ঢাকা ০৫:৪১ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
৫ বিসিএসে নিয়োগ পাবেন কতজন, জানালেন সিনিয়র সচিব শ্রেয়াসের রেকর্ড ৩০ মিনিটও টিকল না, আইপিএলের সবচেয়ে দামি পান্ত তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বহাল করার বিষয়ে সবাই একমত: বদিউল আলম সরকারি চাকরিতে ২২ হাজার নতুন নিয়োগের ঘোষণা আসছে অন্তরঙ্গ ছবি প্রকাশে বিয়ের দুদিনের মাথায় ফাঁস নেয়া সেই কলেজছাত্রীর মৃত্যু মিনা ফারাহ’র সঙ্গে জামায়াত আমিরের ফোনালাপ বাংলাদেশ-বেল‌জিয়াম রাজনৈতিক সংলাপ আজ অবশেষে জলবায়ু তহবিলে ৩০০ বিলিয়ন ডলার দিতে রাজি ধনী দেশগুলো গাজীপুরে কারখানা বন্ধের নোটিশ দেখে শ্রমিকদের বিক্ষোভ মিরপুরে গ্যাস সিলিন্ডার লিকেজ থেকে বিস্ফোরণ, নারী-শিশুসহ দগ্ধ ৭

নির্বাচনের পথ খুঁজছে বিএনপি

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৫:০১:৪৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৮ জুলাই ২০১৫
  • ৩১৩ বার

নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচনের দাবি থেকে এখনই সরে আসছে না বিএনপি। তবে দলটির নীতি নির্ধারকদের অনেকে ভবিষ্যতে যেকোনো ধরনের নির্বাচনে যাওয়ার পক্ষে। অবশ্য এখন পর্যন্ত এটি দলীয় অবস্থান নয়।
গত শনিবার রাতে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বলেছেন, আগামী নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনেই হতে হবে এমন নয়। যে নামেই হোক না কেন নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন হতে হবে।
খালেদা জিয়ার এ ধরনের বক্তব্য একেবারে নতুন নয়। গত বছরের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের আগে ২০১৩ সালের ১৬ অক্টোবর খালেদা জিয়া বলেছিলেন, ‘আমরা চাই অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচন। এর জন্য প্রয়োজন নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন। নাম যাই হোক, এর রূপরেখা হতে হবে নির্দলীয়।’
বিএনপির একাধিক সূত্র জানায়, বিএনপি আনুষ্ঠানিকভাবে এখনো নিরপেক্ষ সরকারের অধীনেই নির্বাচনের পক্ষে এবং শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত এ দাবিতে অনড় থাকতে চায় দলটি। খালেদা জিয়ার বক্তব্যটি ‘ট্যাকটিক্যাল’। এ মুহূর্তে হুট করে নির্দলীয় বা নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি থেকে সরে আসা দলের জন্য বিব্রতকর হবে। কারণ তখন প্রশ্ন দেখা দেবে, তাহলে ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে কেন বিএনপি গেল না, দুই দফা কেন আন্দোলন করল। এটি বিএনপির জন্য এক ধরনের রাজনৈতিক পরাজয়ও হবে। কিন্তু এখন যেভাবে চলছে তা দীর্ঘস্থায়ী হলে তাতে দলের অবস্থা কী হবে তা নিয়েও দুশ্চিন্তা আছে।
তবে বিএনপির নীতি নির্ধারণী পর্যায়ের দুজন নেতা প্রথম আলোর সঙ্গে আলাপকালে বলেছেন, যেকোনো ধরনের নির্বাচনে হলেই তাতে অংশগ্রহণ করা উচিত। তাঁরা মনে করেন, ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে বিএনপির না যাওয়াটা ভুল ছিল। বিএনপি এখন এর মাশুল দিচ্ছে। কারণ বিএনপি কর্মীনির্ভর, আন্দোলনমুখী দল নয়। বরং সমর্থক নির্ভর দল। এর মধ্যে দু দফায় আন্দোলন ব্যর্থ হয়েছে। ফলে ভবিষ্যতেও এ ধরনের সরকার-বিরোধী আন্দোলন সফল হবে, তেমন আশা সমর্থকদের মধ্যে তেমন জোরালো না। আর দীর্ঘদিন ক্ষমতার বাইরে থাকায় দলটিকে ভুগতে হচ্ছে। তাই এখন যেভাবে হোক তাড়াতাড়ি একটি নির্বাচন আদায় করাটা বিএনপির জন্য মঙ্গলজনক হবে বলে তাঁরা মনে করেন।
ওই দুই নেতার একজন বলেন, ভবিষ্যতে যেকোনো ধরনের নির্বাচনে যাওয়ার পক্ষে তাঁর অবস্থান থাকবে, তিনি দলীয় ফোরামে এ বিষয়ে সময়মতো সোচ্চার হওয়ারও চেষ্টা করবেন। কারণ তিনি মনে করেন, একটি গণতান্ত্রিক দলের কাছে প্রধান বিষয় হলো নির্বাচন। এখন মোটামুটি সুষ্ঠু নির্বাচন হলেও বিএনপি জিতবে। আর নির্বাচন সুষ্ঠু না হলে জনগণই তা দেখবে।
অবশ্য বিএনপির কোনো নেতা এখন পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকার করেননি যে, ৫ জানুয়ারি নির্বাচনে না যাওয়া ভুল ছিল। তবে এ নিয়ে দলের ভেতর নানা ধরনের আলোচনা আছে। গত ৫ মে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বক্তব্যেও তার ইঙ্গিত পাওয়া যায়। ওই দিন তিনি বলেন, ‘অনেকে বলেছেন, ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে বিএনপি অংশ নিলে জিতে যেত। আমাদের অনেক সহকর্মীও সেটা মনে করছেন। কিন্তু মানুষ খুনের মহিলা, সন্ত্রাসীর ওস্তাদ; তাঁর অধীনে কোনো সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে না। ’
২০১১ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল হওয়ার পর থেকে তা পুনর্বহালের দাবিতে আন্দোলন শুরু করে বিএনপি। পরবর্তীতে দাবিতে কিছু ছাড় দিয়ে ‘নির্দলীয় সরকারের’ অধীনে নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলন করে দলটি। এ দাবি পূরণ না হওয়ায় ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন বয়কট করে বিএনপি।
বিএনপির সূত্র জানায়, জাতিসংঘের বিশেষ দূত অস্কার ফার্নান্দেজ তারানকোর মধ্যস্থতায় ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে যাওয়ার বিষয়ে বিএনপি ইতিবাচকভাবে চিন্তা করছিল। আওয়ামী লীগের সঙ্গে আলোচনাও অনেক দূর এগিয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগের দুজন নেতার কারণে শেষ পর্যন্ত ওই মধ্যস্থতা ফলপ্রসূ হয়নি বলে বিএনপির দুটি সূত্র দাবি করেছে।
নির্বাচনকালীন সরকার প্রশ্নে দলের অবস্থান সম্পর্কে জানতে চাইলে বিএনপির মুখপাত্র আসাদুজ্জামান রিপন বলেন, বিএনপির চেয়ারপারসন বলেছেন, যে নামেই ডাকা হোক না কেন নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন হতে হবে। তিনি এও বলেছেন, আওয়ামী লীগের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। আসাদুজ্জামান বলেন, বিএনপি একটি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন চায়। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সংবিধানে এখন তত্ত্বাবধায়ক বা নির্দলীয় সরকারের কোনো বিধান নেই। বিএনপির হাতে বিকল্প প্রস্তাব আছে। সরকারের সঙ্গে আলোচনার পর্যায়ে গেলে প্রস্তাব তুলে ধরা হবে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

