ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে ময়না এসি বোস ইনস্টিটিউশনের প্রধান শিক্ষকসহ অন্যান্য শিক্ষকদের কক্ষে তালা দিয়ে অবরুদ্ধ করে শিক্ষার্থীরা। এক পর্যায়ে ওই কক্ষে ঢুকে প্রধান শিক্ষক মোকলেসুর রহমানের গায়েও হাত তুলে লাঞ্ছিত করে শিক্ষার্থীরা। প্রধান শিক্ষককে লাঞ্ছিত করার ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হলে নানা আলোচনা সমালোচনা শুরু হয়। তবে প্রাথমিকভাবে হামলাকারী শিক্ষার্থীর নাম পরিচয় জানা সম্ভব হয়নি।
গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় প্রধান শিক্ষক মোকলেসুর রহমান অরুণের ওপর হামলার ভিডিও ফেসবুক ছড়িয়ে পড়লে তা মুহুর্তের ভেতর ভাইরাল হয়ে যায়। এর আগে সকালের দিকে এ ঘটনা ঘটে। পরে ময়নার ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল হক মৃধা ও পুলিশের সহযোগিতায় শিক্ষকরা রুম থেকে বের হন। এ সময় শিক্ষার্থীরা ক্লাস বর্জন করে
বিদ্যালয় ও স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি স্কুলের দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগে প্রধান শিক্ষক মোকলেসুর রহমান অরুণের পদত্যাগের দাবিতে শিক্ষার্থীরা বোয়ালমারী মোহাম্মদপুর সড়ক অবরোধ করে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করে। গত ২৪ এপ্রিল শিক্ষার্থীরা প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে দুর্নীতিসহ বিভিন্ন অভিযোগ এনে লিখিত অভিযোগ দেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তানভীর হাসান চৌধুরীর কাছে। এর জের ধরে সোমবার সকালে স্কুলের শিক্ষকরা তাদের বসার কক্ষে গেলে শিক্ষার্থীরা বাইরে থেকে তালা দেয়। এক পর্যায়ে প্রধান শিক্ষকের রুমের মধ্যে শিক্ষার্থীরা প্রবেশ করে প্রধান শিক্ষকের গায়ে হাত তুলে লাঞ্ছিত করে। এ সময় শিক্ষার্থীরা প্রধান শিক্ষকের বিচার চেয়ে মিছিল করে এবং স্কুল বাউন্ডারির টিনের বেড়া ভাঙচুর করে।
শিক্ষকরা ময়না ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল হক মৃধা ও থানা পুলিশকে খবর দিলে তারা উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন এবং শিক্ষকদের উদ্ধার করেন।
বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক মৃধা আবুল হাশেম বলেন, ‘আমরা শিক্ষকরা রুমে ঢুকলে শিক্ষার্থীরা বাইরে থেকে তালা মেরে দেয়। প্রধান শিক্ষকের ওপর হামল চালায় তারা। কোনো উপায়ান্তর না পেয়ে ময়না ইউপি চেয়ারম্যানকে ফোন দিলে তিনি এসে তালা খুলে দেন।’
প্রধান শিক্ষক মোখলেসুর রহমান অরুণ বলেন, ‘স্কুলে গেলে শিক্ষার্থীরা শিক্ষকদের রুমে তালা মেরে অবরুদ্ধ করে ফেলে। আমার ওপর হামলা চালায় তারা। এ সময় তারা ক্লাস বর্জন করে।’
ময়না ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল হক মৃধা বলেন, ‘কয়েকজন শিক্ষক ফোন করে বলেন, শিক্ষার্থীরা তাদেরকে রুমে তালা দিয়ে আটকিয়ে রেখেছে। পরে স্কুলে গিয়ে দেখি শিক্ষকদের রুমে তালা দিয়ে অবরুদ্ধ করে রেখেছে শিক্ষার্থীরা। পুলিশ আর আমি (চেয়ারম্যান) শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলার পর রুমের তালা খুলে দেওয়া হয়।
বোয়ালমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদুল হাসান জানান, স্কুলে ঝামেলা হচ্ছে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। প্রধান শিক্ষকসহ সকল শিক্ষক ও কর্মচারীদের উদ্ধার করা হয়। এখন পরিবেশ শান্ত রয়েছে।
বিদ্যালয়ের সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তানভীর হাসান চৌধুরী বলেন, ‘স্কুলে একটু ঝামেলা হয়েছিল। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। কি কারণে এ ধরনের ঘটনা ঘটলো বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে।’