ঢাকা ০৪:৩১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ জুন ২০২৫, ৩ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ছাত্রকে ২৩ সেকেন্ডে ২১ বেত্রাঘাত, সেই শিক্ষককে খুঁজছে পুলিশ

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৭:১০:৫৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৭ মে ২০২৫
  • ২২ বার

লক্ষ্মীপুরে ৮ বছর বয়সী এক মাদ্রাসা ছাত্রকে ২৩ সেকেন্ডে ২১ বার বেত্রাঘাতের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়ছে। এর পর থেকেই মো. মাসুম নামের ওই শিক্ষক পলাতক রয়েছেন। তবে তাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

আজ শনিবার দুপুর পর্যন্ত ওই শিক্ষকের সন্ধান দিতে পারেনি মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ। এমনকি তার মোবাইল নম্বরেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

অভিযুক্ত শিক্ষক মাসুম সদর উপজেলার ভবানীগঞ্জ ইউনিয়নের কালভার্ট এলাকার বাসিন্দা।

জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার সদর উপজেলার ভবানীগঞ্জ ইউনিয়নের আলীপুর নূরানি হাফেজিয়া মাদ্রাসায় ওই ছাত্রকে বেত্রাঘাতের ভিডিওটি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। এরপর শিক্ষক মো. মাসুম আত্মগোপনে চলে যান।

মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ জানায়, ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার ২-১ দিন আগেই ঘটনাটি ঘটেছে। শিক্ষক মাসুম নিজেই ভিডিওটি করেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। বৃহস্পতিবার ভিডিওটি ফেসবুকে ছড়িয়ে পরে। এরপর থেকে ওই শিক্ষক মাদ্রাসায় আসেন না।

অমানবিক ঘটনা ঘটানোর কারণে তাকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। তবে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে থানা পুলিশকে অভিযোগ করা হয়েছে বলে জানায় কর্তৃপক্ষ।

 

এদিকে ছাত্রকে বেত্রাঘাতের ভিডিওটি ন্যাটিজেনের মনে দাগ কেটেছে। আইনজীবী, শিক্ষকসহ বিভিন্ন পেশার লোকজন ভিডিওটি সংগ্রহ করে ফেসবুকে পোস্ট করে ওই শিক্ষকের বিচার দাবি করেছেন।

ভিডিওটি ৩৫ সেকেন্ডের ভিডিওতে দেখা যায়, প্রথম ২৩ সেকেন্ডেই শিশুটিকে ২১ বার বেত দিয়ে আঘাত করা হয়। পুরো ভিডিওটিতেই শিশুটি কানে ধরে ছিল। এ সময় শিক্ষক শিশুটিকে মারতে মারতে কান ধরে ওঠবস করাতে বলেন। তাতেও থামেনি মারধর।

এ বিষয়ে নির্যাতনের শিকার শিশুর পরিবারের বক্তব্য জানা যায়নি। এমনকি শিশুটির নাম-ঠিকানাও দেয়নি মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ। এ ছাড়া অভিযুক্ত শিক্ষক মাসুমের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করেও সংযোগ পাওয়া যায়নি।

তবে নাম প্রকাশ না করা শর্তে দুজন শিক্ষক জানায়, সোমবার (১২ মে) ঘটনাটি ঘটেছে। শিশুটি পড়ালেখায় অমনোযোগী থাকায় শিক্ষক মাসুম তাকে শাস্তি দিয়েছেন। মাসুম নিজেই অন্য এক শিক্ষার্থীকে দিয়ে ভিডিও করিয়েছেন। তবে কীভাবে ফেসবুকে তা ছড়িয়ে পড়েছে তা বলতে পারেনি কেউ।

 

এ ব্যাপারে মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সহ-সভাপতি আজমুল হুদা মিঠু বলেন, ‘শিক্ষকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য থানা পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। তাকে আমরা চাকিচ্যুত করেছি। বেত্রাঘাতের ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার পর থেকে তিনি মাদ্রাসায় অনুপস্থিত।’

সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবদুল মোন্নাফ সাংবাদিকদের বলেন, ঘটনাটি অমানবিক। মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছি। ওই শিক্ষককে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

এ ব্যাপারে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) রেজাউল হক বলেন, ‘ভিডিওটি আমার নজরে আসেনি। খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

