ঢাকা ০৭:৪৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ২৪ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ভোটার তালিকা নিয়ে জালিয়াতির সুযোগ নেই: ইসি সানাউল্লাহ

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৬:৫৭:৩৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • ৬ বার

বর্তমান পদ্ধতিতে ভোটার তালিকা নিয়ে জালিয়াতির সুযোগ নেই বলে মন্তব্য করেছেন নির্বাচন কমিশনার (ইসি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ।

আজ সোমবার রাজশাহীতে ভোটার তালিকা হালনাগাদ কাজের তথ্য সংগ্রহকারী, সুপারভাইজার ও নতুন ভোটারদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ মন্তব্য করেন।

গণমাধ্যমকর্মীদের প্রশ্নের জবাবে ইসি সানাউল্লাহ আরও বলেন, ‘যাদের ভোটার তালিকায় থাকার কথা, তাদের না থাকা এবং যাদের ভোটার তালিকায় থাকার কথা না, তাদের উপস্থিতি এটাই সমস্যা। বর্তমান পদ্ধতিতে কিন্তু ভোটার তালিকা নিয়ে খুব বেশি জালিয়াতি করার সুযোগ নেই। কারণ এটা একটা ডাটাবেজের মাধ্যমে সেন্ট্রালি কন্ট্রোলড হয়, ক্রস টেক করা হয়। মূল সমস্যা হয় যখন মৃত ব্যক্তিদের যথাযথভাবে বাদ না দিতে পারি। এটা যে পুরোটাই প্রতারণামূলক তাও না। আমাদের মানুষ অতটা সচেতন নয় যে, কেউ মারা গেলে অফিসে গিয়ে ফরম পূরণ করে মৃত্যুর সংবাদ দেবে। এটা একটা আমাদের সামাজিক বাস্তবতা।’

সানাউল্লাহ বলেন, ‘আমি যেটা অনুভব করেছি যে, সবাই ভোট উৎসবের জন্য মুখিয়ে আছেন। আমাদেরকে এই উৎসাহকে ধারণ করতে হবে। আমরা যদি এটা করতে পারি, অপরাপর যেকোনো সমস্যা কাটিয়ে উঠতে পারবো বলে আমি বিশ্বাস করি।’

তিনি বলেন, ‘একটি ভালো এবং সুষ্ঠু ভোটের পূর্ব শর্তই হচ্ছে একটি সুষ্ঠু ও নির্ভুল ভোটার তালিকা। বর্তমান নির্বাচন কমিশন দায়িত্ব গ্রহণের পরপরই প্রথম সভাতেই আমরা সিদ্ধান্ত নেই, এবারের ভোটার তালিকাটি আমরা হালনাগাদ করব। বাড়ি বাড়ি যাওয়ায় বাধ্যবাধকতা নেই এবং ভবিষ্যতে আর কখনো বাড়ি বাড়ি যাব কি না আমরা জানি না। কারণ এই সেবাটি সারা বছর সব সময় উন্মুক্ত।’

তিনি আরও বলেন, ‘আজকে বাড়ি বাড়ি যাওয়ার দিন শেষ কিন্তু আগামীকাল থেকে যারা এখনো নিবন্ধন করতে পারেননি, তারা যেকোনো সময় অনলাইনে নিবন্ধন করতে পারবেন। আমরা বোধ করি, আমাদের এই শত চেষ্টার পরও কিছু মানুষ বাইরে থেকে যাবেন।’

জন্ম নিবন্ধন সংক্রান্ত সমস্যা থাকবে না বলেও এ সময় আশ্বাস দিন তিনি।

নির্বাচনের সময় সম্পর্কে আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেন, ‘ইলেকশনের সময়টা এই মুহূর্তে ইলেকশন কমিশনের হাতে নেই। প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্য থেকে আমরা একটা ধারণা পাই। তিনি বলেছেন, ‘সংস্কার কার্যক্রম যদি সংক্ষিপ্ত আকারে করতে হয়, রাজনৈতিক দলগুলো যদি সেই পর্যায়ে গিয়ে দাঁড়ায় তাহলে আগামী ডিসেম্বর। আর সংস্কার কার্যক্রম যদি আরেকটু দীর্ঘ করতে দেওয়া হয় সেক্ষেত্রে ২০২৬ সালের জুনে নির্বাচন করা সম্ভব।’

স্থানীয় সরকার নির্বাচন আয়োজনের ব্যাপারে এক প্রশ্নে ইসি বলেন, ‘স্থানীয় নির্বাচনের সিদ্ধান্ত নির্বাচন কমিশন নেয় না। নির্বাচন কমিশনের সাংবিধানিক দায়িত্ব হচ্ছে জাতীয় নির্বাচন ও রাষ্ট্রপতি নির্বাচন আয়োজন করা। আমাদের অতিরিক্ত দায়িত্বের অংশ হিসেবে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় তথা সরকার যখন সিদ্ধান্ত নেয় তখন আমরা সেই নির্বাচন আয়োজন করে দিই। সুতরাং স্থানীয় সরকার নির্বাচন হবে কি হবে না, কবে হবে, এটা সরকারই সিদ্ধান্ত নেবে। যখন সিদ্ধান্ত নেবে তখন আমরা জানতে পারবো।’

বিগত বিতর্কিত নির্বাচনের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তাদের ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘নির্বাচন ব্যবস্থাপনায় কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নয়। আমরা যারা বর্তমানে দায়িত্ব পালন করছি আমরাও আইনের ঊর্ধ্বে নই। কেউ যদি নিজে সুপরিকল্পিতভাবে এবং নিজে সংশ্লিষ্ট থেকে কোনো অপরাধ করে থাকে তাকে আইন আদালতের সামনে যেতে হতেই পারে। এটা নির্বাচন কমিশনের বিষয় নয়, আইন আদালতের বিষয়।’

এসময় রোহিঙ্গা ইস্যুতে সবাইকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, ‘প্রকৃত নাগরিকরা যেন কোনোভাবেই হয়রানির শিকার না হন, সেইসঙ্গে বহিরাগতদের অনুপ্রবেশ যেন না ঘটে সে বিষয়ে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।’

রাজশাহী আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা দেলোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন রাজশাহীর জেলা প্রশাসক আফিয়া আখতার ও জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রফিকুল আলম।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

ভোটার তালিকা নিয়ে জালিয়াতির সুযোগ নেই: ইসি সানাউল্লাহ

আপডেট টাইম : ০৬:৫৭:৩৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

বর্তমান পদ্ধতিতে ভোটার তালিকা নিয়ে জালিয়াতির সুযোগ নেই বলে মন্তব্য করেছেন নির্বাচন কমিশনার (ইসি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ।

আজ সোমবার রাজশাহীতে ভোটার তালিকা হালনাগাদ কাজের তথ্য সংগ্রহকারী, সুপারভাইজার ও নতুন ভোটারদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ মন্তব্য করেন।

গণমাধ্যমকর্মীদের প্রশ্নের জবাবে ইসি সানাউল্লাহ আরও বলেন, ‘যাদের ভোটার তালিকায় থাকার কথা, তাদের না থাকা এবং যাদের ভোটার তালিকায় থাকার কথা না, তাদের উপস্থিতি এটাই সমস্যা। বর্তমান পদ্ধতিতে কিন্তু ভোটার তালিকা নিয়ে খুব বেশি জালিয়াতি করার সুযোগ নেই। কারণ এটা একটা ডাটাবেজের মাধ্যমে সেন্ট্রালি কন্ট্রোলড হয়, ক্রস টেক করা হয়। মূল সমস্যা হয় যখন মৃত ব্যক্তিদের যথাযথভাবে বাদ না দিতে পারি। এটা যে পুরোটাই প্রতারণামূলক তাও না। আমাদের মানুষ অতটা সচেতন নয় যে, কেউ মারা গেলে অফিসে গিয়ে ফরম পূরণ করে মৃত্যুর সংবাদ দেবে। এটা একটা আমাদের সামাজিক বাস্তবতা।’

সানাউল্লাহ বলেন, ‘আমি যেটা অনুভব করেছি যে, সবাই ভোট উৎসবের জন্য মুখিয়ে আছেন। আমাদেরকে এই উৎসাহকে ধারণ করতে হবে। আমরা যদি এটা করতে পারি, অপরাপর যেকোনো সমস্যা কাটিয়ে উঠতে পারবো বলে আমি বিশ্বাস করি।’

