ঢাকা ১০:৩২ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

হাওরপাড়ে কনকনে শীতে দল বেঁধে চলছে গরুর পাল

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৩:০৬:১৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩০ জানুয়ারী ২০২২
  • ১৫২ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ চারদিকে সবুজের সমারোহ। রয়েছে আঁকাবাঁকা চলার মেঠোপথ। রাখালেরা সেই সরু পথে গরু নিয়ে যাচ্ছেন গন্তব্যে। কনকনে শীতে দল বেঁধে চলছে গরুর পাল। পথের দু প্রান্তে বিস্তৃত ফসলি জমি। এই ফসল যেনো নষ্ট না হয়, সে জন্য প্রতিটি গরুর মুখে আছে মুখবন্ধনী।

কিশোরগঞ্জ জেলার মিঠামইন উপজেলার  বৈরাটি ইউনিয়নের বাইঠারচর  হাওর অঞ্চলে। হাওরে এখন বৃদ্ধি পাচ্ছে গরু লালন পালন। কারো তিনটি কারো ছয়টি থেকে দশটি। বোরো চাষ, মাছ শিকার এর পাশাপাশি হাস-মোরগ গরু-ছাগল লালন পালনে ঝুঁকছে মানুষ।

কথা হয় রাখল বালক উসমান গুনির সঙ্গে। গরুগুলোকে হাওরের পতিত জমিতে ঘাস খাওয়ানো জন্য নিয়ে যাচ্ছেন।

তিনি জানান, হাওরে আসা যাওয়ার সময় রাস্তার দুপাশেই থাকে ফসলি জমি। এখানের প্রায় সব জমিতেই ধানের চারা রোপণ করা আছে। গরু নিয়ে এ পথে আসা যাওয়ার সময় রোপণকৃত চারাগাছ যেনো গরুগুলো খেয়ে নষ্ট না করে, সে জন্য প্রতিটি গরুর মুখে থাকে মুখবন্ধনী।

কথা হয় কৃষক মফিজ মিয়ার সঙ্গে, তিনি জানান, আমার আটটি  গরু রয়েছে কৃষি ক্ষেতের পাশাপাশি এগুলো লালনপালন করি, এতে করে আমার পরিবারে কিছু অতিরিক্ত আয় হয়।

জানা গেছে, আগে ধান মাড়াইয়ের সময় গরুদের মুখবন্ধনী পরানো হতো, যাতে খাবারের দিক মনোযোগ না দিয়ে ধান মাড়াইয়ে পাঁ চালাতে পারে তারা। যান্ত্রিক যুগে এখন গরু দিয়ে ধান মাড়াই দেওয়া নেই বললেই চলে। এর ফলে মুখবন্ধনীর ব্যবহার কমে গেছে। এখন শুধু হাওর অঞ্চলের কোন কোন বাড়িতে মুখবন্ধনী রাখা হয়, যারা দূরে গরুকে ঘাস খাওয়াতে নিয়ে যান। মুখবন্ধনী লাগানো থাকলে চলার পথে গরু আশপাশের ফসল খেতে পারে না।

এ এলাকার ইউনিয়নের সদস্য মজিব মেম্বার বলেন, বোরো চাষের ওপর হাওর এলাকার মানুষ নির্ভর শীল, পাশাপাশি বর্ষায় অনেকে মাছ শিকার করে বিক্রি করেন। বর্তমান এই এলাকায় প্রচুর হাস মোরগ ও গরু ছাগলের ছোট ছোট খামার রয়েছে। বিশেষ করে গরুর খামার বেশি। এই গরুগুলোকে ঘাস খাওয়াতে  পতিত জমি ও বাথানে নিয়ে  যান কৃষকরা।

বৈরাটি  ইউনিয়ন চেয়ারম্যান তাজুল ইসলাম বলেন, শীত-বর্ষায় হাওরে  দু’রকমে জীবন। শীত সব শুকনো থাকলেও বর্ষায় পানি। বর্ষায় গবাদিপশু একটা নির্দিষ্ট জায়গায় রেখে কচুরিপানা খাইয়ে বাচিয়ে রাখতে হয়। আর শুষ্ক মৌসুমে হাওরের উন্মুক্ত প্রান্তরে বিচরণ করিয়ে লালন পালন করা হয়।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

