নদী থেকে উদ্ধার যুবকের মরদেহ তালাবদ্ধ শিকলসহ দাফন

হাওর বার্তা ডেস্কঃ যশোরের শার্শা উপজেলায় ইছামতি নদী থেকে জহুরুল ইসলাম মন্ডল (৩৪) নামের এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ সময় তার শরীরে পাঁচটি তালাবদ্ধ অবস্থায় শিকল জড়ানো ছিল। পরে মরদেহ রাজশাহীর বাঘা উপজেলায় নিজবাড়িতে নিয়ে আসেন স্বজনরা। তবে খুলতে না পারায় তালাবদ্ধ লোহার শিকলসহ তার মরদেহ দাফন করা হয়।

শনিবার (২১ মে) বাদ আসর মরদেহ দাফন করা হয় বলে নিশ্চিত করেছেন বাঘা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আবদুল করিম।

ঘটনা সম্পর্কে তিনি বলেন, জহুরুল পেশায় শ্রমিক। সে উপজেলার পাকুড়িয়া ইউনিয়নের কেশবপুর গ্রামের ফজল মন্ডলের ছেলে। তার পরিবারের মারফত জানা গেছে, বছর খানেক আগে যশোরে এক পিরের মুরিদ হয়েছিলেন রাজশাহীর বাঘা উপজেলার জহুরুল। এরপর থেকেই তিনি নিজের শরীরে লোহার শিকল জড়িয়ে রাখতেন। সেই শিকলে পাঁচটি তালা লাগানো ছিল। লোহার শিকলটির ওজন ছিল প্রায় ২০ কেজি।

বাঘা থানার পরিদর্শক আরও বলেন, গত শুক্রবার (২০ মে) বিকেলে যশোরের শার্শার সীমান্তবর্তী ইছামতি নদীতে জহুরুলের মরদেহ ভাসতে দেখে পুলিশকে খবর দেন স্থানীয়রা। শার্শা থানা পুলিশ মরদেহটি উদ্ধার করে। তার ব্যাগের ভেতরে থাকা পরিচয়পত্রের মাধ্যমে শার্শা থানা থেকে বাঘা থানায় যোগাযোগ করা হয়। পরে চেয়ারম্যানের মাধ্যমে মৃতের বাড়িতে খবর পৌঁছালে তারা মরদেহ বাড়িতে এনে শনিবার বাদ আসর শিকলসহ দাফন করে।

জানতে চাইলে জহুরুল ইসলামের স্ত্রী রাশিদা বেগম বলেন, ‘আমার স্বামী সপ্তাহ খানেক হয়েছে বাড়ি থেকে যশোরের উদ্দেশ্যে যান। তিনি আমাকে বলেছিলেন, ২৪ মে আজমির শরীফে যাবেন। বাড়ি থেকে লোহার তৈরি শিকল জড়িয়েই বের হয়েছিলেন। এরপর তার আর কোনো খোঁজ পাইনি।’

জহুরুলের ভাই আমিরুল ইসলাম ও সেন্টু আলী বলেন, ‘দাফনের আগে তার শরীরে জড়ানো ভারী শিকলটি কোনোভাবেই খোলা সম্ভব হয়নি। তাই, গায়ে জড়ানো শিকলের পাঁচটি তালাসহ তাকে দাফন করা হয়। তবে তার মৃত্যুর কারণ আমরা জানতে পারেনি।’

এদিকে বাঘার পাকুড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মেরাজুল ইসলাম মেরাজ বলেন, ‘মরদেহ শনাক্ত করে বাড়িতে আনার পর বাদ আসর জানাজা হয়। পরে পারিবারিক কবরস্থানে তার দাফন করা হয়েছে। দীর্ঘক্ষণ মরদেহ বাইরে থাকায় পচন ধরে গন্ধ ছড়াচ্ছিল।’

আইনি প্রক্রিয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে বাঘা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আবদুল করিম বলেন, যেহেতু ঘটনাটি যশোরের শার্শা থানা এলাকার, তাই এ বিষয়ে সেখানেই মামলা বা অভিযোগ দিতে হবে। তবে ঘটনাস্থল অনেক দূর হওয়ায় এবং নিহতের পরিবারও দরিদ্র হওয়াতে তারা এ বিষয়ে কোনো প্রকারের অভিযোগ করেনি।

শার্ষা থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক সোহাগ হোসেন বলেন, সীমান্তবর্তী ইছামতি নদী থেকে ওই যুবকের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তার স্বজনরা এসে মরদেহ নিয়ে যায়। এ ঘটনায় এখনো কোনো মামলা হয়নি ।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর