ঢাকা ০৯:৫২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

হাওরে বাড়ছে উজানের পানি, শঙ্কায় কৃষক

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০১:৫৪:০৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ এপ্রিল ২০২২
  • ১৫৮ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ পাহাড়ি ঢলে কিশোরগঞ্জের হাওরে বাড়ছে পানি।  গত ২৪ ঘণ্টায় হাওরের মেঘনা, কালনী ও কুশিয়ারা নদ-নদীর পানি বিপদসীমার কাছাকাছি অবস্থান করছে। এতে মাইকিং করে কৃষকদের দ্রুত ফসল কেটে নিতে কৃষকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে উপজেলা প্রশাসন।

এদিকে মঙ্গলবার (১৯ এপ্রিল) পর্যন্ত ফসল রক্ষা বাঁধগুলো অক্ষত থাকলেও পানি দ্রুত বাড়তে থাকায় আগাম বন্যার আশংকা করছেন কৃষকরা।

এদিকে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সর্বশেষ দেওয়া তথ‌্য অনুযায়ী, নেত্রকোনায় ধনু নদীর পানি বিপদ সীমার ২৭ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় কিশোরগঞ্জেও পানি বাড়ছে।

কৃষি বিভাগ বলছে, যদি কৃষকরা আর কয়েকটি দিন সময় পায় এবং হাওরের কোনো বাঁধ ভেঙে না যায় তাহলে কৃষকরা স্বত্বির নিঃশ্বাস ফেলতে পারবেন।

ইটনা হাওরের কৃষক আবুল কাশেম মিয়া  বলেন, ‘২০ কাঠা জমিতে ধান লাগাইছিলাম। অহনো ৫ কাঠা ধান পানির মইদ‌্যে আছে। তাই কাঁচা পাকা ধান সবই কাটা শুরু করছি। হাওরে পানি বাড়তাছে। পরে সময় না পাইলে, লোকসান গুনতে হইব। তাই ধান কাটা শুরু করছি।’

মিঠামইন হাওরের আরেক কৃষক রমজান আলী বলেন, ‘আমার এইহানো নদীর পাড়গুলিত পানি ঢুকা শুরু করছে। গত দুইদিনে পানি বাড়ছে।  তয় অহন পর্যন্ত কোনো বাঁধ ভাঙছেনা। তাই আমার ধানগুলি ভালোই আছে। কিন্তু কিছু জমি নদীর পাড়ে আছিল, হেইগুলি কিছুটা ডুবছে। যদি বেশি পানি না অয়, তাইলে হয়তো লোকসান হইতো না।’

তবে হাওরের অনেক কৃষকরা বলছেন, যদি বড় কোনো বন‌্যার ছোয়া না লাগে তাহলে হয়তো ক্ষতির পরিমাণটা খুব বেশি নাও হতে পারে। তবে গত কয়েকদিন ধরে নদ-নদীতে পানি বাড়াতে তারা চিন্তার মধ্যে আছেন।

কিশোরগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী  বলেন, সোমবার কিশোরগঞ্জের ইটনায় ধনু নদীর পানি বিপদসীমার ১ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হলেও মঙ্গলবার (১৯ মার্চ)  তা কমে বিপদ সীমার ৪ সেন্টিমিটার নিচে রয়েছে। হাওরের ৭৩টি বাঁধের সবকটি এখনো পর্যন্ত অক্ষত রয়েছে। তাছাড়া যে বাঁধগুলোতে কিছু সমস‌্যা ছিল সবগুলোই নতুনভাবে সংস্কার করা হয়েছে। আমরা প্রতিদিন বাঁধগুলো পর্যবেক্ষণ করছি এবং কৃষকদেরকেও আশ্বস্ত করছি, যেন ধান পাঁকলে দ্রুত সেগুলো তারা কেটে নেয়।’

কিশোরগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক  বলেন, ‘জেলার তিনটি হাওর অধ‌্যুষিত উপজেলা ইটনা, মিঠামইন, অষ্টগ্রামসহ অন‌্য এলাকায় চলতি মৌসুমে ১ লাখ ৩ হাজার ৯৪০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। মঙ্গলবার পর্যন্ত ৪০ ভাগ ধান কাটা সম্পন্ন হয়েছে। আমাদের প্রায় ২৫০টি কম্বাইন্ড হার্ভেস্টার ও ২২টি রিপার ধান কাটার কাজে ব্যাবহৃত হচ্ছে।  পাশাপাশি নিয়মিত-অনিয়মিত এবং বহিরাগত প্রায় ৭৯ হাজার শ্রমিক কাজ করছেন। আশা করছি, আর কয়েকটি দিন সময় পেলে কৃষকরা অন্তত তাদের ৮০ ভাগ ধান ঘরে তুলতে পারবেন। তবে যদি পানি বাড়তে থাকে তাহলে ফসল তোলা বড় চ্যালেঞ্জের কাজ হবে।’

