ঢাকা ০৩:২৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

হারিয়ে যাচ্ছে দেশীয় প্রজাতির মাছ

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১১:৪৫:৩৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৩ জুলাই ২০১৭
  • ৭১০ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ কিশোরগঞ্জের হাওর অঞ্চল উপজেলায় দেশীয় প্রজাতির মাছ বিলুপ্ত হতে চলেছে। এক সময়ে এ উপজেলার দেশীয় মাছ স্থানীয় চাহিদা পূরণ করে জাতীয় পর্যায়ে বাজারজাতসহ বিদেশেও রপ্তানি করা হতো। এখন আর তা হয় না বললেই চলে। নদীর নাব্যতা হ্রাস, খাল-বিল ভরাট করে কৃষি ক্ষেত-বাড়িঘর তৈরি, জমিতে কীটনাশকের ব্যবহারের কারণে দেশীয় প্রজাতীর মাছ বিলুপ্ত হতে বসেছে।
স্থানীয় জেলেরা বলেন, হাওর এ উপজেলা থেকে ৫০ প্রজাতির দেশীয় মাছ বিলুপ্ত হয়ে গেছে এবং বিভিন্ন প্রজাতির মাছ বিলুপ্তির পথে। এক সময়ে দেশের মৎস্য ভা-ার হিসেবে পরিচিত হাওর উপজেলা। অগণিত নদী বিল-হাওর-খালে পরিপূর্ণ ছিল। মিঠা পানিতে পরিপূর্ণ এ উপজেলায় প্রায় ২৫০ প্রজাতির দেশীয় মাছ পাওয়া যেত। মূলত নদীগুলোর নাব্যতা হ্রাস, খাল-বিল ভরাট করে কৃষি ক্ষেত-বাড়িঘর তৈরি, জলমহালগুলোতে ইজারাদারদের স্বেচ্ছাচারিতা, মাছের অভয় আশ্রয়স্থলের পার্শ্ববর্তী জমিগুলোতে কীটনাশকের ব্যবহারে মৎস্য সম্পদ উজাড় হয়ে গেছে। এছাড়াও অপরিকল্পিতভাবে বাঁধ নির্মাণ করে মাছের চলাচলে বাধা সৃষ্টি, সেচপ্রকল্প বাস্তবায়ন, মাছ আহরণ কারেন্ট জাল মশারি জালে রেণুপোনা ও মাছ ধরার কারণে এ অঞ্চলের মৎস্য সম্পদ ধ্বংস হয়ে গেছে।

বিলুপ্ত হওয়া প্রধান মাছগুলোর মধ্যে রয়েছে নানিদ মাছ, মাশুল মাছ, পাঙ্গাশ মাছ, টাকা মাছ, কৈ মাছ, মাগুর মাছ, শিং মাছ, বাতাসী মাছ, গুং মাছ, রানী মাছ, পান মাছ, মৃগা মাছ, রিডা মাছ, খৈলিশা মাছ, বৈচা মাছ, কানলা মাছ, বামট মাছ, পাপদা মাছ, চেং মাছ, বাঘাইর মাছ, বেংরা মাছ, সিলুন মাছ, খল্লা মাছ, লাচ মাছ, এলগন মাছ, রামচেলা মাছ, গিলাকানি নাপিত মাছ ও গলদা চিংড়ি। এছাড়াও বিলুপ্তির পথে প্রধান মাছগুলোর মধ্যে রয়েছে ইলিশ মাছ, মলা মাছ, রুই মাছ, কাতলা মাছ, বজরি মাছ, হালনী মাছ, ডান কানা মাছ, গুতুম মাছ, স্বরপুটি মাছ, চান্দা মাছ, ডিমা চিংড়ি, বাইম মাছ ও মেনি মাছ। নদী ও হাওরে দেশীয় প্রজাতির মাছ মাঝে মধ্যে পাওয়া গেলে দাম বেশি হওয়ায় সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে। খামারের মাছের দাম আনুপাতিক হারে কম।
এ ব্যাপারে একাধিক মাছ বিক্রেতা জানান, দেশীয় প্রজাতির মাছ খুবই কম পাওয়া যায় এবং দাম বেশি। এছাড়াও ফড়িয়া ব্যাপারীরা নদী ও হাওর থেকে এগুলো কিনে ভৈরব, কুলিয়ারচর, আশুগঞ্জ, হবিগঞ্জ চালান করে দেয়। পরে তা ঢাকা, চিটাগাংসহ জাতীয় পর্যায়ে বাজারজাত করা হয়।
এ বছর দেশীয় প্রজাতির বিভিন্ন ধরনের মাছ হাওরে ছাড়া হয়েছে।
দেশীয় মাছের সংরক্ষণের জন্য বিভিন্ন পুকুরে মাছের পরিচর্যার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

