ঢাকা ০৫:২৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ০৭ অক্টোবর ২০২৪, ২২ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

জাতীয় নির্বাচনের চ্যালেঞ্জ

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১১:৫৯:২৮ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ নভেম্বর ২০১৭
  • ২৩৭ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ দশম জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশন বসেছিল ২০১৪ সালের ২৯ জানুয়ারি। সংবিধান অনুযায়ী মেয়াদ শেষ হওয়ার পূর্ববর্তী ৯০ দিনের মধ্যে পরবর্তী সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের বাধ্যবাধকতা রয়েছে।

তাই একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ২০১৯ সালের ২৯ জানুয়ারির মধ্যে করতে হবে। নির্বাচন কমিশনের হাতে বছরখানেক সময় আছে। রাজনৈতিক দলগুলো, বিশেষ করে বড় দলগুলো নির্বাচনী প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে। সম্ভাব্য প্রার্থীরা তৎপরতা শুরু করেছেন নিজ নিজ এলাকায়। প্রধান বিরোধী রাজনৈতিক দল বিএনপির নির্বাচনেচ্ছু নেতারাও প্রস্তুতি নিচ্ছেন, এলাকায় তৎপর রয়েছেন।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সব দলের অংশগ্রহণে করার জন্য নির্বাচন কমিশন তৎপর রয়েছে। এরই মধ্যে রাজনৈতিক দল, সুধীসমাজ ও বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে সংলাপ সম্পন্ন করেছে তারা। এখন সব মতের সমন্বয় করে নির্বাচন অনুষ্ঠানের আয়োজন চূড়ান্ত করার পালা। নির্বাচনের কারিগরি ও কৌশলগত বিভিন্ন বিষয় নির্বাচন কমিশনই চূড়ান্ত করতে পারবে।

তাদের মূল কাজ সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনের পরিবেশ নিশ্চিত করা। কিন্তু নির্বাচনে দলগুলোর অংশগ্রহণ করার সিদ্ধান্ত দলগুলোকেই নিতে হবে, সে দায় কমিশনের নয়। সমস্যাটি এখানেই। নিবন্ধন বিধিমালা অনুযায়ী অংশগ্রহণ না করলে রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া যায়, কিন্তু অংশগ্রহণে বাধ্য করা যায় না। যদিও নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক না হলে দায় কমিশনের ঘাড়েই বর্তাবে। ফলে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠান কমিশনের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।

চ্যালেঞ্জ বড় দলগুলোর জন্যও। আওয়ামী লীগ ও তার জোটসঙ্গীদের চ্যালেঞ্জ হলো ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য জনসমর্থন আদায় করা এবং নির্বাচনী প্রক্রিয়ার গ্রহণযোগ্যতা নিশ্চিত করার জন্য রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা। বিএনপির জন্য চ্যালেঞ্জ হলো দলীয় অস্তিত্ব সংহত করা। মাঠের রাজনীতিতে এখনো প্রধান বিরোধী দলের স্বীকৃতি থাকলেও সংসদীয় পরিমণ্ডলে দলটি প্রতিনিধিত্বহীন। রাষ্ট্রাচারে তাদের কোনো জায়গা নেই। আগামী নির্বাচনে অংশ না নিলে নির্বাচন কমিশনে তাদের নিবন্ধন বাতিল হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এতে সমস্যা আরো বাড়বে। নির্বাচন নিয়ে দোলাচল এখনো রয়েছে। তবে বিপাকে না পড়লে হঠকারী সিদ্ধান্ত বিএনপি নেবে না বলে জানা গেছে।

সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানে কিছু বাধা দেখতে পাচ্ছে অন্যান্য রাজনৈতিক দলও। নির্বাচনী প্রক্রিয়া ও সরকারের আন্তরিকতার ব্যাপারে তাদের মধ্যে সংশয় রয়েছে। বামপন্থী দলগুলো মনে করে, সবচেয়ে বড় বাধা অর্থনৈতিক বৈষম্য। অর্থের খেলা বন্ধ না হলে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব হবে না। নির্বাচনকালে সরকার ও নির্বাচন কমিশনের এখতিয়ার নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে। বড় দুই দল নিজ অবস্থানে অনড় থাকলে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন করা অসম্ভব। তাই নির্বাচন গ্রহণযোগ্য করার জন্য নির্বাচন কমিশনকে যেমন উপায় বের করতে হবে তেমনি সব দলকে অংশগ্রহণে আন্তরিক হতে হবে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জাতীয় নির্বাচনের চ্যালেঞ্জ

