হাওর বার্তা ডেস্কঃ আগামী ২৪ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগের কাউন্সিল। কাউন্সিলের আগে আওয়ামী লীগের মধ্যে ব্যস্ততার শেষ নেই। বিভিন্ন জেলায় সম্মেলন, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর সম্মেলন ইত্যাদি নিয়ে এক ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নেতারা। নেতারা অনেকদিন পর বিভিন্ন এলাকায় যাচ্ছেন, কর্মীদের সঙ্গে কথা বলছেন, সেখানে নতুন কমিটি ঘোষণা করছেন। সর্বশেষ গতকাল গোপালগঞ্জেও আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হলো। ঢাকায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ছাত্রলীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এইসব জায়গাগুলোতে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ বিভিন্ন নেতারা যাচ্ছেন, বক্তব্য রাখছেন, নেতাকর্মীদের সঙ্গে কুশলাদি বিনিময় করছেন। কর্মীরা বলছেন, দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকার কারণে দলের শীর্ষ নেতাদের সাথে তাদের দূরত্ব হয়েছিল। তাছাড়া করোনার কারণেও নেতাদের আসা-যাওয়া কমে গিয়েছিলো। এখন এই সম্মেলনের মধ্য দিয়ে একটি লাভ হচ্ছে যে তারা নেতাদেরকে পাচ্ছেন, তাদের সুখ-দুঃখের কথা গুলো বলতে পারছেন, সাংগঠনিক সমস্যার বাইরেও এলাকার বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে কথা বলতে পারছেন। আর এই সমস্ত কথা বলার মধ্য দিয়ে তাদের সংগঠনের শক্তি বৃদ্ধি হচ্ছে বলেও করে তৃণমুলের নেতাকর্মীরা মনে করছেন। তৃণমুলের কর্মীদের মতে তারা একটা সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা পাচ্ছেন এবং উৎসাহ-উদ্দীপনা পাচ্ছেন। এই সময়ে বিভিন্ন জেলায় যে সম্মেলন গুলো হচ্ছে সেই সম্মেলনে কয়েকজন নেতা তৃণমূলের নেতাকর্মীদের কাছে অনেক জনপ্রিয় হয়ে উঠেছেন। যে কয়েকজন নেতার ব্যাপারে বিভিন্ন জেলায় আগ্রহ, উৎসাহ-উদ্দীপনা বৃদ্ধি পেয়েছে লক্ষ্য করা যায় তাদের মধ্যে রয়েছেন-
১. জাহাঙ্গীর কবির নানক: জাহাঙ্গীর কবির নানক আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য। তিনি জেলা পর্যায়ের সবগুলো সম্মেলনে জাননি কিন্তু যেখানেই গেছেন সেখানেই কর্মীরা উচ্ছ্বসিত হয়েছে, তাকে বরণ করে নিয়েছে। কোথাও কোথাও দেখা গেছে, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের চেয়ে তাকে নিয়ে তৃণমূলের বেশি উচ্ছাস এবং আবেগ। তার বক্তৃতাগুলো দিকনির্দেশনামূলক। জাহাঙ্গীর কবির নানক যেখানে গেছেন সেখানে সম্মেলনের বাইরে কর্মীদের সাথে নিবিড়ভাবে আলাদাভাবে কথা বলেছেন, তাদের সুখ-দুঃখ শুনেছেন এবং তাদের সমস্যাগুলো সমাধানের জন্য আশ্বাসও দিয়েছেন।
২. মির্জা আজম: আওয়ামী লীগের অন্যতম জনপ্রিয় নেতা মির্জা আজম। মির্জা আজম ঢাকা বিভাগীয় অঞ্চলের সাংগঠনিক সম্পাদক। তিনিও ঢাকা বিভাগের সম্মেলনগুলোতে বিভিন্ন এলাকায় চষে বেড়াচ্ছেন। ঢাকা বিভাগের সম্মেলনের বাইরেও যশোরের জনসভাতেও তিনি আওয়ামী লীগ সভাপতির সফরসঙ্গী হয়েছিলেন। যেখানে তিনি যাচ্ছেন সেখানেই কর্মীদের উচ্ছ্বাস দেখা যাচ্ছে তাকে নিয়ে, কর্মীরা তাকে ঘিরে ধরছেন, কোথাও কোথাও কর্মীদের সঙ্গেই বেশি সময় কাটাচ্ছেন মির্জা আজম। মির্জা আজম আগে থেকেই কর্মীবান্ধব একজন নেতা। আওয়ামী লীগের বিভিন্ন জেলার কর্মীরা বলেছেন যে, মির্জা আজম এমন একজন নেতা যাকে যেকোনো সময় পাওয়া যায়, যেকোনো সময় তার বাড়িতে যাওয়া যায়। এ কারণে এই সম্মেলন আয়োজনের মধ্য দিয়ে তিনি আরও লাইমলাইটে এসেছেন।
৩. বাহাউদ্দিন নাছিম: বাহাউদ্দিন নাছিমকেও কর্মীরা খুব পছন্দ করেন এবং যেখানেই তিনি যাচ্ছেন সেখানেই কর্মীদের সঙ্গে তার সখ্যতা এবং ঘনিষ্ঠতা দেখা গেছে। কর্মীদের তাঁকে নিয়ে আগ্রহ এবং উৎসাহ লক্ষ্য করা গেছে। কর্মীরা অনেককেই বাদ দিয়ে তার কাছে যাচ্ছে এবং বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলছে।
৪. মাহবুবউল আলম হানিফ: মাহবুবউল আলম হানিফ খুব বেশি এলাকায় যাননি। কিন্তু তিনি যেখানে গেছেন সেখানে কর্মীরা তাকে বরণ করে নিয়েছেন। কর্মীদের এখন পছন্দের নেতা হিসেবে তিনি পরিচিত হচ্ছেন। মাহবুবউল আলম হানিফ সাম্প্রতিক সময়ে অনেক বেশি কর্মীবান্ধব হয়ে পড়েন। বিশেষ করে কর্মীদের বিভিন্ন সমস্যা, সাংগঠনিক বিভিন্ন বিষয়ে তিনি সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছেন। সবচেয়ে বড় কথা হলো, যেকোনো কর্মী বা তৃণমূলের নেতা ফোন করলে তিনি ফোন ধরেন। এটি তার সবচেয়ে বড় যোগ্যতা।
৫. বিপ্লব বড়ুয়া: বিপ্লব বড়ুয়া খুব কম এলাকায় যোগদান করেছেন। কিন্তু সারাদেশে নেতাকর্মীদের সঙ্গে দপ্তর সম্পাদক হিসেবে তার একটি নিবিড় যোগাযোগ রয়েছে। তৃণমূলের নেতাকর্মীরা বলেন, বিপ্লব বড়ুয়া কখনো রেগে যাননা, সকলের ফোন ধরেন, বিনয়ের সঙ্গে কথা বলেন, হাসিমুখে কথা বলেন এবং বিরক্ত হন না। এটি একজন দপ্তর সম্পাদকের বড় যোগ্যতা বলে তারা বলছেন। আর এ কারণেই বিপ্লব বড়ুয়াও এখন কর্মীদের কাছে অনেক জনপ্রিয় এবং পছন্দের ব্যক্তি।