ছাত্রকে ২৩ সেকেন্ডে ২১ বেত্রাঘাত, সেই শিক্ষককে খুঁজছে পুলিশ

আপডেট টাইম : ০৭:১০:৫৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৭ মে ২০২৫

লক্ষ্মীপুরে ৮ বছর বয়সী এক মাদ্রাসা ছাত্রকে ২৩ সেকেন্ডে ২১ বার বেত্রাঘাতের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়ছে। এর পর থেকেই মো. মাসুম নামের ওই শিক্ষক পলাতক রয়েছেন। তবে তাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

আজ শনিবার দুপুর পর্যন্ত ওই শিক্ষকের সন্ধান দিতে পারেনি মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ। এমনকি তার মোবাইল নম্বরেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

অভিযুক্ত শিক্ষক মাসুম সদর উপজেলার ভবানীগঞ্জ ইউনিয়নের কালভার্ট এলাকার বাসিন্দা।

জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার সদর উপজেলার ভবানীগঞ্জ ইউনিয়নের আলীপুর নূরানি হাফেজিয়া মাদ্রাসায় ওই ছাত্রকে বেত্রাঘাতের ভিডিওটি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। এরপর শিক্ষক মো. মাসুম আত্মগোপনে চলে যান।

মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ জানায়, ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার ২-১ দিন আগেই ঘটনাটি ঘটেছে। শিক্ষক মাসুম নিজেই ভিডিওটি করেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। বৃহস্পতিবার ভিডিওটি ফেসবুকে ছড়িয়ে পরে। এরপর থেকে ওই শিক্ষক মাদ্রাসায় আসেন না।

অমানবিক ঘটনা ঘটানোর কারণে তাকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। তবে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে থানা পুলিশকে অভিযোগ করা হয়েছে বলে জানায় কর্তৃপক্ষ।

 

এদিকে ছাত্রকে বেত্রাঘাতের ভিডিওটি ন্যাটিজেনের মনে দাগ কেটেছে। আইনজীবী, শিক্ষকসহ বিভিন্ন পেশার লোকজন ভিডিওটি সংগ্রহ করে ফেসবুকে পোস্ট করে ওই শিক্ষকের বিচার দাবি করেছেন।

ভিডিওটি ৩৫ সেকেন্ডের ভিডিওতে দেখা যায়, প্রথম ২৩ সেকেন্ডেই শিশুটিকে ২১ বার বেত দিয়ে আঘাত করা হয়। পুরো ভিডিওটিতেই শিশুটি কানে ধরে ছিল। এ সময় শিক্ষক শিশুটিকে মারতে মারতে কান ধরে ওঠবস করাতে বলেন। তাতেও থামেনি মারধর।

এ বিষয়ে নির্যাতনের শিকার শিশুর পরিবারের বক্তব্য জানা যায়নি। এমনকি শিশুটির নাম-ঠিকানাও দেয়নি মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ। এ ছাড়া অভিযুক্ত শিক্ষক মাসুমের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করেও সংযোগ পাওয়া যায়নি।

তবে নাম প্রকাশ না করা শর্তে দুজন শিক্ষক জানায়, সোমবার (১২ মে) ঘটনাটি ঘটেছে। শিশুটি পড়ালেখায় অমনোযোগী থাকায় শিক্ষক মাসুম তাকে শাস্তি দিয়েছেন। মাসুম নিজেই অন্য এক শিক্ষার্থীকে দিয়ে ভিডিও করিয়েছেন। তবে কীভাবে ফেসবুকে তা ছড়িয়ে পড়েছে তা বলতে পারেনি কেউ।

 

এ ব্যাপারে মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সহ-সভাপতি আজমুল হুদা মিঠু বলেন, ‘শিক্ষকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য থানা পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। তাকে আমরা চাকিচ্যুত করেছি। বেত্রাঘাতের ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার পর থেকে তিনি মাদ্রাসায় অনুপস্থিত।’

সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবদুল মোন্নাফ সাংবাদিকদের বলেন, ঘটনাটি অমানবিক। মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছি। ওই শিক্ষককে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

এ ব্যাপারে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) রেজাউল হক বলেন, ‘ভিডিওটি আমার নজরে আসেনি। খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’