হারিয়ে যাচ্ছে দেশীয় প্রজাতির মাছ

আপডেট টাইম : ১১:৪৫:৩৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৩ জুলাই ২০১৭

হাওর বার্তা ডেস্কঃ কিশোরগঞ্জের হাওর অঞ্চল উপজেলায় দেশীয় প্রজাতির মাছ বিলুপ্ত হতে চলেছে। এক সময়ে এ উপজেলার দেশীয় মাছ স্থানীয় চাহিদা পূরণ করে জাতীয় পর্যায়ে বাজারজাতসহ বিদেশেও রপ্তানি করা হতো। এখন আর তা হয় না বললেই চলে। নদীর নাব্যতা হ্রাস, খাল-বিল ভরাট করে কৃষি ক্ষেত-বাড়িঘর তৈরি, জমিতে কীটনাশকের ব্যবহারের কারণে দেশীয় প্রজাতীর মাছ বিলুপ্ত হতে বসেছে।
স্থানীয় জেলেরা বলেন, হাওর এ উপজেলা থেকে ৫০ প্রজাতির দেশীয় মাছ বিলুপ্ত হয়ে গেছে এবং বিভিন্ন প্রজাতির মাছ বিলুপ্তির পথে। এক সময়ে দেশের মৎস্য ভা-ার হিসেবে পরিচিত হাওর উপজেলা। অগণিত নদী বিল-হাওর-খালে পরিপূর্ণ ছিল। মিঠা পানিতে পরিপূর্ণ এ উপজেলায় প্রায় ২৫০ প্রজাতির দেশীয় মাছ পাওয়া যেত। মূলত নদীগুলোর নাব্যতা হ্রাস, খাল-বিল ভরাট করে কৃষি ক্ষেত-বাড়িঘর তৈরি, জলমহালগুলোতে ইজারাদারদের স্বেচ্ছাচারিতা, মাছের অভয় আশ্রয়স্থলের পার্শ্ববর্তী জমিগুলোতে কীটনাশকের ব্যবহারে মৎস্য সম্পদ উজাড় হয়ে গেছে। এছাড়াও অপরিকল্পিতভাবে বাঁধ নির্মাণ করে মাছের চলাচলে বাধা সৃষ্টি, সেচপ্রকল্প বাস্তবায়ন, মাছ আহরণ কারেন্ট জাল মশারি জালে রেণুপোনা ও মাছ ধরার কারণে এ অঞ্চলের মৎস্য সম্পদ ধ্বংস হয়ে গেছে।

বিলুপ্ত হওয়া প্রধান মাছগুলোর মধ্যে রয়েছে নানিদ মাছ, মাশুল মাছ, পাঙ্গাশ মাছ, টাকা মাছ, কৈ মাছ, মাগুর মাছ, শিং মাছ, বাতাসী মাছ, গুং মাছ, রানী মাছ, পান মাছ, মৃগা মাছ, রিডা মাছ, খৈলিশা মাছ, বৈচা মাছ, কানলা মাছ, বামট মাছ, পাপদা মাছ, চেং মাছ, বাঘাইর মাছ, বেংরা মাছ, সিলুন মাছ, খল্লা মাছ, লাচ মাছ, এলগন মাছ, রামচেলা মাছ, গিলাকানি নাপিত মাছ ও গলদা চিংড়ি। এছাড়াও বিলুপ্তির পথে প্রধান মাছগুলোর মধ্যে রয়েছে ইলিশ মাছ, মলা মাছ, রুই মাছ, কাতলা মাছ, বজরি মাছ, হালনী মাছ, ডান কানা মাছ, গুতুম মাছ, স্বরপুটি মাছ, চান্দা মাছ, ডিমা চিংড়ি, বাইম মাছ ও মেনি মাছ। নদী ও হাওরে দেশীয় প্রজাতির মাছ মাঝে মধ্যে পাওয়া গেলে দাম বেশি হওয়ায় সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে। খামারের মাছের দাম আনুপাতিক হারে কম।
এ ব্যাপারে একাধিক মাছ বিক্রেতা জানান, দেশীয় প্রজাতির মাছ খুবই কম পাওয়া যায় এবং দাম বেশি। এছাড়াও ফড়িয়া ব্যাপারীরা নদী ও হাওর থেকে এগুলো কিনে ভৈরব, কুলিয়ারচর, আশুগঞ্জ, হবিগঞ্জ চালান করে দেয়। পরে তা ঢাকা, চিটাগাংসহ জাতীয় পর্যায়ে বাজারজাত করা হয়।
এ বছর দেশীয় প্রজাতির বিভিন্ন ধরনের মাছ হাওরে ছাড়া হয়েছে।
দেশীয় মাছের সংরক্ষণের জন্য বিভিন্ন পুকুরে মাছের পরিচর্যার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।