ঢাকা ০১:৩৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১০ জানুয়ারী ২০২৫, ২৭ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
ফেক ছবি শনাক্তে হোয়াটসঅ্যাপের নতুন ফিচার ফ্যাসিস্ট হাসিনার দোসর শামীম ওসমানের দাঁড়ি-গোফ যুক্ত ছবি ভাইরাল, যা বলছে ফ্যাক্টচেক ঢাকায় যানজট নিরসনে দ্রুত পদক্ষেপের নির্দেশ দিলেন প্রধান উপদেষ্টা চার-ছক্কা হাঁকানো ভুলে যাননি সাব্বির হজযাত্রীর সর্বনিম্ন কোটা নির্ধারণে মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্টতা নেই : ধর্ম উপদেষ্টা একাত্তরের ভূমিকার জন্য ক্ষমা না চেয়ে জামায়াত উল্টো জাস্টিফাই করছে: মেজর হাফিজ ‘আল্লাহকে ধন্যবাদ’ পিএইচডি করে ১৯ সন্তানের মা শমী কায়সারের ব্যাংক হিসাব তলব আগামী মাসের মধ্যে পাঠ্যপুস্তক সবাই হাতে পাবে : প্রেস সচিব নিক্কেই এশিয়াকে ড. মুহাম্মদ ইউনূস তিন মেয়াদে ভুয়া নির্বাচন মঞ্চস্থ করেছেন হাসিনা

রাতভর বৃষ্টিতে নোয়াখালীতে বানভাসিদের দুর্ভোগ

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৭:১৩:৫৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৫ অগাস্ট ২০২৪
  • ৩৭ বার

রাতভর অঝোরে বৃষ্টি হওয়ায় নোয়াখালীতে আবার পানি বেড়েছে। আগের দিন কোনো বৃষ্টি না হওয়ায় খুব ধীরগতিতে হলেও পানি কমতে ছিলো। আবার নতুন করে পানি বেড়ে যাওয়ায় ভোগান্তি বেড়েছে বানভাসিদের।

স্থানীয়রা জানান, গতকাল শনিবার (২৪ আগস্ট) সারাদিন বৃষ্টি না হওয়ায় একটু কমেছিলো পানি। কিন্তু মধ্যরাত থেকে আবার অঝোরে বৃষ্টি হওয়ায় নোয়াখালীতে বেড়ে গেছে পানির পরিমাণ। এতে নতুন করে আবার পানিবন্দিদের দুর্ভোগ বেড়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, নোয়াখালী জেলার ৯টি উপজেলার ৮টিই বন্যায় খুব বেশি আক্রান্ত । এর মধ্যে চারটি উপজেলায় নতুন করে আবার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় চরম ভোগান্তিতে রয়েছে এসব উপজেলার বাসিন্দারা। পানি একটু কমে যাওয়ার পর বাসিন্দারা যখন আশ্রয়কেন্দ্র থেকে বাড়ি ফেরার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন তখন আবার বৃষ্টিার কারণে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় তারা আবার উদ্বেগ ও অস্বস্তির মধ্যে পড়েছেন। অতিরিক্ত পানি থাকায় ত্রাণ বা খাদ্যবাহী গাড়ি যেতে পারছেনা গ্রামের আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে। ফলে এক প্রকার মানবেতর জীবন পার করছে প্রত্যন্ত অঞ্চলে বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে উঠা মানুষরা।

নোয়াখালী সরকারি মহিলা কলেজে আশ্রয় নেওয়া গৃহিনী আমেনা বেগম বলেন, শনিবার রোদ উঠায় পানি একটু কমেছিলো। কিন্তু রাতে আবার বৃষ্টি হওয়ায় পানি বেড়ে গেছে। এতে করে আমাদের বাড়ির কি অবস্থা তা জানতে পারছিনা। পানি বেড়ে যাওয়ায় এখান থেকে বের হতেও পারছিনা।

আরেকটি আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নেওয়া ইয়াসিন জানান, পরিবার নিয়ে নোয়াখালী সরকারি কলেজ কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছি। বিভিন্ন সংগঠন খাবার দিচ্ছে। সমস্যাও হচ্ছে না। তবে এভাবে কতদিন চলবে তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মধ্যবিত্ত শ্রেণির একজন বলেন, বন্যায় মধ্যবিত্তরা আছে বেশি বিপাকে। আমরা না পারছি কাউকে বলতে, না পারছি আবার হাত পাততে? আবার অফিস থেকে বারবার ফোন আসছে। কাজেও যেতে পারছিনা।একটা অনিশ্চয়তার ভিতরে আছি।

আনিসুর রহমান নামে একজন চাকরীজীবি বলেন, ঘরের ভিতরে পানি উঠায় পরিবার নিয়ে এক আত্মীয়ের বাসায় উঠেছি। সেখানে কতদিন থাকতে হবে জানিনা। রাতে বৃষ্টি হওয়ায় আবার নতুন করে পানি বেড়ে গেছে। ব্যাংকে চাকরি করি। বাধ্য হয়ে পানির সাথে যুদ্ধ করে অফিসে যাচ্ছি।

মোজাম্মেল হোসেন নামে আরেকজন বলেন, শহরে যে পরিমাণ পানি বেড়েছে তাতে গ্রামের কি অবস্থা জানিনা ? আমরা শহরে ভীষণ দুর্বিষহ জীবন পার করছি। বাজার নেই ঘরে। যোগাযোগ ব্যবস্থাও ভেঙ্গে পড়েছে। যানবাহন খুবই কম। ফলে পানি মাড়িয়ে কোথাও যাওয়া যাচ্ছে না।

জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান বলেন, রাতে বৃষ্টি হওয়ায় পানি বাড়ায় আবার নতুন করে সংকটে পড়েছে জেলাবাসী। এতে করে বন্যায় আক্রান্তদের সমস্যাও বেড়ে যাবে। এ পর্যন্ত ৮২৬টি আশ্রয়কেন্দ্রে দেড় লাখেরও বেশি মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে যা পাওয়া যাচ্ছে তা বাসভাসিদের দেওয়া হচ্ছে। এপর্যন্ত ১৮০০ মেট্রিকটন চাল, নগদ ৪৫ লাখ টাকা দেওয়া হয়েছে। কাজ করছে সেনাবাহিনী, বিভিন্ন সামাজিক, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও মানবতাবাদী সংগঠন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

ফেক ছবি শনাক্তে হোয়াটসঅ্যাপের নতুন ফিচার

রাতভর বৃষ্টিতে নোয়াখালীতে বানভাসিদের দুর্ভোগ

আপডেট টাইম : ০৭:১৩:৫৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৫ অগাস্ট ২০২৪

রাতভর অঝোরে বৃষ্টি হওয়ায় নোয়াখালীতে আবার পানি বেড়েছে। আগের দিন কোনো বৃষ্টি না হওয়ায় খুব ধীরগতিতে হলেও পানি কমতে ছিলো। আবার নতুন করে পানি বেড়ে যাওয়ায় ভোগান্তি বেড়েছে বানভাসিদের।

স্থানীয়রা জানান, গতকাল শনিবার (২৪ আগস্ট) সারাদিন বৃষ্টি না হওয়ায় একটু কমেছিলো পানি। কিন্তু মধ্যরাত থেকে আবার অঝোরে বৃষ্টি হওয়ায় নোয়াখালীতে বেড়ে গেছে পানির পরিমাণ। এতে নতুন করে আবার পানিবন্দিদের দুর্ভোগ বেড়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, নোয়াখালী জেলার ৯টি উপজেলার ৮টিই বন্যায় খুব বেশি আক্রান্ত । এর মধ্যে চারটি উপজেলায় নতুন করে আবার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় চরম ভোগান্তিতে রয়েছে এসব উপজেলার বাসিন্দারা। পানি একটু কমে যাওয়ার পর বাসিন্দারা যখন আশ্রয়কেন্দ্র থেকে বাড়ি ফেরার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন তখন আবার বৃষ্টিার কারণে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় তারা আবার উদ্বেগ ও অস্বস্তির মধ্যে পড়েছেন। অতিরিক্ত পানি থাকায় ত্রাণ বা খাদ্যবাহী গাড়ি যেতে পারছেনা গ্রামের আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে। ফলে এক প্রকার মানবেতর জীবন পার করছে প্রত্যন্ত অঞ্চলে বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে উঠা মানুষরা।

নোয়াখালী সরকারি মহিলা কলেজে আশ্রয় নেওয়া গৃহিনী আমেনা বেগম বলেন, শনিবার রোদ উঠায় পানি একটু কমেছিলো। কিন্তু রাতে আবার বৃষ্টি হওয়ায় পানি বেড়ে গেছে। এতে করে আমাদের বাড়ির কি অবস্থা তা জানতে পারছিনা। পানি বেড়ে যাওয়ায় এখান থেকে বের হতেও পারছিনা।

আরেকটি আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নেওয়া ইয়াসিন জানান, পরিবার নিয়ে নোয়াখালী সরকারি কলেজ কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছি। বিভিন্ন সংগঠন খাবার দিচ্ছে। সমস্যাও হচ্ছে না। তবে এভাবে কতদিন চলবে তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মধ্যবিত্ত শ্রেণির একজন বলেন, বন্যায় মধ্যবিত্তরা আছে বেশি বিপাকে। আমরা না পারছি কাউকে বলতে, না পারছি আবার হাত পাততে? আবার অফিস থেকে বারবার ফোন আসছে। কাজেও যেতে পারছিনা।একটা অনিশ্চয়তার ভিতরে আছি।

আনিসুর রহমান নামে একজন চাকরীজীবি বলেন, ঘরের ভিতরে পানি উঠায় পরিবার নিয়ে এক আত্মীয়ের বাসায় উঠেছি। সেখানে কতদিন থাকতে হবে জানিনা। রাতে বৃষ্টি হওয়ায় আবার নতুন করে পানি বেড়ে গেছে। ব্যাংকে চাকরি করি। বাধ্য হয়ে পানির সাথে যুদ্ধ করে অফিসে যাচ্ছি।

মোজাম্মেল হোসেন নামে আরেকজন বলেন, শহরে যে পরিমাণ পানি বেড়েছে তাতে গ্রামের কি অবস্থা জানিনা ? আমরা শহরে ভীষণ দুর্বিষহ জীবন পার করছি। বাজার নেই ঘরে। যোগাযোগ ব্যবস্থাও ভেঙ্গে পড়েছে। যানবাহন খুবই কম। ফলে পানি মাড়িয়ে কোথাও যাওয়া যাচ্ছে না।

জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান বলেন, রাতে বৃষ্টি হওয়ায় পানি বাড়ায় আবার নতুন করে সংকটে পড়েছে জেলাবাসী। এতে করে বন্যায় আক্রান্তদের সমস্যাও বেড়ে যাবে। এ পর্যন্ত ৮২৬টি আশ্রয়কেন্দ্রে দেড় লাখেরও বেশি মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে যা পাওয়া যাচ্ছে তা বাসভাসিদের দেওয়া হচ্ছে। এপর্যন্ত ১৮০০ মেট্রিকটন চাল, নগদ ৪৫ লাখ টাকা দেওয়া হয়েছে। কাজ করছে সেনাবাহিনী, বিভিন্ন সামাজিক, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও মানবতাবাদী সংগঠন।