ঢাকা ০৪:৪৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৮ মে ২০২৫, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

গোপালভোগ-গোবিন্দভোগে সাতক্ষীরার আম মৌসুম শুরু

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৬:৩৫:০৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ৫ মে ২০২৫
  • ১৪ বার

চলতি মৌসুমে উৎসবমুখর পরিবেশে আম পাড়া শুরু করেছে সাতক্ষীরার ব্যবসায়ীরা। ফলে স্থানীয় বাজারগুলোতে আসতে শুরু করেছে দেশীয় প্রজাতির আম।

সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী আজ সোমবার থেকে জেলাব্যাপী গোপালভোগ, গোবিন্দভোগ, বোম্বাই ও গোলাপখাসসহ বিভিন্ন দেশীয় জাতের আম সংগ্রহ শুরু হয়েছে। পর্যায়ক্রমে সংগ্রহ করা হবে হিমসাগর, আম্রপালি ও ল্যাংড়া আম।

এদিন সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সাতক্ষীরা ফিংড়ী ইউনিয়নের বিল্লাল হোসেনের আম বাগান থেকে আম আহরণের মধ্য দিয়ে সাতক্ষীরা জেলায় আম সংগ্রহের উদ্বোধন করেন সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক মোস্তাক আহমেদ।

সাতক্ষীরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে জেলার ৪ হাজার ১৩৫ হেক্টর জমিতে আমের বাগান রয়েছে ৫ হাজারের অধিক। ১৩ হাজার চাষি আম চাষের সাথে জড়িত। এবার উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৬২ হাজার ৮০০ মেট্রিক টন। যার আনুমানিক বাজারমূল্য ৪০০ কোটি টাকা।

তবে বাজার ব্যবস্থাপনা নিয়ে ক্ষোভ জানিয়েছেন আম চাষি ও ব্যবসায়ীরা। তাদের অভিযোগ, সাতক্ষীরায় শুধুমাত্র একটি বড় বাজার থাকায় সবাইকে সেখানেই আম বিক্রি করতে হয়। ওই বাজারে সিন্ডিকেটের আধিপত্য সবসময় বিরাজমান। এতে চাষিরা যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হন, তেমনি আমসহ বাগান কিনেও ক্ষতিগ্রস্ত হন ব্যবসায়ীরা।

চাষিদের দাবি, কয়েকটি বাজার চালু হলে এবং খোলা মাঠে ভ্রাম্যমাণ পাইকারি বাজার বসলে ভালো দাম পাওয়া যেত। জেলা প্রশাসনের প্রতি এই বিষয়ে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানান তারা।

এরআগে গত ৩০ এপ্রিল সরকারি কর্মকর্তা ও আম ব্যবসায়ীদের নিয়ে মতবিনিময় সভায় জেলায় আম পাড়ার সময়সীমা নির্ধারণ করে দেয় জেলা প্রশাসন। সেখানে ৫ মে থেকে গোবিন্দভোগ, গোপালভোগ, বোম্বায়, ক্ষীরশাপাতি, গোলাপখাস ও বৈশাখীসহ অন্যান্য স্থানীয় জাতের আম সংগ্রত করতে পারবেন ব্যবসায়ীরা। ২০ মে হিমসাগর, ২৭ মে ল্যাংড়া ও ৫ জুন আম্রপালি আম সংগ্রহ করার নির্দেশনা দেওয়া হয়।

সাতক্ষীরা সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মনির হোসেন বলেন, ‘দেশে সাতক্ষীরার আম সবচেয়ে আগে পাকে। এই কারণে এর চাহিদাও সবচেয়ে বেশি। এ জেলার আমের স্বাদ অতুলনীয়।’

সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক মোস্তাক আহমেদ বলেন, ‘চলতি বছর প্রায় ৪০০ কোটি টাকার আম বিক্রি ও রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে কোনোভাবেই যেন কেমিক্যাল বা ক্ষতিকর পদার্থ ব্যবহার করে আম পাকানো না হয়, সে বিষয়ে কঠোর অবস্থানে রয়েছে প্রশাসন।’

বাজারে সিন্ডিকেটের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে জেলা প্রশাসক বলেন, ‘সিন্ডিকেট বলে কিছু থাকবে। জেলা প্রশাসন সিন্ডিকেট মুক্ত বাজার গড়তে সর্বোচ্চ ভূমিকা রাখবে।’