হাওরপাড়ে কনকনে শীতে দল বেঁধে চলছে গরুর পাল

আপডেট টাইম : ০৩:০৬:১৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩০ জানুয়ারী ২০২২

হাওর বার্তা ডেস্কঃ চারদিকে সবুজের সমারোহ। রয়েছে আঁকাবাঁকা চলার মেঠোপথ। রাখালেরা সেই সরু পথে গরু নিয়ে যাচ্ছেন গন্তব্যে। কনকনে শীতে দল বেঁধে চলছে গরুর পাল। পথের দু প্রান্তে বিস্তৃত ফসলি জমি। এই ফসল যেনো নষ্ট না হয়, সে জন্য প্রতিটি গরুর মুখে আছে মুখবন্ধনী।

কিশোরগঞ্জ জেলার মিঠামইন উপজেলার  বৈরাটি ইউনিয়নের বাইঠারচর  হাওর অঞ্চলে। হাওরে এখন বৃদ্ধি পাচ্ছে গরু লালন পালন। কারো তিনটি কারো ছয়টি থেকে দশটি। বোরো চাষ, মাছ শিকার এর পাশাপাশি হাস-মোরগ গরু-ছাগল লালন পালনে ঝুঁকছে মানুষ।

কথা হয় রাখল বালক উসমান গুনির সঙ্গে। গরুগুলোকে হাওরের পতিত জমিতে ঘাস খাওয়ানো জন্য নিয়ে যাচ্ছেন।

তিনি জানান, হাওরে আসা যাওয়ার সময় রাস্তার দুপাশেই থাকে ফসলি জমি। এখানের প্রায় সব জমিতেই ধানের চারা রোপণ করা আছে। গরু নিয়ে এ পথে আসা যাওয়ার সময় রোপণকৃত চারাগাছ যেনো গরুগুলো খেয়ে নষ্ট না করে, সে জন্য প্রতিটি গরুর মুখে থাকে মুখবন্ধনী।

কথা হয় কৃষক মফিজ মিয়ার সঙ্গে, তিনি জানান, আমার আটটি  গরু রয়েছে কৃষি ক্ষেতের পাশাপাশি এগুলো লালনপালন করি, এতে করে আমার পরিবারে কিছু অতিরিক্ত আয় হয়।

জানা গেছে, আগে ধান মাড়াইয়ের সময় গরুদের মুখবন্ধনী পরানো হতো, যাতে খাবারের দিক মনোযোগ না দিয়ে ধান মাড়াইয়ে পাঁ চালাতে পারে তারা। যান্ত্রিক যুগে এখন গরু দিয়ে ধান মাড়াই দেওয়া নেই বললেই চলে। এর ফলে মুখবন্ধনীর ব্যবহার কমে গেছে। এখন শুধু হাওর অঞ্চলের কোন কোন বাড়িতে মুখবন্ধনী রাখা হয়, যারা দূরে গরুকে ঘাস খাওয়াতে নিয়ে যান। মুখবন্ধনী লাগানো থাকলে চলার পথে গরু আশপাশের ফসল খেতে পারে না।

এ এলাকার ইউনিয়নের সদস্য মজিব মেম্বার বলেন, বোরো চাষের ওপর হাওর এলাকার মানুষ নির্ভর শীল, পাশাপাশি বর্ষায় অনেকে মাছ শিকার করে বিক্রি করেন। বর্তমান এই এলাকায় প্রচুর হাস মোরগ ও গরু ছাগলের ছোট ছোট খামার রয়েছে। বিশেষ করে গরুর খামার বেশি। এই গরুগুলোকে ঘাস খাওয়াতে  পতিত জমি ও বাথানে নিয়ে  যান কৃষকরা।

বৈরাটি  ইউনিয়ন চেয়ারম্যান তাজুল ইসলাম বলেন, শীত-বর্ষায় হাওরে  দু’রকমে জীবন। শীত সব শুকনো থাকলেও বর্ষায় পানি। বর্ষায় গবাদিপশু একটা নির্দিষ্ট জায়গায় রেখে কচুরিপানা খাইয়ে বাচিয়ে রাখতে হয়। আর শুষ্ক মৌসুমে হাওরের উন্মুক্ত প্রান্তরে বিচরণ করিয়ে লালন পালন করা হয়।