‘বিশ্বকাপ কোয়ার্টার ফাইনালে ১৯ মার্চ ষড়যন্ত্র করে বাংলাদেশকে হারানোর পর অনেক কষ্ট পাইছিলাম। ওই দিন শুনছি জুনে বাংলাদেশ সফরে ভারত আসব। এরপর থেকে অপেক্ষা করছিলাম প্রতিশোধ নেওয়ার। আজ ভারতকে হারিয়ে বাংলাদেশ সেই প্রতিশোধ নিল। এই দিনের জন্য অপেক্ষা করছিলাম।’
বৃহস্পতিবার এক দিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচে ভারতকে ৭৯ রানে হারানোর পর টিএসসিতে দ্য রিপোর্টের কাছে এভাবেই নিজের উচ্ছ্বাস প্রকাশ করলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্সি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের অনার্স প্রথম বর্ষের ছাত্র জামি খুররম সাফি।
সাফি আরও বলেন, ‘টাইগারদের পারফরম্যান্সে আমরা মুগ্ধ। বিশেষ করে ওয়ানডে অভিষেক হওয়া মুস্তাফিজের বোলিংয়ে। আশা করছি, ভারতকে আগামী ম্যাচগুলোতে হারিয়ে টাইগাররা বাংলাওয়াশ করে কোয়ার্টার ফাইনালের ষড়যন্ত্রের জবাব দিবে।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শুধু সাফিই না- জগন্নাথ, বেসরকারি, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ও শ্রমজীবী মানুষের বাংলাদেশ জয়ের আনন্দ নিজেদের মধ্যে ভাগাভাগি করে নিয়েছেন। ছোট ছোট আনন্দ মিছিল করে যে যার মতো আনন্দ ভাগাভাগি করে নিয়েছেন। এই আনন্দ মিছিলে কে কোথায় পড়াশুনা করে সেই অহমিকা ছিল না। সবাই শুধু টাইগারদের জয়ের আনন্দ ভাগাভাগি করে নিয়েছেন নিজেদের ভঙ্গিমায়। একই সাথে প্রত্যাশা করেন, আগামীতে জয়ের ধারা অব্যাহত থাকবে।
১৯ বন্ধুকে সাথে নিয়ে টিএসসিতে আনন্দ মিছিলে যোগ দিতে আসা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের মাস্টার্সের ছাত্র শামসুল আরেফিন বলেন, ক্রিকেটে বিশ্বজয়ের পদযাত্রায় বাংলাদেশ নিজেকে নতুনভাবে উন্মোচন করলো। এখন বাংলাদেশের সাথে একটা শব্দ যায়, সেটি হলো ‘দ্য লিজেন্ড, দ্য টাইগার’।
শামসুল আরেফিন আরও বলেন, ‘খেলা যে একটা শিল্প সেটা শিল্পের মাধ্যমেই প্রকাশ করা উচিত। ইন্ডিয়াকে খাটো করবো না। নিরপেক্ষতার দিক থেকে ইন্ডিয়া নিজেদের গ্রহণযোগ্যতা হারিয়েছে। ক্রিকেট বিশ্বকে নিজেদের করে নিতে চায়। কিন্তু ক্রিকেট একটা সর্বজনীন খেলা। সবারই পার্টিসিপেশন থাকা উচিত। অচিরেই ইন্ডিয়ার সূর্য অস্ত যাবে। এক সময় ক্রিকেট বিশ্ব শাসন করবে শুধু টাইগাররা।’
বাবুবাজারের চালের আড়তে দিনমজুরের কাজ করেন হেলাল মিয়া। খেলা দেখা শেষে মিরপুরে বাড়ি ফেরার পথে টিএসসিতে ছাত্রদের সঙ্গে নিজের আনন্দটাও ভাগাভাগি করে নিলেন। অংশ নিলেন আনন্দ মিছিলে। স্লোগান দিলেন নিজের মতো করেই। বললেন, ‘আমরা সেমিফাইনালে যাইতাম সেডা আবারও প্রমাণ করলাম। হেই ম্যাচে ইচ্ছা কইরা আমগোরে হারাইছিল। আশা করি, পাকিস্তানকে যেইভাবে হোয়াইটওয়াশ করছি, হেইভাবে ভারতরেও হোয়াইটওয়াশ করমু।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র সুমন বলেন, ‘আমরা বাংলাওয়াশ দেখতে চাই। বিশ্বকাপে ষড়যন্ত্র হয়েছিল সেটা আবারও প্রমাণ হয়েছে। মনে জ্বালা ছিল, সেটা আজকে মিটিয়ে দিয়েছে টাইগাররা। আগামী প্রত্যাশা, বিশ্বকাপ জয় করে ভক্তদের মন শীতল করবে টাইগাররা।’
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবিএ’র ছাত্র মুক্তাদির আইয়ান বললেন, ‘আমাদের বাংলাদেশ আগের বাংলাদেশ নাই। এখন বিশ্ব জয় করতে পারব। বাংলাদেশ ক্রিকেটে অনেক পরিবর্তন করেছে। সেদিন বেশি দূরে না, যে দিন বাংলাদেশ বিশ্বকাপ জিতবে।’