চালেঞ্জের মুখে পোশাকশিল্প: এ খাত সুরক্ষায় প্রয়োজন সরকারের নীতি সহায়তা

হাওর বার্তা ডেস্কঃ করোনা মহামারির ধকল কাটিয়ে দেশের তৈরি পোশাকশিল্প যখন ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছিল, তখনই ইউক্রেন সংকটের কারণে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়েছে দেশের বৃহত্তম রপ্তানি খাতটি। যুদ্ধের কারণে সারা বিশ্বের অর্থনীতিই সংকুচিত হচ্ছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপের বিভিন্ন দেশসহ সারা বিশ্বেই দেখা দিয়েছে মূল্যস্ফীতি।

এ অবস্থায় এমনকি ধনী দেশগুলোর সাধারণ মানুষও কমিয়ে দিয়েছে কেনাকাটা। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি কমিয়েছে পোশাক ক্রয়। ফলে পোশাকের অর্ডার বাতিল করছে আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলো। উদাহরণস্বরূপ, বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের বড় ক্রেতাদের অন্যতম প্রতিষ্ঠান হলো যুক্তরাষ্ট্রের ওয়ালমার্ট। প্রতিষ্ঠানটি ঘোষণা দিয়েই অর্ডার কমিয়ে দিয়েছে। আবার কিছু প্রতিষ্ঠান অর্ডার কমিয়েছে ঘোষণা ছাড়াই। অর্ডার কমায় বা বাতিল হওয়ায় বিপাকে পড়েছে রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলো।

বাংলাদেশও এর বাইরে নয়। বলা যায়, কঠিন সময় পার করছে দেশের তৈরি পোশাক খাত। গার্মেন্ট মালিকরা বলছেন, এ শিল্পের এখন চরম দুঃসময়। এটি দেশের অর্থনীতির জন্য একটি অশনিসংকেত বৈকি!

দেশের তৈরি পোশাক খাতে যে শুধু অর্ডার কমে যাওয়ার প্রভাব পড়েছে তা-ই নয়, আরও নানাভাবে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে এ শিল্পে। আন্তর্জাতিক বাজারে কাঁচামালের দাম এবং জাহাজ ভাড়া বেড়েছে কয়েকগুণ। স্থানীয় পর্যায়েও জ্বালানি তেল ও গ্যাসের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে পণ্যের উৎপাদন থেকে শুরু করে প্রতিটি ধাপে বেড়েছে খরচ, যা এ শিল্পের প্রতিযোগিতা সক্ষমতা কমিয়ে দিয়েছে। এ কারণে উদ্যোক্তাদের সক্ষমতার অভাব দূরীকরণে সরকারের উচিত সব ধরনের নীতি সহায়তা প্রদান করা। দেশের অর্থনীতিতে বেসরকারি শিল্প খাতের অবদানের কথা নতুন করে বলার অপেক্ষা রাখে না।

অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি হলো শিল্প খাত। এক্ষেত্রে তৈরি পোশাকশিল্পের অবদান সবচেয়ে বেশি। এ খাত শুধু দেশের বৈদেশিক মুদ্রার ভান্ডারকেই সমৃদ্ধ করেনি, একইসঙ্গে নিশ্চিত করেছে অগণিত মানুষের কর্মসংস্থান। তাই বলা যায়, তৈরি পোশাকশিল্প খাত না বাঁচলে মানুষের জীবিকার পথ রুদ্ধ হবে। এ খাত বাঁচলে তবেই মানুষ বাঁচবে। কাজেই তৈরি পোশাকশিল্প খাতকে সুরক্ষা দেওয়ার বিকল্প নেই।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর