দীর্ঘ জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রার্থী হচ্ছেন এই সিটির বর্তমান মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। রোববার নগরীতে মে দিবসের এক অনুষ্ঠানে বক্তব্যে এই বিএনপি নেতা বলেন, ‘কোন প্রেক্ষাপটে সিলেটের নির্বাচনে প্রার্থী হচ্ছি তা ২০ মে সমাবেশ করে স্পষ্ট করব। ’
তিনি বলেছেন, ‘অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে আগামী সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করবে না। তবে সিলেটের প্রেক্ষাপটে আমরা নির্বাচনে যাব’।
বর্তমান সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে অংশ না নেয়ার ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি। সিটি নির্বাচনও বর্জন করেছে দলটি। এ অবস্থায় বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আরিফুল হক নির্বাচনে প্রার্থী হবেন কী না তা নিয়ে শুরু থেকেই ধোঁয়াশা ছিল।
নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর আরিফুল হক লন্ডনে গিয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গেও দেখা করে আসেন। তবে প্রার্থী হওয়া-না হওয়া নিয়ে এতোদিন স্পষ্ট করে কিছু বলছিলেন না আরিফ। ফলে তাকে নিয়ে গুঞ্জন আরও বাড়ছিল। অবশেষে রোববার অনেকটা স্পষ্ট করেই প্রার্থী হওয়ার ইঙ্গিত দিলেন আরিফ।
মে দিবস উপলক্ষে রোববার দুপুরে নগরের রেজিস্টারি মাঠে জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল ও সহযোগী বিভিন্ন সংগঠনের শোভাযাত্রা এবং সমাবেশ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন আরিফুল হক চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘আমরা এখন অধিকার আদায়ের লড়াইয়ে আছি। অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে আগামী সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আমাদের দল (বিএনপি) অংশগ্রহণ করবে না। তবে সিলেটের প্রেক্ষাপটে আমরা নির্বাচনে যাব। ’
আরিফ বলেন, ‘বিএনপি কেন নির্বাচনে যাবে না তার ব্যাখ্যাসহ কারণ এবং কেন সিলেটের প্রেক্ষাপটে আমরা নির্বাচনে যাব- এ দুটি বিষয়ে জানাতে ২০ মে রেজিস্টারি মাঠে সমাবেশ আহ্বান করেছি। ওই সমাবেশে সবকিছু বিস্তারিত ব্যাখ্যা করে জনগণের কাছে তুলে ধরব। ’
এখন নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ইঙ্গিত দিলেও ইভিএমে ভোটগ্রহণের বিরোধিতা করছেন আরিফ।
সিলেট সিটি মেয়রের ভাষ্য, ‘ইভিএম দিয়ে নির্বাচিত প্রতিনিধিকে অনির্বাচিত করার সুযোগ রয়েছে। নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের সিদ্ধান্ত আসলে সরকারের প্রহসন। ইভিএমে পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিলেও- সে ভোট অন্য প্রার্থীর হয়ে যাবে। ’
নির্বাচন কমিশনের তফসিল অনুযায়ী, আগামী ২১ জুন সিলেট সিটি করপোরেশনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এই নির্বাচনে ভোটগ্রহণ পুরোপুরিই হবে ইভিএমে। নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রশাসনে ব্যাপক রদবদল করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
সিলেটে দীর্ঘ দিনের কাউন্সিলর পর আরিফ ২০১৩ সালে প্রথমবার মেয়র পদে নির্বাচন করে হারিয়ে দেন তখনকার মেয়র আওয়ামী লীগের বদরউদ্দিন আহমদ কামরানকে। ২০১৮ সালেও তিনি কামরানকে হারিয়ে মেয়র হন তিনি।
‘বাইরের’ কাউকে ছাড় দেবেন না আরিফ
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সিলেটে মেয়র প্রার্থী হিসেবে দলের যুক্তরাজ্য শাখার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীকে মনোনীত করেছে। তাকে ‘বাইরের’ ব্যক্তি আখ্যায়িত করে ঠেকানোর ঘোষণা দিয়েছেন মেয়র আরিফ।
সোমবারের জনসভায় তিনি বলেন, ‘বাইর থেকে এসে কেউ নেতৃত্ব দিয়ে আমাদেরকে তাদের দাস বানাতে পারবেন না। আমরা কারও দাস বনতে চাই না; আমাদেরকে রক্তচক্ষু দিয়ে ভয় দেখিয়ে লাভ হবে না। মানুষ ফুঁসে উঠেছে, আমাদের মা-বোনরা পর্যন্ত প্রতিবাদের জন্য নেমে আসবেন। ’