হাওর বার্তা ডেস্কঃ উজান থেকে নেমে আসা ঢলে কিশোরগঞ্জের হাওর এলাকার আধা-পাকা ও কাঁচা বোরো ফসল পানির নিচে তলিয়ে যাচ্ছে। হুমকির মুখে পড়েছে বেশ কয়েকটি ফসল রক্ষা বাঁধ। হাওড় উপজেলা ইটনায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে মসজিদ-মাদ্রাসা থেকে মাইকিং করে কৃষকদের মাটি ভরাট করে বাঁধ রক্ষায় ডাকা হচ্ছে। এ অবস্থায় কোদাল এবং বাঁধ বাঁচাতে টিন-কাঠ ছুটছেন কৃষকরা।
জানা গেছে, শনিবার দুপুর থেকে এ পর্যন্ত উজান থেকে আসা পাহাড়ি ঢল ও বৃষ্টির পানিতে কিশোরগঞ্জের হাওড় উপজেলা ইটনার ধনপুর, মৃগা ও সদর ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকার চরাঞ্চলের বোরো ধান পানির নিচে তলিয়ে গেছে। ইটনা সদরের এরশাদ নগর, বড় বাজার, চিড়া গাঙ, বলদা ফেরিঘাট, কুলিভিটা এলাকার চরাঞ্চলের বিস্তীর্ণ এলাকার উঠতি আধা-পাকা ও কাঁচা ধানের জমি পানির নিচে তলিয়েছে।
পানির চাপে হুমকির মুখে রয়েছে জয়সিদ্ধির বাঁধ ও জিউল বাঁধ। স্থানীয় কৃষকদের সহযোগিতায় উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা বাঁধ রক্ষায় কাজ করছেন। ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোতে পরিস্থিতি মোকাবিলায় সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।
এদিকে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর ডুবে যাওয়া ধানের জমি ও এলাকা পরিদর্শন করে ক্ষয়ক্ষতি নিরুপণে কাজ করছে।
ইটনা সদর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান বলেন, ইতোমধ্যে শত শত হেক্টর বোরো ফসলের জমি পানির নিচে তলিয়ে গেছে। এ ছাড়া হালালের বাঁধ নামে ফসল রক্ষা বাঁধসহ জুর বিলের বাঁধ ও জিউলের বাঁধেও পাহাড়ি ঢলের প্রবল স্রোত আঘাত করছে। তিনি দাবি করেন, হালালের বাঁধে উপচে পানি প্রবেশ করতে পারলে এ উপজেলার সর্বনাশ হয়ে যাবে। নতুন করে মাটি ভরাট করে হালালের বাঁধসহ অন্যান্য বাঁধ রক্ষায় মসজিদ, মাদ্রাসা ও মক্তব থেকে মাইকিং করে বোরো চাষিদের এক হতে আহ্বান জানানো হচ্ছে।
ইটনা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বলেন, হঠাৎ করে পাহাড়ি ঢলে জমি তলিয়ে গেছে। আমরা ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধগুলো মেরামতের জন্য সম্মিলিতভাবে কাজ করছি।
কিশোরগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী বলেন, আমরা সময়মতো বাধঁ নির্মাণ প্রকল্পগুলো শেষ করায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কমবে। তারপরও সার্বক্ষণিক তদারকি চলছে। কোথাও ঝুঁকি দেখা দিলে লোকবলসহ আমরা প্রস্তুত আছি।
এদিকে কিশোরগঞ্জের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক বলেন, পাহাড়ি ঢল ও অকাল বন্যায় ইটনা হাওর উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকার উঠতি বোরো ফসল পানির নিচে তলিয়ে গেছে। তবে, এখন পর্যন্ত কী পরিমাণ ফসলি জমি তলিয়ে গেছে তা নিরুপণ করা সম্ভব হয়নি। যে সব ধান আশিভাগ পেকে গেছে সে সব ফসল দ্রুত কেটে ফেলার জন্য কৃষকদের অনুরোধ করছি। যদি কয়েকদিন বৃষ্টিহীন আবহাওয়া অব্যাহত থাকে তবে বড় কোনও ক্ষয়ক্ষতি হবে না বলে আশাবাদ জানান তিনি।