আজ পঁচিশে বৈশাখ বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬৪তম জন্মবার্ষিকী। এ উপলক্ষে আজ বৃহস্পতিবার কুষ্টিয়ার কুমারখালীর শিলাইদহ কুঠিবাড়িতে নানা আয়োজন করা হয়েছে। আজ থেকে সেখানে শুরু হচ্ছে কবির গান, কবিতা, শিল্প-সাহিত্য নিয়ে তিন দিনব্যাপী অনুষ্ঠান। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থাকবেন সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী।
কবিগুরুর জন্মবার্ষিকী ঘিরে পড়ন্ত বৈশাখের উৎসবে সেজেছে কুঠিবাড়ি। এরই মধ্যে কুঠিবাড়ি চত্বরে বসেছে গ্রামীণ মেলা। সেখানে হরেক রকমের পণ্যের পসরা সাজিয়েছেন দোকানিরা।
কবিগুরুর স্মৃতির সঙ্গে মিশে আছে শিলাইদহ কুঠিবাড়ি। জেলা শহর থেকে মাত্র ১৫ কিলোমিটার দূরে এটি অবস্থিত। প্রায় ১১ একর জায়গার ওপর স্থানটি দাঁড়িয়ে। পদ্মাতীরের ছায়াশীতল নিরিবিলি পরিবেশের কারণেই বিশ্বকবি বারবার এখানে ফিরে এসেছেন। এখানে বসেই কবি রচনা করেছেন কালজয়ী সব কাব্যগ্রন্থ, ছোটগল্প, নাটক ও উপন্যাস। যে গীতাঞ্জলি কাব্য রচনা করে কবি নোবেল জয় করেছিলেন, সেই কাব্যের অনেকটাই তিনি রচনা করেছিলেন শিলাইদহের কুঠিবাড়িতে বসে। বহু প্রতিভার অধিকারী এই কবি তাঁর আপন আলোয় উদ্ভাসিত হয়ে বাংলা সাহিত্য-সংস্কৃতিকে তুলে ধরেছিলেন বিশ্বদরবারে। পেয়েছিলেন বিশ্বকবির সম্মান। রবীন্দ্রনাথের স্মৃতিবিজড়িত কুঠিবাড়ি দেখতে দেশের নানা প্রান্ত থেকে মানুষ ছুটে আসে। গ্রামীণ ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর এই স্থান দেখে মুগ্ধ হন দর্শনার্থীরা।
প্রতিবছরই কবির জন্মবার্ষিকীতে শিলাইদহের কুঠিবাড়িতে বিশেষ আয়োজন হয়ে থাকে। বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠন ও দর্শনার্থীদের পদভারে মুখরিত থাকে কুঠিবাড়ির আঙিনা। এবারও তার ব্যত্যয় ঘটছে না। এবারের বিশ্বকবির জন্মবার্ষিকী উদ্যাপনের প্রস্তুতির সব কর্মকাণ্ড তদারক করেছে কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসন। নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সব ধরনের প্রস্তুতি চলমান রেখেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
এ বছর কুঠিবাড়ি চত্বরে স্থায়ীভাবে নির্মিত মঞ্চে কবিগুরুর গান, কবিতা ও শিল্প-সাহিত্য নিয়ে অনুষ্ঠান হবে। এতে অংশ নেবেন সাহিত্য সমালোচক ও দেশ-বিদেশের বরেণ্য রবীন্দ্রসংগীতশিল্পীরা। রবীন্দ্রসাহিত্য ও সুরের মূর্ছনায় কবির সাহিত্য ও ব্যক্তিজীবনের ছোঁয়া পাবেন এমন ধারণা ভক্ত-অনুরাগীদের।
শিলাইদহ রবীন্দ্র কুঠিবাড়ির কাস্টোডিয়ান আল-আমিন আজকের পত্রিকাকে জানান, সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে এবং কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে কুঠিবাড়িতে অনুষ্ঠিত হচ্ছে এই উৎসব। শিলাইদহ কুঠিবাড়ির পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতাসহ সব কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। আয়োজন সফল করতে কোনো ঘাটতি নেই।
কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোলাইমান শেখ জানান, অতিথি ও দর্শনার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সব ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
কুমারখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এস এম মিকাইল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বিরূপ আবহাওয়া নিয়ে শঙ্কা থাকলেও আয়োজনে নেই কোনো গড়িমসি। সবার সহযোগিতায় নির্বিঘ্নে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মবার্ষিকী উদ্যাপন করতে পারব।’