আপডেট টাইম : ১১:৫৯:২৮ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ নভেম্বর ২০১৭

হাওর বার্তা ডেস্কঃ দশম জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশন বসেছিল ২০১৪ সালের ২৯ জানুয়ারি। সংবিধান অনুযায়ী মেয়াদ শেষ হওয়ার পূর্ববর্তী ৯০ দিনের মধ্যে পরবর্তী সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের বাধ্যবাধকতা রয়েছে।

তাই একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ২০১৯ সালের ২৯ জানুয়ারির মধ্যে করতে হবে। নির্বাচন কমিশনের হাতে বছরখানেক সময় আছে। রাজনৈতিক দলগুলো, বিশেষ করে বড় দলগুলো নির্বাচনী প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে। সম্ভাব্য প্রার্থীরা তৎপরতা শুরু করেছেন নিজ নিজ এলাকায়। প্রধান বিরোধী রাজনৈতিক দল বিএনপির নির্বাচনেচ্ছু নেতারাও প্রস্তুতি নিচ্ছেন, এলাকায় তৎপর রয়েছেন।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সব দলের অংশগ্রহণে করার জন্য নির্বাচন কমিশন তৎপর রয়েছে। এরই মধ্যে রাজনৈতিক দল, সুধীসমাজ ও বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে সংলাপ সম্পন্ন করেছে তারা। এখন সব মতের সমন্বয় করে নির্বাচন অনুষ্ঠানের আয়োজন চূড়ান্ত করার পালা। নির্বাচনের কারিগরি ও কৌশলগত বিভিন্ন বিষয় নির্বাচন কমিশনই চূড়ান্ত করতে পারবে।

তাদের মূল কাজ সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনের পরিবেশ নিশ্চিত করা। কিন্তু নির্বাচনে দলগুলোর অংশগ্রহণ করার সিদ্ধান্ত দলগুলোকেই নিতে হবে, সে দায় কমিশনের নয়। সমস্যাটি এখানেই। নিবন্ধন বিধিমালা অনুযায়ী অংশগ্রহণ না করলে রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া যায়, কিন্তু অংশগ্রহণে বাধ্য করা যায় না। যদিও নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক না হলে দায় কমিশনের ঘাড়েই বর্তাবে। ফলে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠান কমিশনের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।

চ্যালেঞ্জ বড় দলগুলোর জন্যও। আওয়ামী লীগ ও তার জোটসঙ্গীদের চ্যালেঞ্জ হলো ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য জনসমর্থন আদায় করা এবং নির্বাচনী প্রক্রিয়ার গ্রহণযোগ্যতা নিশ্চিত করার জন্য রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা। বিএনপির জন্য চ্যালেঞ্জ হলো দলীয় অস্তিত্ব সংহত করা। মাঠের রাজনীতিতে এখনো প্রধান বিরোধী দলের স্বীকৃতি থাকলেও সংসদীয় পরিমণ্ডলে দলটি প্রতিনিধিত্বহীন। রাষ্ট্রাচারে তাদের কোনো জায়গা নেই। আগামী নির্বাচনে অংশ না নিলে নির্বাচন কমিশনে তাদের নিবন্ধন বাতিল হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এতে সমস্যা আরো বাড়বে। নির্বাচন নিয়ে দোলাচল এখনো রয়েছে। তবে বিপাকে না পড়লে হঠকারী সিদ্ধান্ত বিএনপি নেবে না বলে জানা গেছে।

সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানে কিছু বাধা দেখতে পাচ্ছে অন্যান্য রাজনৈতিক দলও। নির্বাচনী প্রক্রিয়া ও সরকারের আন্তরিকতার ব্যাপারে তাদের মধ্যে সংশয় রয়েছে। বামপন্থী দলগুলো মনে করে, সবচেয়ে বড় বাধা অর্থনৈতিক বৈষম্য। অর্থের খেলা বন্ধ না হলে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব হবে না। নির্বাচনকালে সরকার ও নির্বাচন কমিশনের এখতিয়ার নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে। বড় দুই দল নিজ অবস্থানে অনড় থাকলে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন করা অসম্ভব। তাই নির্বাচন গ্রহণযোগ্য করার জন্য নির্বাচন কমিশনকে যেমন উপায় বের করতে হবে তেমনি সব দলকে অংশগ্রহণে আন্তরিক হতে হবে।