বাঁচার আর উপায় নাই মাছ ধরেই বাঁচতে চাই

হাওর বার্তা ডেস্কঃ ‘বাঁচার আর উপায় নাই, মাছ ধরেই বাঁচতে চাই’ স্লোগান নিয়ে  হাওরের ভাসান পানিতে অবাধে মাছ ধরার দাবিতে বিক্ষোভ ও সমাবেশ করেছেন হাওরের ফসলহারা লোকজন।

 হাওর এলাকার মানুষ একদিকে কৃষক, অন্যদিকে জেলে। বর্ষায় হাওরের ভাসান পানিতে মাছ ধরেই জীবিকা নির্বাহ করেন তাঁরা। কিন্তু এবার কোনো ফসল না পাওয়ায় হাওর এলাকার কৃষক ও জেলেরা নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন। অনাহারে-অর্ধাহারে দিন কাটাচ্ছেন তাঁরা। এ অবস্থায় হাওরে মাছ ধরা ছাড়া তাঁদের কোনো বিকল্প কাজ নেই। কিন্তু হাওরের ভাসান পানিতে মাছ ধরতে ইজারাদারের লোকজন নানাভাবে তাঁদের বাধা দিচ্ছেন। তাই এ বছর  সব হাওরের ইজারা বাতিল করে ফসলহারা জেলে-কৃষকদের অবাধে মাছ ধরার সুযোগ দিতে হবে।

এর আগে গত এপ্রিল মাসে একই দাবিতে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি দেন ‘হাওর বাঁচাও,  বাঁচাও আন্দোলন’ সংগঠনের সদস্যরা। হাওরের ফসল হারিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সোয়া তিন লাখ কৃষকপরিবার, কিন্তু সরকারিভাবে দেড় লাখ পরিবারকে প্রতিমাসে বিশেষ সহায়তা হিসেবে ৩০ কেজি চাল ও ৫০০ টাকা করে দেওয়া হচ্ছে। এই সহায়তার বাইরে আছেন আরও পৌনে দুই লাখ কৃষক। আগামী একটি বছর হাওরে মাছ ধরা ছাড়া তাঁদের চলার কোনো উপায় নেই। তাই ফসলহারা জেলে-কৃষকদের স্বার্থে সব জলমহালের ইজারা বাতিল এবং উন্মুক্ত জলমহালে তাঁদের অবাধে মাছ ধরার সুযোগ দেওয়ার দাবি জানিয়ে আসছি।’

জেলার উন্মুক্ত সব জলমহালে জেলে-কৃষকেরা মাছ ধরতে পারবেন। যেসব জলমহালের ইজারা হয়ে গেছে, সেগুলোর সীমানা নির্ধারণ করে দেওয়া হবে। এর বাইরে মাছ ধরতে কারও কোনো বাধা নেই। হাওরের ফসলহারা কৃষকদের স্বার্থে বিষয়টি প্রশাসন থেকে কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হবে।

 এবার ১৫৪টি হাওরে ২ লাখ ২৩ হাজার ৮২ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছিল। গত এপ্রিল মাসের অতিবৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে ফসল রক্ষা বাঁধ ভেঙে ১ লাখ ৬৬ হাজার ৬১২ হেক্টর জমির বোরো ধান তলিয়ে গেছে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে জেলার ৩ লাখ ২৫ হাজার ৯৯০টি কৃষকপরিবার।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর