে রাখতে পারে কিংবা প্রিয়জনকে ডাক্তারের কাছে ছোটাছুটি করাতে পারে। ভ্রমণে যতটুকু পারা যায় সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।