জোয়ারে প্লাবিত ফেরিঘাট

হাওর বার্তা ডেস্কঃ ভরা পূর্ণিমার প্রভাবে বরগুনার প্রধান প্রধান নদ-নদীগুলোতে বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে জোয়ারের পানি। প্লাবিত হয়েছে নিম্নাঞ্চল। বিপদসীমার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হওয়ায় ডুবে গেছে পুরাকাটা-আমতলী ও বড়ইতলা-বাইনচটকি ফেরির গ্যাংওয়ে। এতে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে জনবহুল যোগাযোগ মাধ্যমের পথযাত্রীরা।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা যায়, প্রতিবছরের এপ্রিল থেকে জুলাই পর্যন্ত নদীতে জোয়ারের পানির তীব্রতা বেড়ে যায়। এবারও ভরা পূর্ণিমার প্রভাবে পায়রা, বিশখালী ও বলেশ্বর নদীর মোহনায় স্বাভাবিকের চেয়ে ৬০ সেন্টিমিটার বিপদসীমার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়েছে। গত রোববার রাতে স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে পায়রা, বলেশ্বর ও বিশখালী নদীতে বিপদসীমার ৪০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে জোয়ারের পানি প্রবাহিত হয়। এ কারণে ডুবে যায় আমতলী-পুরাকাটা ও বড়ইতলা-বাইনচটকি ফেরিঘাট। ফলে নদী পারাপারে যানবাহন নিয়ে চালক ও যাত্রীরা চরম ভোগান্তিতে পড়েন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, বিষখালী নদীতে তীব্র জোয়ারে বড়ইতলা ফেরিঘাটের গ্যাংওয়ে তলিয়ে গেছে। এতে নারী ও শিশুসহ সবাই কোমর সমান পানির মধ্যে দিয়ে হেঁটে তীরে উঠছেন। কেউবা আবার ফেরিতে উঠছেন। কখনো কখনো স্থানীয় জেলেরা তাদের নৌকা দিয়ে তীর থেকে গ্যাংওয়ে পর্যন্ত যাত্রীদের পারাপার করছেন। তবে মোটরসাইকেল, ইজিবাইক, ট্রাকসহ যানবাহনদের ভোগান্তিতে পড়তে হয়। ইঞ্জিনে পানি ঢুকে ইঞ্জিন বন্ধ হয়ে যায়। তাই জোয়ারের পানি না নামা পর্যন্ত তারা ফেরিতে উঠতে পারে না।
স্থানীয় ব্যবসায়ী ইমাম হোসেন জানান, বৈশাখ থেকে আশ্বিন মাস পর্যন্ত নদীতে জোয়ারের চাপ থাকে। এ সময় পূর্ণিমা হলেই ঘাট থেকে রাস্তা পর্যন্ত তলিয়ে যায়। অনেক সময় আমাদের দোকানপাট পর্যন্ত জোয়ারের পানি চলে আসে। আলী হোসেন নামের এক যাত্রী বলেন, জোয়ারের পানি বাড়লে বড়ইতলা ফেরিঘাট পানিতে ডুবে থাকে। এ জায়গা দিয়ে যাতায়াত করলে দুর্ভোগের কোনো শেষ থাকে না।
মাত্রারিক্ত জোয়ারের পানিতে আটকে পড়া ব্যবসায়ী সেকান্দার আলী জানান, আমি মুদি ব্যবসায়ী। প্রয়োজনীয় মালামাল আনতে জেলা শহর বরগুনা গিয়েছিলাম। কিন্তু এখন ঘাট ডুবে যাওয়ায় মালামালসহ ইজিবাইক নিয়ে ফেরিতে উঠতে পারছি না। এখানে ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা ধরে বসে আছি। মোটরসাইকেল চালক রুবেল হাওলাদার জানান, জোয়ারের কোমরসমান পানিতে ফেরিঘাট ডুবে গেছে। এখন যদি মোটরসাইকেল নিয়ে ফেরিতে উঠতে চাই, তাহলে ইঞ্জিন বিকল হয়ে যাবে। তাই বাধ্য হয়ে পানি কমার অপেক্ষা করছি।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) বরগুনার পানি পরিমাপক মাহতাব হোসেন জানান, পূর্ণিমার প্রভাবে বরগুনা সব প্রধান নদীতেই স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে বিপদসীমার ওপর দিয়ে জোয়ার প্রবাহিত হয়। আগামী দুই-তিন দিন উচ্চ জোয়ার অব্যাহত থাকবে।
সড়ক ও জনপথ অধিদফতরের বরগুনার নির্বাহী প্রকৌশলী সৈয়দ গিয়াস উদ্দিন বলেন, বড়ইতলা ফেরিঘাট সংস্কারের জন্য দরপত্র আহবান করা হয়েছে। ইতিমধ্যে দরপত্র প্রক্রিয়াও সম্পন্ন হয়েছে। শিগগিরই ফেরিঘাট উন্নয়নের কাজ শুরু হবে।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর