লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলার চরলরেন্স ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ৪ শিক্ষার্থী হত্যা মামলার আসামি নুরুল করিমকে গ্রেপ্তার করেছে জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। এ ঘটনায় আজ রবিবার দুপুরে উপজেলায় আনন্দ মিছিল ও মিষ্টি বিতরণ করেছেন স্থানীয়রা।

গতকাল শনিবার রাতে কমলনগরের চরলরেন্স গ্রামের বাড়ি থেকে নুরুল করিমকে আটক করা হয়। তিনি ইউনিয়নের চরলরেন্স গ্রামের মৃত আব্দুর রবের ছেলে।

আনন্দ মিছিল শেষে চরলরেন্স ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক সদস্য নুরুল করিম, প্রবাসী মোস্তাফিজ হাওলাদার, ইসমাইল হোসেন, ব্যবসায়ী আব্দুল মান্নান, রোকন উদ্দিন, সেলুন দোকানী আরিফ হোসেন বক্তব্য রাখেন। তারা নুরুল করিমের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ তুলে ধরেন।

ডিবি সূত্রে জানা গেছে, গতকাল শনিবার রাতে কমলনগরের চরলরেন্স গ্রামের বাড়ি থেকে নুরুল করিমকে আটক করা হয়। তার বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলার অভিযোগ রয়েছে। তাকে ৪ শিক্ষার্থী হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।

করিম কমলনগর উপজেলার চরলরেন্স ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি।

সেলুন ব্যবসায়ী আরিফ হোসেন বলেন, করিম আমাকে বিদেশ পাঠিয়ে কাজ না দিয়ে প্রতারণা করেছে। ঋণের টাকা এখনো পরিশোধ করতে পারিনি। টাকার চিন্তায় আমি শুকিয়ে গেছি।

ব্যবসায়ী আব্দুল মান্নান বলেন, রাতের অন্ধকারে নুরুল করিম আমার দোকানঘর ভেঙে দখল করে নেন। অনেকের কাছেই গেছি, কেউ তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। টাকা দিয়ে সবাইকে ম্যানেজ করে নিতেন তিনি।

প্রবাসী মোস্তাফিজ হাওলাদার বলেন, আমি করইতলা বাজারের ব্যবসায়ী ছিলাম। তখন গণশৌচাগার নির্মাণের জন্য ৫ হাজার টাকা দিয়েছি। বাজারের দক্ষিণ পাশে গণশৌচার ছিল। বিগত সরকারের আমলে আওয়ামী লীগ নেতা নুরুল করিম ক্ষমতা দেখিয়ে তা ভেঙে সেখানে দোকানঘর নির্মাণ করেন।

চরলরেন্স ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক সদস্য মো. নুরুল করিম বলেন, করিম মানুষের দোকানপাট দখল করে ট্রলি চালক থেকে কয়েক কোটি টাকার মালিক হয়ে গেছেন। আদম ব্যবসায়ীর নামে বিদেশে নিয়ে অসহায় গরীব মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন। তাকে গ্রেপ্তারের ঘটনায় আমরা সবাই খুশি। আমরা তার উপযুক্ত বিচার চাই।

জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সাহাদাত হোসেন টিটো বলেন, নুরুল করিমকে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ৪ শিক্ষার্থী হত্যার মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য তাকে সদর মডেল থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।