ঢাকা ১০:৪৮ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১০ জানুয়ারী ২০২৫, ২৭ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
ফেক ছবি শনাক্তে হোয়াটসঅ্যাপের নতুন ফিচার ফ্যাসিস্ট হাসিনার দোসর শামীম ওসমানের দাঁড়ি-গোফ যুক্ত ছবি ভাইরাল, যা বলছে ফ্যাক্টচেক ঢাকায় যানজট নিরসনে দ্রুত পদক্ষেপের নির্দেশ দিলেন প্রধান উপদেষ্টা চার-ছক্কা হাঁকানো ভুলে যাননি সাব্বির হজযাত্রীর সর্বনিম্ন কোটা নির্ধারণে মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্টতা নেই : ধর্ম উপদেষ্টা একাত্তরের ভূমিকার জন্য ক্ষমা না চেয়ে জামায়াত উল্টো জাস্টিফাই করছে: মেজর হাফিজ ‘আল্লাহকে ধন্যবাদ’ পিএইচডি করে ১৯ সন্তানের মা শমী কায়সারের ব্যাংক হিসাব তলব আগামী মাসের মধ্যে পাঠ্যপুস্তক সবাই হাতে পাবে : প্রেস সচিব নিক্কেই এশিয়াকে ড. মুহাম্মদ ইউনূস তিন মেয়াদে ভুয়া নির্বাচন মঞ্চস্থ করেছেন হাসিনা

গম চাষে আগ্রহ হারাচ্ছেন কৃষকরা

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০২:২১:২৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৭ জানুয়ারী ২০২১
  • ১৫২ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ পুষ্টিতে অনন্য, ভাতের পরই আমাদের দেশে যে খাদ্যটির চাহিদা বেশী সেটি হলো আটা ও ময়দা। আর এই আটা ও ময়দা আসে গম থেকে। তবে বিভিন্ন সমস্যা ও কম দামে বিক্রি হওয়ার কারণে দেশের অন্যান্য অঞ্চলের মতো গম চাষে  আগ্রহ হারাচ্ছেন সাতক্ষীরার তালা উপজেলার চাষিরাও। অথচ শীতকাল হচ্ছে গম ফলনের উপযুক্ত সময়। বিগত মৌসুমে দেশের বিভিন্ন এলাকায় গমের জমিতে ছত্রাকবাহী ‘ব্লাস্ট’ রোগের সংক্রমণ শুরু হয়। এ রোগের কোন প্রতিষেধক না থাকায় আক্রান্ত জমির গম অতি দ্রুতই নষ্ট হয়ে যায়। এমনকি কিছু জমির গম ক্ষেতে আগুনে পুড়িয়েও ফেলতে হয় এসব কারণে কৃষকরা পড়েছেন বিপাকে।

সরজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, মাটি আর বর্তমান আবহাওয়া উপযোগী না থাকায় ও উৎপাদন বৃদ্ধিসহ ফলন কম হওয়ার কারণে গম উপজেলায় মাত্র ১৭৫ হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে। কৃষকরা মনে করেন গম চাষের চেয়ে অন্য ফসল চাষ করে তুলনামূলকভাবে অনেক লাভ হয়। সে জন্য গমের পরিবর্তে অন্য ফসল চাষ করছেন। উপজেলার হাজরাকাটি, মহান্দী, হরিশ্চন্দ্রকাটী, খলিলনগর, দোহার, মাগুরা, জাতপুর, কলিয়া এলাকায় স্বল্প পরিসরে গমের চাষ দেখা গিয়েছে।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা শুভ্রাংশু শেখর দাশ জানান, তালা উপজেলায় ২০১৬ সালে ২০৫ হেক্টর জমিতে গম চাষ হয়েছিল। ২০১৭ সালে হয়েছিল ২০০ হেক্টর জমিতে। আর ২০১৮, ২০১৯ ও ২০২০ সালে ক্রমান্বয় তা কমে দাঁড়ায় ১৭৫ হেক্টর জমি। ক্রমান্বয়ে কমতে শুরু করেছে গম চাষ। তবে গমের আবাদ বাড়ানোর চেষ্টা করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।

হরিশ্চন্দ্রকাটী গ্রামের মো. ইসলাম হোসেন বলেন, তিনি ৩৩ শতক জমিতে কৃষি অফিসের পরামর্শ অনুযায়ী গম চাষ করেছেন। কৃষি অফিস থেকে বিনামূল্যে গমের বীজ পান তিনি। বর্তমানে ফসলের অবস্থাও খুব ভালো। আবহাওয়া স্বাভাবিক থাকলে ও ছত্রাকবাহী ‘ব্লাস্ট’ রোগের আক্রমণ না হলে ভালো ফলন পাবার আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

আরেক কৃষক মো. হাবিবুর রহমান বলেন, তিনি সরকারি সহযোগিতায় ১৫ শতক জমিতে গম চাষ করেছেন। জমিতে এসে ফসল দেখলে মনটা জুড়িয়ে যাচ্ছ। আগামী বছরও সরকারি সহযোগিতা পেলে তিনি আরও বেশি জমিতে গমের চাষ করবেন বলে জানান।

তবে আফজাল হোসেন নামের এক কৃষক বলেন, বর্তমানে বাজারে এক কেজি মোটা চাল বিক্রি হচ্ছে ৪২-৪৮ টাকা, এক কেজি আটা বিক্রি হচ্ছে মাত্র ২৫-২৬ টাকা। বাজারে আটার দাম কম থাকায় গমের আবাদ দিন দিন ছেড়ে দিচ্ছেন বলেও জানান তিনি।

