ঢাকা ০৫:৩৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১১ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

১০২ এজেন্সির ১৫ হাজার হজযাত্রীর কাগজে গরমিল

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১২:৩৬:১৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ জুন ২০১৫
  • ৩৮২ বার

হজযাত্রীদের পাসপোর্টের সঙ্গে মোয়াল্লেম ফি জমা দেওয়ার ব্যাংক কপির তথ্যে গরমিল থাকায় ১০২টি এজেন্সির হজযাত্রীদের কাগজপত্র যাচাই-বাছাইয়ের নির্দেশ দিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়।

অন্যদিকে পুলিশ ছাড়পত্র নেই এমন এজেন্সির হজযাত্রীদের মোয়াল্লেম ফি ফেরতসহ তাদের তালিকাও চেয়েছে মন্ত্রণালয়। এই গলদ কাগজপত্রের হজযাত্রী সংখ্যা প্রায় ১৫ হাজার বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।

সম্প্রতি পাসপোর্টের সঙ্গে মোয়াল্লেম ফি জমার ব্যাংকের কপির তথ্যে গড়মিলে ব্যবস্থা নিতে এবং পুলিশ ছাড়পত্র বিহীন হজযাত্রীদের তালিকা চেয়ে আশকোনা হজ অফিসের পরিচালকের কাছে দুইটি চিঠি দিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়।

মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, মোয়াল্লেম ফি জমার আগে ভ‍ুয়া নামে ডাটা এন্ট্রি এবং হজ ব্যবস্থাপনায় দুর্নীতির সুযোগ রাখায় এমনটি ঘটেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এছাড়া অভিযোগ রয়েছে হজ এজেন্সিগুলো মোয়াল্লেম ফি জমা দেওয়া যাত্রীদের নামে ডাটা রিপ্লেসের চেষ্টারও।

গত ১৩ জুন ১০২টি হজ এজেন্সির হজযাত্রীদের কাজগপত্র যাচাই-ব‍াছাই করে তিনদিনের মধ্যে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেয় ধর্ম মন্ত্রণালয়।

মন্ত্রণালয়ের সহকারী সচিব হাসিনা শিরীন স্বাক্ষরিত ওই চিঠিতে বলা হয়, ‘ঢাকা আইটি ডেস্ক কর্তৃপক্ষের নতুন বরাদ্দ করা ২৯৩টি হজ এজেন্সির মধ্যে ১৯১টির তালিকার কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে।

বাকি ১০২টি এজেন্সির অনুকূলে বরাদ্দ করা হজযাত্রীদের তালিকা অনুযায়ী পাসপোর্টের সঙ্গে জমাকৃত মোয়ালেম ফির ব্যাংক কপির কোনো মিল নেই। তিন কার্য দিবসের মধ্যে এসব হজযাত্রীদের কাগজপত্র যাচাই-বাছাইয়ের ব্যবস্থা নিতে নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।’

একই দিনে পাঠানো অপর চিঠিতে বলা হয়, ‘যেসব হজ এজেন্সির নির্ধারিত হজযাত্রীদের পুলিশ ছাড়পত্র সন্তোষজনক পাওয়া যায়নি, তাদের এজেন্টদের পুলিশ ছাড়পত্রের মাধ্যমে বাদ পড়া হজযাত্রীদের মোয়াল্লেম ফি ফেরত দেওয়ার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণসহ লাইসেন্স ওয়ারি তালিকা জরুরি ভিত্তিতে মন্ত্রণালয়ে পাঠানোর জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।’

সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, এ বছর বেসরকারি এজেন্সিগুলো ৯১ হাজার ৭৫৮ জনকে হজে পাঠাতে পারবে। সরকারি ব্যবস্থাপনায় আরও ১০ হাজারসহ এ বছর বাংলাদেশ থেকে মোট ১ লাখ ১ হাজার ৭৫৮ জনকে হজে পাঠানোর পরিকল্পনা রয়েছে।

তবে সরকারিভাবে ১০ হাজারের মাত্র ৩ হাজার পূরণ হওয়ায় বাকি ৭ হাজার বেসরকারি ব্যবস্থপনায় নেওয়অ হবে বলে জানায় সূত্র।

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, গত ২২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ১ হাজার ৪২৪টি হজ এজেন্সির অধীনে ৯১ হাজার ২৭ জনের নাম তালিকাভুক্তি করা হয়। ‍

এরপর ২৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে যারা তালিকাভুক্তি হয়েছেন সেসব হজযাত্রীর নামে মোয়াল্লেম ফি জমার নির্দেশ দেওয়া হয়। যদিও মোয়াল্লেম ফি জমা দেওয়ার  শেষ তারিখ ছিল ১ মার্চ।

অর্থাৎ তালিকাভুক্তির পরও মোয়াল্লেম ফি জমা দেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়। আবার মোয়াল্লেম ফিও জমা হয় অতিরিক্ত হজযাত্রীর নামে। মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব (হজ) হাসান জাহাঙ্গীরের ‘অবিবেচক’ কর্মকাণ্ডের জন্যই এ অব্যবস্থাপনা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

এ বিষয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে যুগ্ম সচিব হাসান জাহাঙ্গীর বলেন,‘কারিগরি ত্রুটির কারণেই এ অবস্থা স‍ৃষ্টি হয়েছে। এখনও সফটওয়ার ঠিকভাবে কাজ করছে না। আরও আপডেট করতে হবে।’

‘আরও ৭ হাজার হজযাত্রীকে বেসরকারি কোটায় ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে। যাদের ডাটা এখনও এন্ট্রি করা হয়নি তাদের মোয়াল্লেম ফি জমা নিয়ে সমতার ভিত্তিতে নতুন করে ডাটা এন্টি করা হবে,’ যোগ করেন তিনি।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