তিনি বলেন, ‘একটি ভালো এবং সুষ্ঠু ভোটের পূর্ব শর্তই হচ্ছে একটি সুষ্ঠু ও নির্ভুল ভোটার তালিকা। বর্তমান নির্বাচন কমিশন দায়িত্ব গ্রহণের পরপরই প্রথম সভাতেই আমরা সিদ্ধান্ত নেই, এবারের ভোটার তালিকাটি আমরা হালনাগাদ করব। বাড়ি বাড়ি যাওয়ায় বাধ্যবাধকতা নেই এবং ভবিষ্যতে আর কখনো বাড়ি বাড়ি যাব কি না আমরা জানি না। কারণ এই সেবাটি সারা বছর সব সময় উন্মুক্ত।’

তিনি আরও বলেন, ‘আজকে বাড়ি বাড়ি যাওয়ার দিন শেষ কিন্তু আগামীকাল থেকে যারা এখনো নিবন্ধন করতে পারেননি, তারা যেকোনো সময় অনলাইনে নিবন্ধন করতে পারবেন। আমরা বোধ করি, আমাদের এই শত চেষ্টার পরও কিছু মানুষ বাইরে থেকে যাবেন।’

জন্ম নিবন্ধন সংক্রান্ত সমস্যা থাকবে না বলেও এ সময় আশ্বাস দিন তিনি।

নির্বাচনের সময় সম্পর্কে আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেন, ‘ইলেকশনের সময়টা এই মুহূর্তে ইলেকশন কমিশনের হাতে নেই। প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্য থেকে আমরা একটা ধারণা পাই। তিনি বলেছেন, ‘সংস্কার কার্যক্রম যদি সংক্ষিপ্ত আকারে করতে হয়, রাজনৈতিক দলগুলো যদি সেই পর্যায়ে গিয়ে দাঁড়ায় তাহলে আগামী ডিসেম্বর। আর সংস্কার কার্যক্রম যদি আরেকটু দীর্ঘ করতে দেওয়া হয় সেক্ষেত্রে ২০২৬ সালের জুনে নির্বাচন করা সম্ভব।’

স্থানীয় সরকার নির্বাচন আয়োজনের ব্যাপারে এক প্রশ্নে ইসি বলেন, ‘স্থানীয় নির্বাচনের সিদ্ধান্ত নির্বাচন কমিশন নেয় না। নির্বাচন কমিশনের সাংবিধানিক দায়িত্ব হচ্ছে জাতীয় নির্বাচন ও রাষ্ট্রপতি নির্বাচন আয়োজন করা। আমাদের অতিরিক্ত দায়িত্বের অংশ হিসেবে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় তথা সরকার যখন সিদ্ধান্ত নেয় তখন আমরা সেই নির্বাচন আয়োজন করে দিই। সুতরাং স্থানীয় সরকার নির্বাচন হবে কি হবে না, কবে হবে, এটা সরকারই সিদ্ধান্ত নেবে। যখন সিদ্ধান্ত নেবে তখন আমরা জানতে পারবো।’

বিগত বিতর্কিত নির্বাচনের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তাদের ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘নির্বাচন ব্যবস্থাপনায় কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নয়। আমরা যারা বর্তমানে দায়িত্ব পালন করছি আমরাও আইনের ঊর্ধ্বে নই। কেউ যদি নিজে সুপরিকল্পিতভাবে এবং নিজে সংশ্লিষ্ট থেকে কোনো অপরাধ করে থাকে তাকে আইন আদালতের সামনে যেতে হতেই পারে। এটা নির্বাচন কমিশনের বিষয় নয়, আইন আদালতের বিষয়।’

এসময় রোহিঙ্গা ইস্যুতে সবাইকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, ‘প্রকৃত নাগরিকরা যেন কোনোভাবেই হয়রানির শিকার না হন, সেইসঙ্গে বহিরাগতদের অনুপ্রবেশ যেন না ঘটে সে বিষয়ে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।’

রাজশাহী আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা দেলোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন রাজশাহীর জেলা প্রশাসক আফিয়া আখতার ও জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রফিকুল আলম।