গত কয়েক দিনের টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে রৌমারী উপজেলার রৌমারী সদর ইউনিয়ন, বন্দবেড় ইউনিয়ন, যাদুরচর ইউনিয়ন, চরশৌলমারী,শৌলমারী ইউনিয়ন ও দাতঁভাঙ্গা ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল গুলো প্লাবিত হয়েছে। তলিয়ে গেছে শতাধিক হেক্টর ফসলি জমির ক্ষেত।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ঝাউবাড়ি, লাঠিয়ালডাঙ্গা, চুলিয়ারচর, বড়াইবাড়ি,চর বামনেরচর,ইছাকুড়ি আমবাড়ি সহ প্রায় প্রতিটি গ্রামে পানি প্রবেশ করেছে। ভারী বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলের পানি অস্বাভাবিক ভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় ওইসব এলাকার নিম্নাঞ্চল গুলো প্লাবিত হয়েছে।
কৃষক নূর ইসলাম বলেন,বৃষ্টির পানিতে আমার সব গুলো ধান তলিয়ে গেছে। খুব কষ্ট করে ধান কেটে যে ধান পেয়েছি তাও রোদ না থাকায় শুকানো অসম্ভব হওয়ায় ধানে গাছ গজিয়েছে। আবার যেটুকু ধান পেয়েছি তা আমার সারাবছর খাওয়ার জোগান দেবে না।
ইছাকুড়ি গ্রামের এক কৃষক বলেন, আমি ২ বিঘা জমিতে ধানের চাষ করছি। প্রতি বছর এই ধান দিয়ে আমার সংসার চলে। অন্য বছরের চেয়ে এবার বেশি বৃষ্টি হওয়ায় খালে পানি জমছে। তাই পাঁকা ধান সব তলিয়ে গিয়েছিল। ৯’শ টাকা করে শ্রমিক নিয়ে ধান কেটেছি।
রৌমারী ৪নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য শফিকুল ইসলাম বলেন, কয়েকদিনের টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে আমার এলাকার চর বামনের চর,রতনপুর, খাটিয়ামারী, মোল্লারচর,ব্যাপারী পাড়া,বোল্লা পাড়া ও নতুনবন্দর গ্রামের নীচু জমির ধান পানির নিচে তলিয়ে গেছে।
রৌমারী সদর ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক বলেন, টানা বৃষ্টিতে আমার ইউনিয়নের বেশি ভাগ গ্রামে বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলের পানি প্রবেশ করেছে। কৃষকদের চাষ করা নিম্নাঞ্চলের উঠতি ধান পানিতে ডুবে গেছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কাইয়ুম চৌধুরী জানান, এ বছর বোরা ধানের ফলনও ভালো হয়েছে। কিন্তু কয়েক দিনের টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে বিভিন্ন খাল-বিল ও নিম্নাঞ্চলে পানি প্রবেশ করে ক্ষতি সাধিত হয়েছে। নিম্নাঞ্চল গুলো প্লাবিত হওয়ায় ১৬৪ হেক্টর বোরা ধান, ৭ হেক্টর কাউন, ৪৪ হেক্টর শাকসবজি, ৯৪ হেক্টর পাট ১৪ হেক্টর তিল, ২ হেক্টর কলা পানিতে তলিয়ে গেছে। এ বছর ৯৫৫০ হেক্টর জমিতে ধান চাষাবাদ করা হয়। চলমান পরিস্থিতিতে আংশিক ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। তবে দ্রুত পানি শুকিয়ে গেলে তেমন একটা ক্ষতি হবেনা বলে ধারণা করা হচ্ছে।