১০২ এজেন্সির ১৫ হাজার হজযাত্রীর কাগজে গরমিল

আপডেট টাইম : ১২:৩৬:১৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ জুন ২০১৫

হজযাত্রীদের পাসপোর্টের সঙ্গে মোয়াল্লেম ফি জমা দেওয়ার ব্যাংক কপির তথ্যে গরমিল থাকায় ১০২টি এজেন্সির হজযাত্রীদের কাগজপত্র যাচাই-বাছাইয়ের নির্দেশ দিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়।

অন্যদিকে পুলিশ ছাড়পত্র নেই এমন এজেন্সির হজযাত্রীদের মোয়াল্লেম ফি ফেরতসহ তাদের তালিকাও চেয়েছে মন্ত্রণালয়। এই গলদ কাগজপত্রের হজযাত্রী সংখ্যা প্রায় ১৫ হাজার বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।

সম্প্রতি পাসপোর্টের সঙ্গে মোয়াল্লেম ফি জমার ব্যাংকের কপির তথ্যে গড়মিলে ব্যবস্থা নিতে এবং পুলিশ ছাড়পত্র বিহীন হজযাত্রীদের তালিকা চেয়ে আশকোনা হজ অফিসের পরিচালকের কাছে দুইটি চিঠি দিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়।

মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, মোয়াল্লেম ফি জমার আগে ভ‍ুয়া নামে ডাটা এন্ট্রি এবং হজ ব্যবস্থাপনায় দুর্নীতির সুযোগ রাখায় এমনটি ঘটেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এছাড়া অভিযোগ রয়েছে হজ এজেন্সিগুলো মোয়াল্লেম ফি জমা দেওয়া যাত্রীদের নামে ডাটা রিপ্লেসের চেষ্টারও।

গত ১৩ জুন ১০২টি হজ এজেন্সির হজযাত্রীদের কাজগপত্র যাচাই-ব‍াছাই করে তিনদিনের মধ্যে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেয় ধর্ম মন্ত্রণালয়।

মন্ত্রণালয়ের সহকারী সচিব হাসিনা শিরীন স্বাক্ষরিত ওই চিঠিতে বলা হয়, ‘ঢাকা আইটি ডেস্ক কর্তৃপক্ষের নতুন বরাদ্দ করা ২৯৩টি হজ এজেন্সির মধ্যে ১৯১টির তালিকার কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে।

বাকি ১০২টি এজেন্সির অনুকূলে বরাদ্দ করা হজযাত্রীদের তালিকা অনুযায়ী পাসপোর্টের সঙ্গে জমাকৃত মোয়ালেম ফির ব্যাংক কপির কোনো মিল নেই। তিন কার্য দিবসের মধ্যে এসব হজযাত্রীদের কাগজপত্র যাচাই-বাছাইয়ের ব্যবস্থা নিতে নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।’

একই দিনে পাঠানো অপর চিঠিতে বলা হয়, ‘যেসব হজ এজেন্সির নির্ধারিত হজযাত্রীদের পুলিশ ছাড়পত্র সন্তোষজনক পাওয়া যায়নি, তাদের এজেন্টদের পুলিশ ছাড়পত্রের মাধ্যমে বাদ পড়া হজযাত্রীদের মোয়াল্লেম ফি ফেরত দেওয়ার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণসহ লাইসেন্স ওয়ারি তালিকা জরুরি ভিত্তিতে মন্ত্রণালয়ে পাঠানোর জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।’

সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, এ বছর বেসরকারি এজেন্সিগুলো ৯১ হাজার ৭৫৮ জনকে হজে পাঠাতে পারবে। সরকারি ব্যবস্থাপনায় আরও ১০ হাজারসহ এ বছর বাংলাদেশ থেকে মোট ১ লাখ ১ হাজার ৭৫৮ জনকে হজে পাঠানোর পরিকল্পনা রয়েছে।

তবে সরকারিভাবে ১০ হাজারের মাত্র ৩ হাজার পূরণ হওয়ায় বাকি ৭ হাজার বেসরকারি ব্যবস্থপনায় নেওয়অ হবে বলে জানায় সূত্র।

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, গত ২২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ১ হাজার ৪২৪টি হজ এজেন্সির অধীনে ৯১ হাজার ২৭ জনের নাম তালিকাভুক্তি করা হয়। ‍

এরপর ২৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে যারা তালিকাভুক্তি হয়েছেন সেসব হজযাত্রীর নামে মোয়াল্লেম ফি জমার নির্দেশ দেওয়া হয়। যদিও মোয়াল্লেম ফি জমা দেওয়ার  শেষ তারিখ ছিল ১ মার্চ।

অর্থাৎ তালিকাভুক্তির পরও মোয়াল্লেম ফি জমা দেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়। আবার মোয়াল্লেম ফিও জমা হয় অতিরিক্ত হজযাত্রীর নামে। মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব (হজ) হাসান জাহাঙ্গীরের ‘অবিবেচক’ কর্মকাণ্ডের জন্যই এ অব্যবস্থাপনা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

এ বিষয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে যুগ্ম সচিব হাসান জাহাঙ্গীর বলেন,‘কারিগরি ত্রুটির কারণেই এ অবস্থা স‍ৃষ্টি হয়েছে। এখনও সফটওয়ার ঠিকভাবে কাজ করছে না। আরও আপডেট করতে হবে।’

‘আরও ৭ হাজার হজযাত্রীকে বেসরকারি কোটায় ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে। যাদের ডাটা এখনও এন্ট্রি করা হয়নি তাদের মোয়াল্লেম ফি জমা নিয়ে সমতার ভিত্তিতে নতুন করে ডাটা এন্টি করা হবে,’ যোগ করেন তিনি।