তালা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হাজিরা খাতুন বলেন, সর্বশেষ তথ্য মতে এবার ১৭৫ হেক্টর জমিতে গম চাষ হয়েছে। আমরা প্রদর্শনী প্লট করে কিছু কিছু চাষিদের সার ও গমের বীজ বিনামূল্যে প্রদান করেছি। তাছাড়া এ বছরে গম চাষের উপর কৃষকের প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে। সরকারি সকল সুযোগ-সুবিধা কৃষকদের মাঝে প্রদান করা হবে বলে জানান তিনি।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

ফেক ছবি শনাক্তে হোয়াটসঅ্যাপের নতুন ফিচার

গম চাষে আগ্রহ হারাচ্ছেন কৃষকরা

আপডেট টাইম : ০২:২১:২৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৭ জানুয়ারী ২০২১

হাওর বার্তা ডেস্কঃ পুষ্টিতে অনন্য, ভাতের পরই আমাদের দেশে যে খাদ্যটির চাহিদা বেশী সেটি হলো আটা ও ময়দা। আর এই আটা ও ময়দা আসে গম থেকে। তবে বিভিন্ন সমস্যা ও কম দামে বিক্রি হওয়ার কারণে দেশের অন্যান্য অঞ্চলের মতো গম চাষে  আগ্রহ হারাচ্ছেন সাতক্ষীরার তালা উপজেলার চাষিরাও। অথচ শীতকাল হচ্ছে গম ফলনের উপযুক্ত সময়। বিগত মৌসুমে দেশের বিভিন্ন এলাকায় গমের জমিতে ছত্রাকবাহী ‘ব্লাস্ট’ রোগের সংক্রমণ শুরু হয়। এ রোগের কোন প্রতিষেধক না থাকায় আক্রান্ত জমির গম অতি দ্রুতই নষ্ট হয়ে যায়। এমনকি কিছু জমির গম ক্ষেতে আগুনে পুড়িয়েও ফেলতে হয় এসব কারণে কৃষকরা পড়েছেন বিপাকে।

সরজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, মাটি আর বর্তমান আবহাওয়া উপযোগী না থাকায় ও উৎপাদন বৃদ্ধিসহ ফলন কম হওয়ার কারণে গম উপজেলায় মাত্র ১৭৫ হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে। কৃষকরা মনে করেন গম চাষের চেয়ে অন্য ফসল চাষ করে তুলনামূলকভাবে অনেক লাভ হয়। সে জন্য গমের পরিবর্তে অন্য ফসল চাষ করছেন। উপজেলার হাজরাকাটি, মহান্দী, হরিশ্চন্দ্রকাটী, খলিলনগর, দোহার, মাগুরা, জাতপুর, কলিয়া এলাকায় স্বল্প পরিসরে গমের চাষ দেখা গিয়েছে।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা শুভ্রাংশু শেখর দাশ জানান, তালা উপজেলায় ২০১৬ সালে ২০৫ হেক্টর জমিতে গম চাষ হয়েছিল। ২০১৭ সালে হয়েছিল ২০০ হেক্টর জমিতে। আর ২০১৮, ২০১৯ ও ২০২০ সালে ক্রমান্বয় তা কমে দাঁড়ায় ১৭৫ হেক্টর জমি। ক্রমান্বয়ে কমতে শুরু করেছে গম চাষ। তবে গমের আবাদ বাড়ানোর চেষ্টা করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।

হরিশ্চন্দ্রকাটী গ্রামের মো. ইসলাম হোসেন বলেন, তিনি ৩৩ শতক জমিতে কৃষি অফিসের পরামর্শ অনুযায়ী গম চাষ করেছেন। কৃষি অফিস থেকে বিনামূল্যে গমের বীজ পান তিনি। বর্তমানে ফসলের অবস্থাও খুব ভালো। আবহাওয়া স্বাভাবিক থাকলে ও ছত্রাকবাহী ‘ব্লাস্ট’ রোগের আক্রমণ না হলে ভালো ফলন পাবার আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

আরেক কৃষক মো. হাবিবুর রহমান বলেন, তিনি সরকারি সহযোগিতায় ১৫ শতক জমিতে গম চাষ করেছেন। জমিতে এসে ফসল দেখলে মনটা জুড়িয়ে যাচ্ছ। আগামী বছরও সরকারি সহযোগিতা পেলে তিনি আরও বেশি জমিতে গমের চাষ করবেন বলে জানান।

তবে আফজাল হোসেন নামের এক কৃষক বলেন, বর্তমানে বাজারে এক কেজি মোটা চাল বিক্রি হচ্ছে ৪২-৪৮ টাকা, এক কেজি আটা বিক্রি হচ্ছে মাত্র ২৫-২৬ টাকা। বাজারে আটার দাম কম থাকায় গমের আবাদ দিন দিন ছেড়ে দিচ্ছেন বলেও জানান তিনি।

তালা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হাজিরা খাতুন বলেন, সর্বশেষ তথ্য মতে এবার ১৭৫ হেক্টর জমিতে গম চাষ হয়েছে। আমরা প্রদর্শনী প্লট করে কিছু কিছু চাষিদের সার ও গমের বীজ বিনামূল্যে প্রদান করেছি। তাছাড়া এ বছরে গম চাষের উপর কৃষকের প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে। সরকারি সকল সুযোগ-সুবিধা কৃষকদের মাঝে প্রদান করা হবে বলে জানান তিনি।