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

হাওরে বাড়ছে উজানের পানি, শঙ্কায় কৃষক

আপডেট টাইম : ০১:৫৪:০৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ এপ্রিল ২০২২

হাওর বার্তা ডেস্কঃ পাহাড়ি ঢলে কিশোরগঞ্জের হাওরে বাড়ছে পানি।  গত ২৪ ঘণ্টায় হাওরের মেঘনা, কালনী ও কুশিয়ারা নদ-নদীর পানি বিপদসীমার কাছাকাছি অবস্থান করছে। এতে মাইকিং করে কৃষকদের দ্রুত ফসল কেটে নিতে কৃষকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে উপজেলা প্রশাসন।

এদিকে মঙ্গলবার (১৯ এপ্রিল) পর্যন্ত ফসল রক্ষা বাঁধগুলো অক্ষত থাকলেও পানি দ্রুত বাড়তে থাকায় আগাম বন্যার আশংকা করছেন কৃষকরা।

এদিকে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সর্বশেষ দেওয়া তথ‌্য অনুযায়ী, নেত্রকোনায় ধনু নদীর পানি বিপদ সীমার ২৭ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় কিশোরগঞ্জেও পানি বাড়ছে।

কৃষি বিভাগ বলছে, যদি কৃষকরা আর কয়েকটি দিন সময় পায় এবং হাওরের কোনো বাঁধ ভেঙে না যায় তাহলে কৃষকরা স্বত্বির নিঃশ্বাস ফেলতে পারবেন।

ইটনা হাওরের কৃষক আবুল কাশেম মিয়া  বলেন, ‘২০ কাঠা জমিতে ধান লাগাইছিলাম। অহনো ৫ কাঠা ধান পানির মইদ‌্যে আছে। তাই কাঁচা পাকা ধান সবই কাটা শুরু করছি। হাওরে পানি বাড়তাছে। পরে সময় না পাইলে, লোকসান গুনতে হইব। তাই ধান কাটা শুরু করছি।’

মিঠামইন হাওরের আরেক কৃষক রমজান আলী বলেন, ‘আমার এইহানো নদীর পাড়গুলিত পানি ঢুকা শুরু করছে। গত দুইদিনে পানি বাড়ছে।  তয় অহন পর্যন্ত কোনো বাঁধ ভাঙছেনা। তাই আমার ধানগুলি ভালোই আছে। কিন্তু কিছু জমি নদীর পাড়ে আছিল, হেইগুলি কিছুটা ডুবছে। যদি বেশি পানি না অয়, তাইলে হয়তো লোকসান হইতো না।’

তবে হাওরের অনেক কৃষকরা বলছেন, যদি বড় কোনো বন‌্যার ছোয়া না লাগে তাহলে হয়তো ক্ষতির পরিমাণটা খুব বেশি নাও হতে পারে। তবে গত কয়েকদিন ধরে নদ-নদীতে পানি বাড়াতে তারা চিন্তার মধ্যে আছেন।

কিশোরগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী  বলেন, সোমবার কিশোরগঞ্জের ইটনায় ধনু নদীর পানি বিপদসীমার ১ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হলেও মঙ্গলবার (১৯ মার্চ)  তা কমে বিপদ সীমার ৪ সেন্টিমিটার নিচে রয়েছে। হাওরের ৭৩টি বাঁধের সবকটি এখনো পর্যন্ত অক্ষত রয়েছে। তাছাড়া যে বাঁধগুলোতে কিছু সমস‌্যা ছিল সবগুলোই নতুনভাবে সংস্কার করা হয়েছে। আমরা প্রতিদিন বাঁধগুলো পর্যবেক্ষণ করছি এবং কৃষকদেরকেও আশ্বস্ত করছি, যেন ধান পাঁকলে দ্রুত সেগুলো তারা কেটে নেয়।’

কিশোরগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক  বলেন, ‘জেলার তিনটি হাওর অধ‌্যুষিত উপজেলা ইটনা, মিঠামইন, অষ্টগ্রামসহ অন‌্য এলাকায় চলতি মৌসুমে ১ লাখ ৩ হাজার ৯৪০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। মঙ্গলবার পর্যন্ত ৪০ ভাগ ধান কাটা সম্পন্ন হয়েছে। আমাদের প্রায় ২৫০টি কম্বাইন্ড হার্ভেস্টার ও ২২টি রিপার ধান কাটার কাজে ব্যাবহৃত হচ্ছে।  পাশাপাশি নিয়মিত-অনিয়মিত এবং বহিরাগত প্রায় ৭৯ হাজার শ্রমিক কাজ করছেন। আশা করছি, আর কয়েকটি দিন সময় পেলে কৃষকরা অন্তত তাদের ৮০ ভাগ ধান ঘরে তুলতে পারবেন। তবে যদি পানি বাড়তে থাকে তাহলে ফসল তোলা বড় চ্যালেঞ্জের কাজ হবে।’