৫ বিসিএসে নিয়োগ পাবেন কতজন, জানালেন সিনিয়র সচিব

নির্বাচনের পথ খুঁজছে বিএনপি

আপডেট টাইম : ০৫:০১:৪৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৮ জুলাই ২০১৫

নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচনের দাবি থেকে এখনই সরে আসছে না বিএনপি। তবে দলটির নীতি নির্ধারকদের অনেকে ভবিষ্যতে যেকোনো ধরনের নির্বাচনে যাওয়ার পক্ষে। অবশ্য এখন পর্যন্ত এটি দলীয় অবস্থান নয়।
গত শনিবার রাতে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বলেছেন, আগামী নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনেই হতে হবে এমন নয়। যে নামেই হোক না কেন নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন হতে হবে।
খালেদা জিয়ার এ ধরনের বক্তব্য একেবারে নতুন নয়। গত বছরের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের আগে ২০১৩ সালের ১৬ অক্টোবর খালেদা জিয়া বলেছিলেন, ‘আমরা চাই অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচন। এর জন্য প্রয়োজন নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন। নাম যাই হোক, এর রূপরেখা হতে হবে নির্দলীয়।’
বিএনপির একাধিক সূত্র জানায়, বিএনপি আনুষ্ঠানিকভাবে এখনো নিরপেক্ষ সরকারের অধীনেই নির্বাচনের পক্ষে এবং শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত এ দাবিতে অনড় থাকতে চায় দলটি। খালেদা জিয়ার বক্তব্যটি ‘ট্যাকটিক্যাল’। এ মুহূর্তে হুট করে নির্দলীয় বা নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি থেকে সরে আসা দলের জন্য বিব্রতকর হবে। কারণ তখন প্রশ্ন দেখা দেবে, তাহলে ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে কেন বিএনপি গেল না, দুই দফা কেন আন্দোলন করল। এটি বিএনপির জন্য এক ধরনের রাজনৈতিক পরাজয়ও হবে। কিন্তু এখন যেভাবে চলছে তা দীর্ঘস্থায়ী হলে তাতে দলের অবস্থা কী হবে তা নিয়েও দুশ্চিন্তা আছে।
তবে বিএনপির নীতি নির্ধারণী পর্যায়ের দুজন নেতা প্রথম আলোর সঙ্গে আলাপকালে বলেছেন, যেকোনো ধরনের নির্বাচনে হলেই তাতে অংশগ্রহণ করা উচিত। তাঁরা মনে করেন, ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে বিএনপির না যাওয়াটা ভুল ছিল। বিএনপি এখন এর মাশুল দিচ্ছে। কারণ বিএনপি কর্মীনির্ভর, আন্দোলনমুখী দল নয়। বরং সমর্থক নির্ভর দল। এর মধ্যে দু দফায় আন্দোলন ব্যর্থ হয়েছে। ফলে ভবিষ্যতেও এ ধরনের সরকার-বিরোধী আন্দোলন সফল হবে, তেমন আশা সমর্থকদের মধ্যে তেমন জোরালো না। আর দীর্ঘদিন ক্ষমতার বাইরে থাকায় দলটিকে ভুগতে হচ্ছে। তাই এখন যেভাবে হোক তাড়াতাড়ি একটি নির্বাচন আদায় করাটা বিএনপির জন্য মঙ্গলজনক হবে বলে তাঁরা মনে করেন।
ওই দুই নেতার একজন বলেন, ভবিষ্যতে যেকোনো ধরনের নির্বাচনে যাওয়ার পক্ষে তাঁর অবস্থান থাকবে, তিনি দলীয় ফোরামে এ বিষয়ে সময়মতো সোচ্চার হওয়ারও চেষ্টা করবেন। কারণ তিনি মনে করেন, একটি গণতান্ত্রিক দলের কাছে প্রধান বিষয় হলো নির্বাচন। এখন মোটামুটি সুষ্ঠু নির্বাচন হলেও বিএনপি জিতবে। আর নির্বাচন সুষ্ঠু না হলে জনগণই তা দেখবে।
অবশ্য বিএনপির কোনো নেতা এখন পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকার করেননি যে, ৫ জানুয়ারি নির্বাচনে না যাওয়া ভুল ছিল। তবে এ নিয়ে দলের ভেতর নানা ধরনের আলোচনা আছে। গত ৫ মে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বক্তব্যেও তার ইঙ্গিত পাওয়া যায়। ওই দিন তিনি বলেন, ‘অনেকে বলেছেন, ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে বিএনপি অংশ নিলে জিতে যেত। আমাদের অনেক সহকর্মীও সেটা মনে করছেন। কিন্তু মানুষ খুনের মহিলা, সন্ত্রাসীর ওস্তাদ; তাঁর অধীনে কোনো সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে না। ’
২০১১ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল হওয়ার পর থেকে তা পুনর্বহালের দাবিতে আন্দোলন শুরু করে বিএনপি। পরবর্তীতে দাবিতে কিছু ছাড় দিয়ে ‘নির্দলীয় সরকারের’ অধীনে নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলন করে দলটি। এ দাবি পূরণ না হওয়ায় ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন বয়কট করে বিএনপি।
বিএনপির সূত্র জানায়, জাতিসংঘের বিশেষ দূত অস্কার ফার্নান্দেজ তারানকোর মধ্যস্থতায় ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে যাওয়ার বিষয়ে বিএনপি ইতিবাচকভাবে চিন্তা করছিল। আওয়ামী লীগের সঙ্গে আলোচনাও অনেক দূর এগিয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগের দুজন নেতার কারণে শেষ পর্যন্ত ওই মধ্যস্থতা ফলপ্রসূ হয়নি বলে বিএনপির দুটি সূত্র দাবি করেছে।
নির্বাচনকালীন সরকার প্রশ্নে দলের অবস্থান সম্পর্কে জানতে চাইলে বিএনপির মুখপাত্র আসাদুজ্জামান রিপন বলেন, বিএনপির চেয়ারপারসন বলেছেন, যে নামেই ডাকা হোক না কেন নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন হতে হবে। তিনি এও বলেছেন, আওয়ামী লীগের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। আসাদুজ্জামান বলেন, বিএনপি একটি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন চায়। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সংবিধানে এখন তত্ত্বাবধায়ক বা নির্দলীয় সরকারের কোনো বিধান নেই। বিএনপির হাতে বিকল্প প্রস্তাব আছে। সরকারের সঙ্গে আলোচনার পর্যায়ে গেলে প্রস্তাব তুলে ধরা হবে।