আগামী শনিবার ৯ জানুয়ারি ৭ দিনব্যাপী বৃহত্তর ময়মনসিংহ সাংস্কৃতিক উৎসবের উদ্বোধন। ঢাকার অফিসার্স ক্লাবে সকাল ১০টায় উৎসবের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন বাংলাদেশের মহামান্য রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন বৃহত্তর ময়মনসিংহ সমন্বয় পরিষদের চেয়ারম্যান ও প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব আবুল কালাম আজাদ।
এ উপলক্ষে আজ ৭ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় জাতীয় প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে বক্তব্য রাখেন উৎসব কমিটির চেয়ারম্যান বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ম. হামিদ। উপস্থিত ছিলেন সমন্বয় পরিষদের মহাসচিব রাশেদুল হাসান শেলী, ড. মোঃ নূরুল আলম তালুকদার, সাংবাদিক মোল্লা জালাল, প্রকৌশলী মুহাম্মদ ইউসুফ, লায়ণ নজরুল ইসলাম, অধ্যাপক শফিউদ্দিন প্রমুখ।
ম. হামিদ তার বক্তব্যে বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক অঙ্গণে এক ধরনের স্থবিরতা বিরাজ করছে। আমরা ক্রমাগতভাবে বিদেশী সংস্কৃতি নির্ভর হয়ে যাচ্ছি। এ অবস্থায় আমাদের নিজস্ব সংস্কৃতির ব্যাপক চর্চা প্রয়োজন। তিনি বলেন, ৭ দিনব্যাপী এই উৎসবের আয়োজক বৃহত্তর ময়মনসিংহ সমন্বয় পরিষদ ও সাংস্কৃতিক ফোরাম হলেও আয়োজনটি মূলত সারাদেশের জন্য। আমরা দেশের নতুন প্রজন্মকে আমাদের সংস্কৃতির শেকড়ের সন্ধান দিতে চাই।
তিনি বলেন, বর্তমানে ময়মনসিংহ একটি প্রশাসনিক বিভাগ হলেও, এক সময় একক জেলা হিসেবে এটি যেমন এ উপমহাদেশের মধ্যে সবচেয়ে বড় ছিল, তেমনি এর সাংস্কৃতিক পরিসরও ছিল অনেক ব্যাপক। কালক্রমে এখানে যে সব সাংস্কৃতিক কর্মকান্ড, সামাজিক রীতি-নীতি ও পালা-পার্বণের উদ্ভব হয়েছিল তার সংখ্যা নির্ণয়পূর্বক পরিপূর্ণ চিত্র প্রদান করা আদৌ সম্ভব নয়। এসবের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল নৌকা বাইচ, ষাঁড়ের লড়াই, ঘাটুগান, গাজির গান, পালাগান, কবিগান, মেয়েলি ও গাইনের গীত, জামাইষষ্ঠী, মঙ্গলাচরণ, বউবরণ, অন্নপ্রাশন ইত্যাদি। তাছাড়া বৃহত্তর ময়মনসিংহের বেশ কিছু এলাকায় আদিবাসীদের বসবাস থাকায় আমরা গারোদের ওয়ানগালা, হাজংদের দেওলি, বাস্তুপূজা, থুবাপূজা এসব সংস্কৃতিরও সাক্ষাৎ পেয়েছি। বাঙালি জাতি এ সমস্ত সংস্কৃতি ও সাংস্কৃতিক অভিব্যক্তির গর্বিত উত্তরাধিকার। কিন্তু তৎসত্ত্বেও নগর সংস্কৃতিতে লালিত-পালিত ও বেড়ে ওঠা বর্তমান তরুণ প্রজন্ম এ সম্পর্কে কতোটা জানে এবং কিভাবে তারা এ সংস্কৃতিকে ধারণ করেÑ সেটি এক প্রশ্ন। এ বোধ থেকেই আমরা দেশের নতুন প্রজন্মকে এ সংস্কৃতি সম্পর্কে সম্যক ধারণা প্রদানপূর্বক তাদেরকে এর সাথে সম্পৃক্ত করার মানসে এ উৎসবের আয়োজন করেছি।
এ উৎসব ১০ থেকে ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত চলবে বাংলাদেশ শিশু একাডেমীতে।