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

গোপালভোগ-গোবিন্দভোগে সাতক্ষীরার আম মৌসুম শুরু

আপডেট টাইম : ০৬:৩৫:০৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ৫ মে ২০২৫

চলতি মৌসুমে উৎসবমুখর পরিবেশে আম পাড়া শুরু করেছে সাতক্ষীরার ব্যবসায়ীরা। ফলে স্থানীয় বাজারগুলোতে আসতে শুরু করেছে দেশীয় প্রজাতির আম।

সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী আজ সোমবার থেকে জেলাব্যাপী গোপালভোগ, গোবিন্দভোগ, বোম্বাই ও গোলাপখাসসহ বিভিন্ন দেশীয় জাতের আম সংগ্রহ শুরু হয়েছে। পর্যায়ক্রমে সংগ্রহ করা হবে হিমসাগর, আম্রপালি ও ল্যাংড়া আম।

এদিন সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সাতক্ষীরা ফিংড়ী ইউনিয়নের বিল্লাল হোসেনের আম বাগান থেকে আম আহরণের মধ্য দিয়ে সাতক্ষীরা জেলায় আম সংগ্রহের উদ্বোধন করেন সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক মোস্তাক আহমেদ।

সাতক্ষীরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে জেলার ৪ হাজার ১৩৫ হেক্টর জমিতে আমের বাগান রয়েছে ৫ হাজারের অধিক। ১৩ হাজার চাষি আম চাষের সাথে জড়িত। এবার উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৬২ হাজার ৮০০ মেট্রিক টন। যার আনুমানিক বাজারমূল্য ৪০০ কোটি টাকা।

তবে বাজার ব্যবস্থাপনা নিয়ে ক্ষোভ জানিয়েছেন আম চাষি ও ব্যবসায়ীরা। তাদের অভিযোগ, সাতক্ষীরায় শুধুমাত্র একটি বড় বাজার থাকায় সবাইকে সেখানেই আম বিক্রি করতে হয়। ওই বাজারে সিন্ডিকেটের আধিপত্য সবসময় বিরাজমান। এতে চাষিরা যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হন, তেমনি আমসহ বাগান কিনেও ক্ষতিগ্রস্ত হন ব্যবসায়ীরা।

চাষিদের দাবি, কয়েকটি বাজার চালু হলে এবং খোলা মাঠে ভ্রাম্যমাণ পাইকারি বাজার বসলে ভালো দাম পাওয়া যেত। জেলা প্রশাসনের প্রতি এই বিষয়ে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানান তারা।

এরআগে গত ৩০ এপ্রিল সরকারি কর্মকর্তা ও আম ব্যবসায়ীদের নিয়ে মতবিনিময় সভায় জেলায় আম পাড়ার সময়সীমা নির্ধারণ করে দেয় জেলা প্রশাসন। সেখানে ৫ মে থেকে গোবিন্দভোগ, গোপালভোগ, বোম্বায়, ক্ষীরশাপাতি, গোলাপখাস ও বৈশাখীসহ অন্যান্য স্থানীয় জাতের আম সংগ্রত করতে পারবেন ব্যবসায়ীরা। ২০ মে হিমসাগর, ২৭ মে ল্যাংড়া ও ৫ জুন আম্রপালি আম সংগ্রহ করার নির্দেশনা দেওয়া হয়।

সাতক্ষীরা সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মনির হোসেন বলেন, ‘দেশে সাতক্ষীরার আম সবচেয়ে আগে পাকে। এই কারণে এর চাহিদাও সবচেয়ে বেশি। এ জেলার আমের স্বাদ অতুলনীয়।’

সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক মোস্তাক আহমেদ বলেন, ‘চলতি বছর প্রায় ৪০০ কোটি টাকার আম বিক্রি ও রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে কোনোভাবেই যেন কেমিক্যাল বা ক্ষতিকর পদার্থ ব্যবহার করে আম পাকানো না হয়, সে বিষয়ে কঠোর অবস্থানে রয়েছে প্রশাসন।’

বাজারে সিন্ডিকেটের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে জেলা প্রশাসক বলেন, ‘সিন্ডিকেট বলে কিছু থাকবে। জেলা প্রশাসন সিন্ডিকেট মুক্ত বাজার গড়তে সর্বোচ্চ ভূমিকা রাখবে।’